9:11 pm, Monday, 17 November 2025

ওমানে আলোচনায় বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

ডেস্ক রিপোর্ট : ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ (১২ এপ্রিল) ওমানে দেশদুটি আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
আলোচনার লক্ষ্য তেহরানের দ্রুত অগ্রসরমান পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছা।
ইরানি সংবাদমাধ্যম গুলো জানাচ্ছে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ওমানের রাজধানী মাসকাটে পৌঁছেছে। ইরানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের আলোচনা পরিচালনা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
এই আলোচনায় যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরান সতর্কতার সাথে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির সন্দেহ, এসব আলোচনা আদৌ কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে কিনা। ট্রাম্পকে নিয়েও তাদের সন্দেহ রয়েছে; যিনি ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না করলে বারবার বোমা হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে চলেছেন।
তবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র দুইপক্ষই কিছু অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। যদিও তারা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান বিরোধের কারণে পরস্পর থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এখন এই আলোচনা ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী সরাসরি হবে, নাকি ইরানের ইচ্ছা অনুযায়ী পরোক্ষভাবে হবে তা নিয়ে তারা একমত হয়নি।
গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, লোহিত সাগরে জাহাজে হুতিদের আক্রমণ এবং সিরিয়ায় সরকার উৎখাতের মতো ঘটনায় ২০২৩ সাল থেকে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ সাহায্য করতে পারে।
তবে, আলোচনা ব্যর্থ হলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়বে। বিশ্বের বেশিরভাগ তেল রপ্তানি হয় পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে। মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে এমন প্রতিবেশী দেশগুলোকে ইরান সতর্ক করে জানিয়েছে, ইরানের উপর মার্কিন সামরিক হামলায় জড়িত থাকলে তাদের ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে আলোচনার জন্য ‘পূর্ণ ক্ষমতা’ দিয়েছেন।
কেবল পারমাণবিক ইস্যুতে অনুষ্ঠিতব্য এই আলোচনার সময়কাল মার্কিন পক্ষের আগ্রহ এবং সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে বলে এক ইরানি কর্মকর্তা জানান। ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির মতো প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইরান সবসময়ই বলে এসেছে, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ বেসামরিক। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চায়।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

ওমানে আলোচনায় বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

Update Time : 11:19:02 am, Saturday, 12 April 2025

ডেস্ক রিপোর্ট : ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ (১২ এপ্রিল) ওমানে দেশদুটি আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
আলোচনার লক্ষ্য তেহরানের দ্রুত অগ্রসরমান পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছা।
ইরানি সংবাদমাধ্যম গুলো জানাচ্ছে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ওমানের রাজধানী মাসকাটে পৌঁছেছে। ইরানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের আলোচনা পরিচালনা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
এই আলোচনায় যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরান সতর্কতার সাথে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির সন্দেহ, এসব আলোচনা আদৌ কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে কিনা। ট্রাম্পকে নিয়েও তাদের সন্দেহ রয়েছে; যিনি ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না করলে বারবার বোমা হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে চলেছেন।
তবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র দুইপক্ষই কিছু অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। যদিও তারা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান বিরোধের কারণে পরস্পর থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এখন এই আলোচনা ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী সরাসরি হবে, নাকি ইরানের ইচ্ছা অনুযায়ী পরোক্ষভাবে হবে তা নিয়ে তারা একমত হয়নি।
গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, লোহিত সাগরে জাহাজে হুতিদের আক্রমণ এবং সিরিয়ায় সরকার উৎখাতের মতো ঘটনায় ২০২৩ সাল থেকে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ সাহায্য করতে পারে।
তবে, আলোচনা ব্যর্থ হলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়বে। বিশ্বের বেশিরভাগ তেল রপ্তানি হয় পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে। মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে এমন প্রতিবেশী দেশগুলোকে ইরান সতর্ক করে জানিয়েছে, ইরানের উপর মার্কিন সামরিক হামলায় জড়িত থাকলে তাদের ‘কঠোর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে আলোচনার জন্য ‘পূর্ণ ক্ষমতা’ দিয়েছেন।
কেবল পারমাণবিক ইস্যুতে অনুষ্ঠিতব্য এই আলোচনার সময়কাল মার্কিন পক্ষের আগ্রহ এবং সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে বলে এক ইরানি কর্মকর্তা জানান। ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির মতো প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইরান সবসময়ই বলে এসেছে, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ বেসামরিক। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চায়।