9:43 pm, Monday, 17 November 2025

ধনিয়াপাতা ৬০০ ও কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা কেজি: কমলগঞ্জে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে নি¤œবিত্তের সবজি ও এখন“বিলাসী পণ্য”হয়ে উঠেছে

আব্দুর রাজ্জাক রাজা,কমলগঞ্জ:
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় সপ্তাহের ব্যবধানের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় ন্মিম আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। এক সময় নি¤œবিত্তের সরজিও এখন “বিলাসী পণ্যে” তালিকায় উঠে এসেছে। শত টাকা নিচে সবজি কেনা যায়না। তাই নি¯œ আয়ের মানুষরা পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। উপজেলার বাজার সমুহে ধণিয়াপাতার কেজি ৬০০ ও কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার উপজেলার পৌর শহরের প্রদান বাজার ভানুগাছ বাজার.শমসেরনগর,মুন্সিবাজার,আদামপুর বাজার,মাধবপুর বাজার ঘুরে দেখাগেছে,নিত্যপণ্য সবজির আগের ছেয়ে দাম ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে বাজারে ধনিয়াপাতার কেজি ৬০০ টাকা ও কাঁচা মরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও ধনিয়াপাতা ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়েছিল।
এছাড়া কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে.প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই প্রকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন ১২০ টাকা,করলা ১২০ টাকা,শসা ৯০ টাকা,আলু ৭০ টাকা টেঁড়শ ১২০ টাকা,বরবটি ১১০ টাকা,গাজর ১২০ টাকা,পটল ১০০ টাকা,লাউ ৮০ থেকে ৯০ টাকা,মিষ্টি কুমড়া প্রকার ভেদে ৮০ থেকে ১৮০ টাকা,চাল কুমড়া ৮০/৯০ টাকা,কাঁচা কলা ৬০/৭০টাকা, টমেটো ১৪০/১৬০টাকা,চিচিংগা ৯০ টাকা,পুঁইশাখ ৬০ টাকা,লাল শাখ ৬০ টাকা,কাঁকরোল ১০০ টাকা,মুখি ৬০ টাকা,বাঁধা কপি ১১০ টাকা ও পিয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভানুগাছ কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা রহমত মিয়া বলেন,“চোখে অন্ধকার দেখছি”। সামান্য আয় দিয়ে কিভাবে সংসার চালাবো তা বুঝতে পারছিনা। সবজি কিনবো সেই অবস্থা ও আর নেই।
হনুফা বেগম বলেন,বাজারে আসার কথা শুনলেই ঘা শিউরে উঠে। আগে যে টুকু ক্রয় করতাম এখন সেটা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। তবু ও মাসে দার-দেনা করতে হয়।
রাকেশ শব্দকর বলেন,গত সপ্তাহে যে জিনিস কিনেছি ৫০/৬০ টাকায় ,এখন একই জিনিস কিনতে হচ্ছে ৯০/১০০ টাকায়। সেই তুলনায় আমাদের আয় বাড়েনি। আগে মাসে যা আয়-রোজগার করতাম তা দিয়ে সংসারে নিত্য দিনের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারতাম। এখন তা আর সম্ভব নয়।
বাজার করতে আসা রেজিয়া বেগম,তাহির মিয়া, রমজান আলী,সত্যজিত রায় ও রায়হান মিয়ার সাথে আলাপ করলে
তারা ক্ষোভের সাথে বলেন,এখন সঞ্চয়তো দুরের কথা দার- দেনা করে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী শামীম বলেন,এখন বাজারে সবজির দাম বাড়ার কারনে আগের মতো বিক্রি হচ্ছেনা। কারন ক্রেতারা আগে যে সবজি কেজি/২ কেজি নিতেন এখন তার অর্ধেক কিনছেন।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী সুমন বলেন,বাজারে সবজি সরবরাহ কম,তাই দাম বেশী। দাম বেশী হওয়ার কারনে ক্রেতারা অল্প অল্প কিনছেন।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী ভুষন রায়,সোহেল আহমেদ,রশীদ আলী বলেন,এখন বাজারে চাহিদার চেয়ে সবজি জোগান কম। জিনিসের দাম বাড়ানো আমাদের কোন হাত নেই। আমরা আড়ৎদারদের কাছ থেকে যে দামে কিনে আনি তার সাথে পরিবহনের খরচ যোগ করে জিনিসের দাম নির্ধারণ করি। এরপর সীমিত টাকা মুনাফা করে আমরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। তারা আরো বলেন,আর বাজারের নিত্য পণ্যের সরবরাহ এখন কম,তাই দাম একটু বেশী মনে হচ্ছে। আমরা কম দামে কিনতে পারলে,আমরা ও কম দামে বিক্রি করবো।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

