4:16 am, Wednesday, 19 November 2025

কুলাউড়ায় সিলেটের রেলপথ সংস্কারসহ ৮ দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ প্রত্যাহার

হাসান আল মাহমুদ রাজু : রেলপথ সংস্কার সিলেট-কক্সবাজার ও সিলেট-ঢাকা রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবিতে পূর্ব ঘোষিত রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয় শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর, ভানুগাছ স্টেশনে, টিলাগাও অবরোধের সমর্থন দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব সংগঠন সহ সাধারণ মানুষও একাত্মা প্রকাশ করে লাল পতাকাসহ স্টেশনগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। দুপুরে কুলাউড়ার টিলাগাও রেল ষ্টেশনে ঢাকা থেকে আসা পারাবত এক্সপ্রেস টি আটকে অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা,পরে ট্রেন টি কুলাউড়া রেল ষ্টেশনে গিয়ে পৌঁছে। এসময় সিলেট থেকে ছেরে আসা পাহারিকা এক্সপ্রেস টি কুলাউড়া জংশনে এসে পৌঁছে। ট্রেন গুলো কুলাউড়া ষ্টেশনে পৌছার আগে অবরোধ তুলে নেয় কুলাউড়ার আন্দোলন কারীরা।

আন্দোলনের সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই এক বিবৃতিতে সাধারণ জনগণকে ১ নভেম্বর ট্রেন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছিলেন আগেই ।

তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের রেলপথের বেহাল অবস্থা দূর করতে এবং যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বিগত ৪ মাস থেকে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়ায় অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে আন্দোলনকারীরা ট্রেন আটকালে রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের ডিআরএম ১৫ দিনের মধ্যে আলোচনার আশ্বাস দেন।

এরপর ১০ অক্টোবর কুলাউড়া জংশন স্টেশনের ভিআইপি ওয়েটিং রুমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. মহিউদ্দিন আরিফ। তবে বৈঠকে আশ্বাসে সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলনকারীরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১ নভেম্বর অবরোধের ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীদের ৮ দফা দাবি হলো- সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রুটে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইন বাস্তবায়ন; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট সেকশনের সব বন্ধ স্টেশন পুনরায় চালু; কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসনসংখ্যা বৃদ্ধি; কালনী ও পারাবত ট্রেনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার; শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার ও যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন।

আন্দোলনকারীদের দাবি, রেলওয়ের অবহেলার কারণে সিলেটবাসী প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাই দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন। কুলাউড়া রেল স্টেশনে উক্ত কর্মসূচীতে একাত্মা প্রকাশ করে উপস্থিত রয়েছেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাছ খান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবেদ রাজা প্রমুখ।

দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার রোমান আহমদ জানান রেলপথ অবরোধ এর কারনে ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত শ্রীমঙ্গল ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর পাহাড়িকা মাইজগাঁও স্টেশন আটকানোর কারনে ট্রেন দুটি যাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে।

রেলপথ অবরোধের প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক আজিজুল ও মুখ্য সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই বলেন, দীর্ঘ ৪ ঘন্টা রেলপথ অবরোধ করে ঢাকা রেল বিভাগের সাথে কুলাউড়া জংশনে দেড় ঘন্টা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের ৮টির মধ্যে ৬ টি দাবি সাময়িকের জন্য মেনে নেওয়ায় আমরা আজকের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি এবং ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি না মানা হলে আবারো রেলপথ অবরোধের ডাক দেওয়া হবে।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

Popular Post

শ্রীমঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা

কুলাউড়ায় সিলেটের রেলপথ সংস্কারসহ ৮ দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ প্রত্যাহার

Update Time : 10:48:38 am, Saturday, 1 November 2025

হাসান আল মাহমুদ রাজু : রেলপথ সংস্কার সিলেট-কক্সবাজার ও সিলেট-ঢাকা রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবিতে পূর্ব ঘোষিত রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয় শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগর, ভানুগাছ স্টেশনে, টিলাগাও অবরোধের সমর্থন দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব সংগঠন সহ সাধারণ মানুষও একাত্মা প্রকাশ করে লাল পতাকাসহ স্টেশনগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। দুপুরে কুলাউড়ার টিলাগাও রেল ষ্টেশনে ঢাকা থেকে আসা পারাবত এক্সপ্রেস টি আটকে অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা,পরে ট্রেন টি কুলাউড়া রেল ষ্টেশনে গিয়ে পৌঁছে। এসময় সিলেট থেকে ছেরে আসা পাহারিকা এক্সপ্রেস টি কুলাউড়া জংশনে এসে পৌঁছে। ট্রেন গুলো কুলাউড়া ষ্টেশনে পৌছার আগে অবরোধ তুলে নেয় কুলাউড়ার আন্দোলন কারীরা।

আন্দোলনের সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই এক বিবৃতিতে সাধারণ জনগণকে ১ নভেম্বর ট্রেন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছিলেন আগেই ।

তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের রেলপথের বেহাল অবস্থা দূর করতে এবং যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বিগত ৪ মাস থেকে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়ায় অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে আন্দোলনকারীরা ট্রেন আটকালে রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের ডিআরএম ১৫ দিনের মধ্যে আলোচনার আশ্বাস দেন।

এরপর ১০ অক্টোবর কুলাউড়া জংশন স্টেশনের ভিআইপি ওয়েটিং রুমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. মহিউদ্দিন আরিফ। তবে বৈঠকে আশ্বাসে সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলনকারীরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১ নভেম্বর অবরোধের ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীদের ৮ দফা দাবি হলো- সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রুটে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইন বাস্তবায়ন; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট সেকশনের সব বন্ধ স্টেশন পুনরায় চালু; কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসনসংখ্যা বৃদ্ধি; কালনী ও পারাবত ট্রেনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার; শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার ও যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন।

আন্দোলনকারীদের দাবি, রেলওয়ের অবহেলার কারণে সিলেটবাসী প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাই দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন। কুলাউড়া রেল স্টেশনে উক্ত কর্মসূচীতে একাত্মা প্রকাশ করে উপস্থিত রয়েছেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাছ খান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবেদ রাজা প্রমুখ।

দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার রোমান আহমদ জানান রেলপথ অবরোধ এর কারনে ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত শ্রীমঙ্গল ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর পাহাড়িকা মাইজগাঁও স্টেশন আটকানোর কারনে ট্রেন দুটি যাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে।

রেলপথ অবরোধের প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক আজিজুল ও মুখ্য সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আখই বলেন, দীর্ঘ ৪ ঘন্টা রেলপথ অবরোধ করে ঢাকা রেল বিভাগের সাথে কুলাউড়া জংশনে দেড় ঘন্টা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের ৮টির মধ্যে ৬ টি দাবি সাময়িকের জন্য মেনে নেওয়ায় আমরা আজকের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি এবং ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি না মানা হলে আবারো রেলপথ অবরোধের ডাক দেওয়া হবে।