9:07 pm, Thursday, 13 November 2025

বায়তুল মোকাররম ও সংসদে শুটিংয়ের অনুমতি চান ফারুকী

বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও জাতীয় সংসদ ভবনে শুটিং করতে চান দেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফাইড পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এ নির্মাতা অস্ট্রেলিয়াকে উদাহরণ হিসেবে টেনে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়া বললে আমাদের চোখে কোন ইমেজ ভাসে? সিডনি অপেরা হাউজ আর হারবার ব্রিজ। কখনো নরমাল টাইমের ছবি, কখনো বা ভাসে থার্টি ফার্স্ট সেলিব্রেশনের আলোকসজ্জাসহ ছবি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনের মধ্যে একটা আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তিবাজ দেশের পারসেপশন তৈরি হয়। আদতে এই জায়গাটা সিডনির খুব ছোট একটা অংশই। বৃহৎ সিডনি মূলত শান্ত শীতল এক কান্ট্রিসাইড।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ভাবলে আপনার মাথায় অলস-শান্ত-শীতল কোনো জায়গা মনে না হয়ে আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তির জায়গা যে মনে হয়, এটা ইমেজের ম্যাজিক। সারা দুনিয়ার পত্রিকায় এবং আপনার নিউজফিডে এতো এতো বার অপেরা হাউজ আর হারবার ব্রিজের ছবি ছাপা হয়েছে এবং হচ্ছে যে আপনার মাথায় এটা গেঁথে যাচ্ছে। এখন একবার ভাবেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি আইন করে এই সব জায়গায় ছবি তোলা যাবে না বা শুটিং করা যাবে না, তাহলে কিন্তু আর এই ইমেজটা আপনার মাথায় গাঁথতো না।

তিনি লিখেছেন, আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসেবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শুটিং করতে পারবেন না, কারণ সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শুটিং করা সম্ভব যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শুটিং না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রোপারলি দেখাও না’।

ফারুকী লিখেছেন, আরেকটা কথা মাঝে মধ্যে শুনি। হিন্দু বা খ্রিষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলা বাইরে ফিল্মমেকাররা এতো সুন্দর করে তুলে ধরে, আমাদের ফিল্মমেকাররা মুসলমানদের রিচ্যুয়ালগুলাকে সেভাবে তুলে ধরে না। কথা সঠিক। কিন্তু যারা এই কথাগুলা বলে তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করি ‘আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকারম মসজিদের ভেতরে শুটিং করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন?’ সঙ্গে সঙ্গে দেখি উনারা আমতা আমতা করতে থাকেন। আপনি মসজিদে শুটিং করতে দিবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচ্যুয়ালগুলো মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে?

তিনি আরও লিখেছেন, আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এইরকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।

সবশেষ তিনি লিখেছেন, যে কথা বলতে এতো কথার অবতারণা, দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন, যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শুটিং করা প্রয়োজন সেটা উল্লেখ করে ঐ কমিশনে আবেদন করবে। সঙ্গে নির্ধারিত ফি-ও জমা দিবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেয়া হবে। সঙ্গে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশন স্পেপিসিক নিয়ম কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় গেলে সকলকে নিয়েই ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্টা করা হবে- এড. আব্দুর রব

বায়তুল মোকাররম ও সংসদে শুটিংয়ের অনুমতি চান ফারুকী

Update Time : 06:48:16 am, Saturday, 26 February 2022

বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও জাতীয় সংসদ ভবনে শুটিং করতে চান দেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফাইড পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এ নির্মাতা অস্ট্রেলিয়াকে উদাহরণ হিসেবে টেনে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়া বললে আমাদের চোখে কোন ইমেজ ভাসে? সিডনি অপেরা হাউজ আর হারবার ব্রিজ। কখনো নরমাল টাইমের ছবি, কখনো বা ভাসে থার্টি ফার্স্ট সেলিব্রেশনের আলোকসজ্জাসহ ছবি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনের মধ্যে একটা আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তিবাজ দেশের পারসেপশন তৈরি হয়। আদতে এই জায়গাটা সিডনির খুব ছোট একটা অংশই। বৃহৎ সিডনি মূলত শান্ত শীতল এক কান্ট্রিসাইড।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ভাবলে আপনার মাথায় অলস-শান্ত-শীতল কোনো জায়গা মনে না হয়ে আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তির জায়গা যে মনে হয়, এটা ইমেজের ম্যাজিক। সারা দুনিয়ার পত্রিকায় এবং আপনার নিউজফিডে এতো এতো বার অপেরা হাউজ আর হারবার ব্রিজের ছবি ছাপা হয়েছে এবং হচ্ছে যে আপনার মাথায় এটা গেঁথে যাচ্ছে। এখন একবার ভাবেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি আইন করে এই সব জায়গায় ছবি তোলা যাবে না বা শুটিং করা যাবে না, তাহলে কিন্তু আর এই ইমেজটা আপনার মাথায় গাঁথতো না।

তিনি লিখেছেন, আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসেবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শুটিং করতে পারবেন না, কারণ সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শুটিং করা সম্ভব যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শুটিং না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রোপারলি দেখাও না’।

ফারুকী লিখেছেন, আরেকটা কথা মাঝে মধ্যে শুনি। হিন্দু বা খ্রিষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলা বাইরে ফিল্মমেকাররা এতো সুন্দর করে তুলে ধরে, আমাদের ফিল্মমেকাররা মুসলমানদের রিচ্যুয়ালগুলাকে সেভাবে তুলে ধরে না। কথা সঠিক। কিন্তু যারা এই কথাগুলা বলে তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করি ‘আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকারম মসজিদের ভেতরে শুটিং করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন?’ সঙ্গে সঙ্গে দেখি উনারা আমতা আমতা করতে থাকেন। আপনি মসজিদে শুটিং করতে দিবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচ্যুয়ালগুলো মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে?

তিনি আরও লিখেছেন, আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এইরকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।

সবশেষ তিনি লিখেছেন, যে কথা বলতে এতো কথার অবতারণা, দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন, যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শুটিং করা প্রয়োজন সেটা উল্লেখ করে ঐ কমিশনে আবেদন করবে। সঙ্গে নির্ধারিত ফি-ও জমা দিবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেয়া হবে। সঙ্গে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশন স্পেপিসিক নিয়ম কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।