শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ::দেশের নন্দিত অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। তিনি একাধারে প্রযোজক, পরিচালক, আবৃত্তিকার ও রাজনীতিবিদ। সব মাধ্যমেই সফলতার শীর্ষে এই তারকা। আজ ৩ এপ্রিল এই অভিনেত্রীর জন্মদিন।
রোকেয়া প্রাচীর শৈশব কাটে ফেনীর সোনাগাজী ও ঢাকার মিরপুরে। তিনি ঢাকার আইডিয়াল মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে লালমাটিয়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
জন্ম ফেনীতে হলেও শৈশব থেকেই ঢাকার বাসিন্দা তিনি। বাড়ির পরিবেশ ছিল ভীষণ রক্ষণশীল। প্রতিকূল পরিবেশে তিনি চালিয়ে গেছেন মঞ্চে নাটক চর্চা। মঞ্চে প্রাচ্যনাট দলের সাথে কাজ দিয়ে অভিনয়ের শুরু। টেলিভিশনের দর্শকরা তাকে চিনেছে মঞ্চ ও বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রের শিল্পী হিসেবে।
বরাবরই সাদামাটায় অভ্যস্ত রোকেয়া প্রাচী। তাই তো জীবনের বিশেষ দিনে তার নেই কোনো আয়োজন। ঘরোয়াভাবেই কাটছে তার জন্মদিন। ১৯৮৯ সালে আরণ্যক নাট্যদলে যোগদানের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘জয় পরাজয়’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে টিভি পর্দায় কাজ শুরু করেন তিনি।
ছোট পর্দায় অভিনয়ের সঙ্গে চলচ্চিত্রেও দর্শক নন্দিত রোকেয়া প্রাচী। ১৯৯৮ সালে ‘দুখাই’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তারপর ধীরে ধীরে তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’র মতো আলোচিত ও দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন।
শুধু অভিনয় নয়, তার পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত রোকেয়া প্রাচী। বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যুতে তাকে প্রায়ই রাজপথে খুঁজে পাওয়া যায়। রোকেয়া প্রাচী এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সেখানেও বাড়ি থেকে বাধা তাকে থামাতে পারেনি। এর পরের গল্প অজানা নয়।
জন্মদিনের উদযাপন নিয়ে জানতে চাইলে রোকেয়া প্রাচী বলেন, জন্মদিনের প্রসঙ্গ এলে আমি বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে চাই যে, তার মতো এমন একজন মহামানব, মহানায়ক ও আমাদের রাজনীতিতে এত বড় প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব পৃথিবীতে আসলে বিরল। এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব যদি তার জন্মদিন পালনে বিরত থাকতে পারেন তবে আমি তো অনেক ক্ষুদ্র একজন মানুষ। তবে হ্যাঁ, আমার সন্তানরা ও দেশের অনেক মানুষ আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। এর চেয়ে বেশি কিছু দরকার হয় না।
রোকেয়া প্রাচী অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি টিভি নাটক, কাহিনিচিত্র ও টেলিছবি নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—‘স্বপ্ন সত্যি হতে পারে’, ‘রুবিনা’, ‘আমেনা’ ও ‘ফুলকির গল্প’। এর আগে তিনি ২০০৯ সালে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন, সেটিই ছিল তার প্রথম পরিচালনা, এরপর তিনি ‘লুৎফুন্নেসা’ ও ‘বায়ান্নর মিছিলে’ নামে আরও দুটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে—‘দুখাই’, ‘মাটির ময়না’, ‘অন্তর্যাত্রা’, ‘কারিগর’,‘ ডুব’,‘ মনের মানুষ’,‘ গাড়িওয়ালা’, ‘স্বপ্ন ডানায়’, ‘বৃত্তের বাইরে’ , ‘অন্ধ নিরাঙ্গম’ তার আলোচিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।