1. newsmkp@gmail.com : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. info@fxdailyinfo.com : admi2017 :
  3. admin@mkantho.com : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:১৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তামিম

৭ দিনেও উদ্ধার করা যায়নি ভারতে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২৫ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট::আবারও একটা রবিবার চলে এলো, কিন্তু উত্তরকাশীর নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গ ধসে আটকে পড়া শ্রমিকদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হল না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আলোর উৎসব দীপাবলির দিন, ১২ নভেম্বর ভোরে পাহাড়ি ধস নামার পর থেকে কর্মরত শ্রমিকরা সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে আছেন।

এত দিন ৪০ জন শ্রমিকের কথা বলা হলেও শনিবার সেই সংখ্যা আসলে ৪১ বলে জানানো হচ্ছে।

তাদের উদ্ধার করার তিনটি প্রচেষ্টা বিফল হয়েছে। নতুন বিকল্প নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে এখন।

শ্রমিকরা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা, তবে তাদের মনোবল ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে।

আত্মীয় পরিজনদের কাছে আটকে পড়া শ্রমিকরা জানতে চাইছেন তাদের উদ্ধারের জন্য সত্যিই কিছু করা হচ্ছে, না কি তাদের শুধুই মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গটি ‘চারধাম প্রকল্প’-এর অংশ, যা বদ্রীনাথ, কেদারনাথ, যমুনোত্রী এবং গঙ্গোত্রীর হিন্দু তীর্থস্থানগুলিকে একই রাস্তা দিয়ে জুড়বে।

এটি একটি বিতর্কিত প্রকল্প এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই প্রকল্পটি আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে, যা ইতিমধ্যে এখানে একটি বড় সমস্যা।

উদ্ধার প্রচেষ্টা থমকে আছে
এই প্রকল্পটি যারা বাস্তবায়ন করছে, সেই সরকারী হাইওয়ে ও অবকাঠামো সংস্থা এনএইচআইডিসিএল জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে সুড়ঙ্গের ভেতরে প্রচণ্ড শব্দ হয়, যার ফলে ড্রিলিং যন্ত্রটি যারা চালাচ্ছিলেন, তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এনএইচআইডিসিএল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সুড়ঙ্গটি আরও ধসে পড়ার সম্ভাবনার কারণে আপাতত উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।’

গত সাত দিনে তিনটি পদ্ধতিতে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সবগুলি প্রচেষ্টাই বিফল হয়েছে।

প্রথমে চেষ্টা করা হচ্ছিল ভূমি ধসের ফলে সুড়ঙ্গের ভেতরে যে মাটি-পাথর জমা হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে ফের ধস নামে, তাই সেই পদ্ধতি বাতিল করা হয়।

পরে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসাবশেষের ভেতরে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা হয়। সেই যন্ত্রও খারাপ হয়ে যায়। তারপরে দিল্লি থেকে আরেকটি বড় মাটি কাটার যন্ত্র এনে ধ্বংসাবশেষের ভেতর দিয়ে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটা পাইপ গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। শুক্রবার রাতে সেই যন্ত্রও থমকিয়ে যায়।

এখন ইন্দোর থেকে আরও বড় একটা যন্ত্র আনা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন সুড়ঙ্গের ভেতরে প্রায় ৭০ মিটার অংশ জুড়ে ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৪ মিটার গর্ত খোঁড়া সম্ভব হয়েছে।

বিকল্প পথের ভাবনা
এর আগে যতগুলো উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে, সব কটিই সুড়ঙ্গের শুরু থেকে ভেতরের দিকে সোজাসুজি গর্ত করার প্রচেষ্টা। কিন্তু এখন কর্মকর্তারা ভাবছেন যে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হচ্ছিল, তার ওপর দিক থেকে গর্ত করার কথা।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টাদের একটি দল শনিবার সুড়ঙ্গের ওপরে পাহাড়টি পরিদর্শন করেন।

পরে তারা সাংবাদিকদের বলেন, পাহাড়ের চূড়ার ঠিক নিচে সুড়ঙ্গে গর্ত খননের বিকল্প নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। পাহাড়ের চারটি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখান থেকে গর্ত করা যায়।

পাহাড়ের চূড়া থেকে গর্ত তৈরি করতে হলে ১০৩ মিটার খুঁড়তে হবে, যাতে বেশ ঝুঁকি আছে।

এখন গাছপালা কেটে সাফ করে সেখানে ড্রিলিং মেশিন বসানো হচ্ছে।

নতুন যন্ত্রটি চালু হওয়ার পর টানেলের সামনে থেকে ধ্বংসাবশেষ অপসারণের জন্য খনন কাজও আবার শুরু হবে।

সব যন্ত্রপাতি ঠিক মতো কাজ করলে শ্রমিকরা যেখানে আটকে আছেন, সেই পর্যন্ত পৌঁছতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগতে পারে, এমনটাই মনে করছেন কর্মকর্তারা।

মনোবল ভাঙছে শ্রমিকদের
সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকরা সবাই মহাসড়ক ও সুড়ঙ্গ নির্মাণকারী সংস্থা নভযুগ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের (এনইসিএল) জন্য কাজ করে।

সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবার ও নির্মাণ স্থলে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকরা খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

প্রথমে তাদের অনেকেই তাদের কোম্পানির ভয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অনিচ্ছুক ছিলেন, কিন্তু শনিবার তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে যে এবার তারা ধৈর্য হারাচ্ছেন।

মৃত্যুঞ্জয় কুমার এই প্রকল্পে লোডার এবং অপারেটর হিসাবে কাজ করেন।

বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, ‘আমরা ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু এখন সাত দিন হয়ে গেছে, এবার ওদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। শুকনো খাবার খেয়ে তারা কত দিন বাঁচবে!

‘ওরা আমাদের জিজ্ঞাসা করছে যে উদ্ধার করার জন্য সত্যিই কিছু করা হচ্ছে না কি তাদের মিথ্যা সান্ত্বনা দিচ্ছি! ওরা এখনো সুস্থ আছে, কিন্তু ধীরে ধীরে ওদের মনোবল ভেঙে পড়ছে,’ জানাচ্ছিলেন কুমার।

সুড়ঙ্গের ভেতরে পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। একই পাইপ দিয়ে জলের বোতল, শুকনো খাবারের প্যাকেট, ওষুধ পাঠানো হচ্ছে।

ওই পাইপটি দিয়েই কথাও বলা হচ্ছে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে।

বিক্রম সিং এসেছেন উত্তরাখণ্ডের চম্পাউর জেলা থেকে। তার ২৪ বছর বয়সী ছোট ভাই সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়েছেন।

শুক্রবার তিনি পাইপের মাধ্যমে তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। তার ভাই বেশ নার্ভাস হয়ে পড়েছে বলে বিবিসিকে জানাচ্ছিলেন সিং।

থাকার কোনো জায়গা নেই
সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারগুলো বারবার আমাদের কাছে অভিযোগ করছিল যে প্রশাসন বা নির্মাণ সংস্থা তাদের থাকার এবং খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা করেনি।

গ্রামে হোটেল না থাকায় পরিবারটি থাকা-খাওয়া-দাওয়া করতে সমস্যায় পড়ছে।

চঞ্চল সিং বিষ্ট জানান, ৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি এসেছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার থাকার জায়গা নেই।

তিনি বলেন, আত্মীয়স্বজনদের জিজ্ঞাসা করার কেউ নেই, কর্তৃপক্ষ ‘আমাদের পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে’।
খবর বিবিসি

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..