ধনিয়াপাতা ৬০০ ও কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা কেজি: কমলগঞ্জে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে নি¤œবিত্তের সবজি ও এখন“বিলাসী পণ্য”হয়ে উঠেছে

Update Time : 12:24:09 pm, Friday, 11 October 2024

আব্দুর রাজ্জাক রাজা,কমলগঞ্জ:
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় সপ্তাহের ব্যবধানের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় ন্মিম আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। এক সময় নি¤œবিত্তের সরজিও এখন “বিলাসী পণ্যে” তালিকায় উঠে এসেছে। শত টাকা নিচে সবজি কেনা যায়না। তাই নি¯œ আয়ের মানুষরা পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। উপজেলার বাজার সমুহে ধণিয়াপাতার কেজি ৬০০ ও কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার উপজেলার পৌর শহরের প্রদান বাজার ভানুগাছ বাজার.শমসেরনগর,মুন্সিবাজার,আদামপুর বাজার,মাধবপুর বাজার ঘুরে দেখাগেছে,নিত্যপণ্য সবজির আগের ছেয়ে দাম ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে বাজারে ধনিয়াপাতার কেজি ৬০০ টাকা ও কাঁচা মরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও ধনিয়াপাতা ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়েছিল।
এছাড়া কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে.প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই প্রকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন ১২০ টাকা,করলা ১২০ টাকা,শসা ৯০ টাকা,আলু ৭০ টাকা টেঁড়শ ১২০ টাকা,বরবটি ১১০ টাকা,গাজর ১২০ টাকা,পটল ১০০ টাকা,লাউ ৮০ থেকে ৯০ টাকা,মিষ্টি কুমড়া প্রকার ভেদে ৮০ থেকে ১৮০ টাকা,চাল কুমড়া ৮০/৯০ টাকা,কাঁচা কলা ৬০/৭০টাকা, টমেটো ১৪০/১৬০টাকা,চিচিংগা ৯০ টাকা,পুঁইশাখ ৬০ টাকা,লাল শাখ ৬০ টাকা,কাঁকরোল ১০০ টাকা,মুখি ৬০ টাকা,বাঁধা কপি ১১০ টাকা ও পিয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভানুগাছ কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা রহমত মিয়া বলেন,“চোখে অন্ধকার দেখছি”। সামান্য আয় দিয়ে কিভাবে সংসার চালাবো তা বুঝতে পারছিনা। সবজি কিনবো সেই অবস্থা ও আর নেই।
হনুফা বেগম বলেন,বাজারে আসার কথা শুনলেই ঘা শিউরে উঠে। আগে যে টুকু ক্রয় করতাম এখন সেটা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। তবু ও মাসে দার-দেনা করতে হয়।
রাকেশ শব্দকর বলেন,গত সপ্তাহে যে জিনিস কিনেছি ৫০/৬০ টাকায় ,এখন একই জিনিস কিনতে হচ্ছে ৯০/১০০ টাকায়। সেই তুলনায় আমাদের আয় বাড়েনি। আগে মাসে যা আয়-রোজগার করতাম তা দিয়ে সংসারে নিত্য দিনের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারতাম। এখন তা আর সম্ভব নয়।
বাজার করতে আসা রেজিয়া বেগম,তাহির মিয়া, রমজান আলী,সত্যজিত রায় ও রায়হান মিয়ার সাথে আলাপ করলে
তারা ক্ষোভের সাথে বলেন,এখন সঞ্চয়তো দুরের কথা দার- দেনা করে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী শামীম বলেন,এখন বাজারে সবজির দাম বাড়ার কারনে আগের মতো বিক্রি হচ্ছেনা। কারন ক্রেতারা আগে যে সবজি কেজি/২ কেজি নিতেন এখন তার অর্ধেক কিনছেন।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী সুমন বলেন,বাজারে সবজি সরবরাহ কম,তাই দাম বেশী। দাম বেশী হওয়ার কারনে ক্রেতারা অল্প অল্প কিনছেন।
কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী ভুষন রায়,সোহেল আহমেদ,রশীদ আলী বলেন,এখন বাজারে চাহিদার চেয়ে সবজি জোগান কম। জিনিসের দাম বাড়ানো আমাদের কোন হাত নেই। আমরা আড়ৎদারদের কাছ থেকে যে দামে কিনে আনি তার সাথে পরিবহনের খরচ যোগ করে জিনিসের দাম নির্ধারণ করি। এরপর সীমিত টাকা মুনাফা করে আমরা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। তারা আরো বলেন,আর বাজারের নিত্য পণ্যের সরবরাহ এখন কম,তাই দাম একটু বেশী মনে হচ্ছে। আমরা কম দামে কিনতে পারলে,আমরা ও কম দামে বিক্রি করবো।