রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে মানিকগঞ্জে সকাল থেকেই কার্যকর হচ্ছে সরকার ঘোষিত ৯ দিনের লকডাউন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (২১ জুন) মানিকগঞ্জসহ সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। তবে হঠাৎ লকডাউন ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।
মঙ্গলবার (২২ জুন) সকালে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহরের ভাষা শহীদ রফিক সড়কে দু-একটি রিকশা, অটোরিকশা চলাচল করছে। সকাল থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানবাহন চলাচলে তদারকি করছে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন যানবাহন ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং অনেক যানবাহনকে ঢাকার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
তবে মহাসড়কে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি, প্রাইভেটকার, দূরপাল্লার পরিবহন বাস, ট্রাক চলতে দেখা গেছে। লকডাউন উপেক্ষা করে অনেক মানুষকে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। সড়কে যানবাহন না থাকায় অনেকে হেঁটেই কর্মস্থলে যাচ্ছেন। তবে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশকে বাসস্ট্যান্ডে যানবাহন চলাচলে কঠোর নজরদারি করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া জেলা শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হলে লাভলু মিয়া নামে একজনের সঙ্গে। তিনি জানান, সাভারের একটি বেসকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। দুইদিন আগে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। লকডাউনের বিষয়টি না জানার কারণে বিপাকে পড়েছেন তিনি। তবে চাকরি বাঁচাতে যেকোনোভাবে তাকে কর্মস্থলে যেতে হবে।
আমেনা বেগম নামে একজন বলেন, মেয়ে বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। হঠাৎ করে লকডাউনের খবর শুনে বিপাকে পড়েছি।
ঢাকার লালবাগে যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অপেক্ষা করছেন কয়েকজন। তারা বলেন, এখন কেমনে যামু? সকাল থেকে বসে আছি। কোনো গাড়ি চলতাছে না। এই লকডাউনের জন্য খুব ভোগান্তিতে পড়েছি।
রামপ্রসাদ নামে এক রিকশাচালক বলেন, কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। রিকশা নিয়ে বের হয়ে দেড় থেকে দুইশ টাকা আয় হচ্ছে। এর মধ্যে আবার লকডাউন চলতাছে। কিভাবে যে পরিবারের লোকগুলোর মুখে খাবার তুলে দিব? বাধ্য হয়েই রিকশা নিয়ে বের হইছি। রিকশা না চালাইলে খামু কী? লকডাউন দিয়া করমু কী?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষি কর্মকর্তা জানান, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা কৃষি অফিসে চাকরি করেন তিনি। লকডাউনের বিষয়টি জেনে তিনি মোটরসাইকেল রেখে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। ধামরাইয়ের মইশাসি থেকে অনেক কষ্টে মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এসেছেন। এখানে এসে আর কোনো যানবাহনই পাচ্ছেন না। এখন তার কর্মস্থলে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়িত্বরত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন নিপা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। সকাল থেকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পাটুরিয়ামুখী বেশ কয়েকটি গাড়িকে ঢাকার দিকে ফিরেয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাস্ক না পরার তিনজনকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।