1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কুলাউড়ায় আত্মগোপনে আওয়ামীপন্থী ইউপি চেয়ারম্যানরা, সেবা বঞ্চিত জনগণ

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪
  • ৪৪৯ বার পঠিত

কুলাউড়া প্রতিনিধি: চলমান পরিস্থিতিতে সরকার পতনের পর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামলীগ পন্থী চেয়ারম্যানরা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। ভাংচুর, হুমকি ও নিরাপত্তার কারণে কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে সেবাদানে স্থবিরতা নেমে এসেছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ১১ আগস্ট রোববার সরেজমিন কুলাউড়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ, শুধু সচিব অফিস করছেন। আওয়ামীপন্থী চেয়ারম্যানদের অনেকেই ক্ষমতার পালাবদলের কারণে নিজেদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের রোষানল থেকে বাঁচতে ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন না। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবাগ্রহিতারা বিগত মাস খানেক থেকে বিভিন্ন সনদের আবেদন করেও চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর না থাকায় প্রয়োজনীয় সনদ পাচ্ছেন না। এতে করে জরুরী প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল কাজ করতে পারছেন না ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীতারা।

১১ আগস্ট রোববার সরেজমিনে হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে দেখা যায় চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স কার্যালয়ে নেই। তাঁর কক্ষ তালাবদ্ধ। শুধু সচিব অফিস করছেন। চেয়ারম্যান না থাকায় তাঁর কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে সেবাগ্রহিতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় নাগরিক সনদ নিতে আসেন ইউনিয়নের বাসিন্দা ফুল মিয়া, মোঃ এরশাদ আলী, সুরমান আহমদ, মোশাহিদ আলী, রুহুদজামান জিসান, ইয়াছমিন আক্তার সুমাইয়া, উত্তরাধিকারী সনদ নিতে আসেন জাবেদ মিয়া ও জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে আসেন সাহেনা আক্তার। তারা সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিজেদের বিভিন্ন অপকর্ম ঢাকতে আওয়ামীলীগের লেবাসধারী চেয়ারম্যানরা অফিসে না এসে গা ঢাকা দিয়েছেন। স্বাক্ষর নিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়, বাড়ি কিংবা মোবাইল ফোনে খোঁজ করে পাওয়া যাচ্ছে না। দায়িত্ব পালনে ভয় পেলে চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিন নতুবা প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দিন। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহাগ, কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান, টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালিক, জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব মাহাবুব, কাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান, কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী, শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান অফিস না করে এলাকার বাইরে রয়েছেন। এছাড়া বিএনপিপন্থী ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনিরসহ কয়েকজন চেয়ারম্যান অফিস করেছেন বলে দাবি করেছেন। এদিকে পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদও পৌর কার্যালয়ে অফিস করতে দেখা যায়নি। কুলাউড়ায় ১৩ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার মধ্যে একমাত্র ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপিপন্থী ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র। বাকি সবাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।

হাজীপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল বলেন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স নানা অপকর্ম করেছেন। এজন্য তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, জনগণের সেবা নিশ্চিতে যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।

হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে পুলিশ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে সেখানে চেয়ারম্যানরা কিভাবে অফিস করবে। প্রতিপক্ষের উসকানিতে পরিষদে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য নিরাপত্তাহীনতায় অফিসে যাচ্ছি না।

ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান মনির বলেন, চেয়ারম্যানদের নিরাপত্তার বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে অবগত করেছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলেছি, জনগণের প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে চেয়ারম্যানদের সার্বিক সহযোগিতা করা দরকার।

টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালিক বলেন, নিরাপত্তার অবনতির কারণে ইউপি অফিসে যাইনি। দুস্কৃতিকারীরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এসে ভাংচুর করে সচিবকে হুমকি প্রদান করে।

কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে অফিসে যাইনি। কারণ নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রতিপক্ষের রেষের কারণে আতঙ্কিত। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, প্রত্যেক ইউনিয়ন অফিসে নিরাপত্তা জোরদার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে একটি শান্তি সমাবেশ করা হউক।

শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে অসুস্থ থাকায় একদিনও অফিসে যাইনি। তবে বাড়িতে থেকে জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহি উদ্দিন বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে অনেক চেয়ারম্যানরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে কয়েকজন চেয়ারম্যান রোববার অফিস করেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। জনগণের প্রয়োজনেই প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাজে গতি আনতে সকলকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর কুলাউড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিক্ষুব্দ জনতা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিরোধী নানা ¯েøাগান দিয়ে মিছিল করে। এসময় দুস্কৃতিকারীরা কুলাউড়া থানা, উপজেলা পরিষদ, ইউএনও’র কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, আওয়ামীলীগ কার্যালয়, কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্য়ালয়সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট হয়। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমানের মালিকানাধীন মিতালি ফার্মেসি ভাঙচুর করে সমস্ত ঔষধ লুটপাট এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে হামলা করা হয়।

ছবি ক্যাপশন ঃ কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান না থাকায় সেবাবঞ্চিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..