7:02 am, Wednesday, 19 November 2025

রপ্তানি হ্রাস অব্যাহত, অক্টোবরে কমেছে ৭.৪৩ শতাংশ

ডেস্ক রিপোর্ট :: চলতি অর্থবছরের তৃতীয় মাসেও কমল সামগ্রিক রপ্তানি আয়। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ৭.৪৩ শতাংশ কম। একই সময়ে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৮.৩৯ শতাংশ।

সোমবার (৪ অক্টোবর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমার হার ছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর আগস্টে কমেছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে রপ্তানি খাতে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এই এক মাসের বড় প্রবৃদ্ধির প্রভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) এ খাতে প্রবৃদ্ধির ধারা দেখাচ্ছে। তা সত্ত্বেও রপ্তানি খাতে অর্থবছরের শুরুতে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চার মাস পর এসে তা মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশে ঠেকেছে।

খাতভিত্তিক রপ্তানি চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক থেকে আসে। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাকে। তৈরি পোশাক রপ্তানি হ্রাসের ফলে সামগ্রিক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বসানোর ফলে রপ্তানি কমেছে। প্রথমে যখন শুল্ক বাড়ানো হচ্ছিল, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা বেশি বেশি তৈরি পোশাক সংগ্রহ করে রেখেছিল। সে সময় ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা ফলে ক্রেতারা এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। এর ফলে এখন তারা কম পোশাক আমদানি করে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বাংলাদেশের বড় বাজার ইউরোপে চীন বেশি মনোযোগ দেয়। এতে ইউরোপের বাজারে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ইউরোপ বাড়তি মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রয় কমিয়েছে। এসবের প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে, যোগ করেন মহিউদ্দিন রুবেল।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এ পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ।

পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৭২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ২২ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯.৫৭ শতাংশ।

Tag :
About Author Information

Sirajul Islam

শ্রীমঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা

রপ্তানি হ্রাস অব্যাহত, অক্টোবরে কমেছে ৭.৪৩ শতাংশ

Update Time : 10:47:50 am, Tuesday, 4 November 2025

ডেস্ক রিপোর্ট :: চলতি অর্থবছরের তৃতীয় মাসেও কমল সামগ্রিক রপ্তানি আয়। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ৭.৪৩ শতাংশ কম। একই সময়ে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৮.৩৯ শতাংশ।

সোমবার (৪ অক্টোবর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমার হার ছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর আগস্টে কমেছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তবে গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে রপ্তানি খাতে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এই এক মাসের বড় প্রবৃদ্ধির প্রভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) এ খাতে প্রবৃদ্ধির ধারা দেখাচ্ছে। তা সত্ত্বেও রপ্তানি খাতে অর্থবছরের শুরুতে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চার মাস পর এসে তা মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশে ঠেকেছে।

খাতভিত্তিক রপ্তানি চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক থেকে আসে। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাকে। তৈরি পোশাক রপ্তানি হ্রাসের ফলে সামগ্রিক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বসানোর ফলে রপ্তানি কমেছে। প্রথমে যখন শুল্ক বাড়ানো হচ্ছিল, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা বেশি বেশি তৈরি পোশাক সংগ্রহ করে রেখেছিল। সে সময় ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা ফলে ক্রেতারা এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। এর ফলে এখন তারা কম পোশাক আমদানি করে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বাংলাদেশের বড় বাজার ইউরোপে চীন বেশি মনোযোগ দেয়। এতে ইউরোপের বাজারে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ইউরোপ বাড়তি মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রয় কমিয়েছে। এসবের প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে, যোগ করেন মহিউদ্দিন রুবেল।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এ পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ।

পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৭২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ২২ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯.৫৭ শতাংশ।