1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা : ৭ বছর পর স্বাধীনতা পেলেন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৫৯ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : এটা ঠিক যে সংস্কৃতিবান্ধব হিসেবে শেখ হাসিনা অনেক করেছেন। তার সময়ে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রে টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছেন। কিন্তু তিনি যে কাজটি ভয়ংকর খারাপ করেছেন সেটা তিনি শিল্প-সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করতে গিয়ে এই সেক্টরটিকে এমনভাবে কুক্ষিগত করেছেন যে বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনটি অপমৃত্যুর পথেই ছিল।

অথচ সৃজনশীল মাধ্যমটি কিছুতেই দলীয়ভাবে বিকশিত হয় না। যারা দলীয়ভাবে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা করেন তাদের মধ্যে থেকে কখনো উচ্চতার শিল্পী বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে শিল্প-সংস্কৃতি পচনের পথেই এগিয়ে যায়। আর এ জন্য বিগত সরকারের ১৬ বছরে দিন কে দিন এ দেশের গান, প্লে-ব্যাক প্রভৃতি জগাখিচুরিজাতীয় নিম্নমানেরই বেশি দেখা যাচ্ছিল। আজেবাজে গানকে পুরস্কৃত করে বরং গানকে রসাতলে তলিয়ে দিচ্ছিল।

এ দেশের গানের জগতে নন্দিত কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা একজন অবিসংবাদিত নাম। চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুলসঙ্গীত, লোকগীতিসহ প্রায় সব ধরনের গানে সমান পারদর্শী কনকচাঁপা। প্লে-ব্যাকে দেখা গেছে তাকে এক অনন্য উচ্চতার শিল্পী হিসেবে। যে কারণে তাকে অনেকে সাবিনা ইয়াসমিনের পর সবচেয়ে প্রতিভাবান শিল্পী হিসেবে বিবেচনা করছিলেন। কিন্তু এই কনকচাঁপাকেও বিগত হাসিনা সরকারের সময় ছিটকে পড়তে হয়। কোথাও গান করার সুযোগ পাচ্ছিলেন। এই নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলই যা তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ঢাকাই চলচ্চিত্রে তাকে কোনো সুযোগ না দিয়ে বস্তাপচা শিল্পী দিয়ে প্লে-ব্যাক করিয়ে সিনেমার বারোটা বাজিয়ে ফেলে। ফলে দর্শক মনে রাখার মতো কোনো মধুর গান আর শুনতে পাচ্ছিল না সিনেমায়। আজেবাজে কিছু গান আছে যেগুলো দু’দিনের জন্য ভাইরাল হয় ঠিকই, তারপরই হারিয়ে যায় চিরতরে। কারও মাথায়ই থাকে না সে গানের দু’লাইন। বলতে গেলে বিগত সরকারের সময়ে শিল্প-সংস্কৃতিতে সবচেয়ে বড় গানের জায়গাটিই। এরকম একঝাঁক প্রতিভাবান শিল্পী অব্যবহৃত হয়ে পড়লেন। তাদের জায়গায় এলেন দু-একজন বাদে অসংখ্য বস্তাপচা শিল্পী। তারাই শাসন করছিলেন এতদিন শোবিজ।

এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিনোদন অঙ্গনের শিল্পীরা। বিগত দিনগুলো কীভাবে পার করতে হয়েছে সেই ফিরিস্তি দিতে গিয়ে কেউ ফেলছেন দীর্ঘশ্বাস, কেউ ফেলছেন চোখের জল। সেই দলে আছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। যার গান ছাড়া ঢালিউডে সিনেমা হতো না, সেই শিল্পীকেও অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে গান গাওয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।
বিপাশা হায়াত কি করবেন?

সাম্প্রতিক সময়ের নানা ঘটনা স্পর্শ করেছে শিল্পী কনকচাঁপাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনিও ছিলেন ছাত্রদের পক্ষে। ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে ১৭ জুলাই ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি সব সময়ই ন্যায়ের পক্ষে। ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা, নিপীড়ন, রক্তপাত বন্ধ হোক। স্বাধীন বাংলাদেশে সম-অধিকার নিশ্চিত হোক।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের পর মুখ খুললেন কনকচাঁপা। এতকাল গান ছেড়ে রান্নায় মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি। রীতিমতো রন্ধনশিল্পী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করিয়ে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এই শিল্পী। এ কারণে বিগত সরকারের আমলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাকে।

এ প্রসঙ্গে কনকচাঁপা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি বিগত সাতটি বছর বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হয়েছি, তাতে মোটেই ভেঙে পরিনি। আমি সব সময় হাসিখুশি থেকেছি। কখনো কাঁদিনি। কখনো হতাশ হইনি। যত সমস্যা এসেছে, কারও কাছে অভিযোগ করিনি।’

তীব্র ক্ষোভ ও আক্ষেপ নিয়ে কনকচাঁপা বলেন, ‘আমাকে সাত বছর যেভাবে বোবা করে রাখা হয়েছে, তা বর্ণনাতীত। আমি কোনো কিছু লিখতে পারতাম না। শুধু তাই নয়, আমি গান গাইতে পারিনি। একজন শিল্পী যদি গান গাইতে না পারে, তার বোবা হয়ে যাওয়াই ভালো। কিন্তু আমি এত কিছুর পরও আশা হারাইনি।’

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে গান করছেন কনকচাঁপা। এই তিন যুগের মধ্যে তো অর্ধযুগই তিনি গানের আসল মঞ্চেই নেই। আর সেই মঞ্চটি হলো প্লে-ব্যাক। যে প্লে-ব্যাক একজন শিল্পীর পরম আরাধ্যের জায়গা। যে গান একজন শিল্পীকে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখে। আর এ নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা তো এ পর্যন্ত যত প্লে-ব্যাক করেছেন তার প্রায় সবই অন্তর ছোঁয়া গান।

চলচ্চিত্রের তার গাওয়া গানের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। যখন তিনি চলচ্চিত্রের গানে উচ্চাসনে তখনই তাকে ছিটকে পড়তে হয়। নয়তো বাকি অর্ধযুগে তিনি সব মিলিয়ে দশ হাজারের মতো প্লে-ব্যাক করতে পারতেন।

৩৫টিরও বেশি একক গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার। এই অ্যালবামও তার আরও অনেক হতে পারত। মোদ্দাকথা, বিগত শেখ হাসিনার সরকার কনকচাঁপার বিরাট ক্ষতি করেছে। শুধু কনকচাঁপারই নয়, এ দেশের অসংখ্য শ্রোতাকেও বঞ্চিত করেছে তার গান শোনা থেকে।

কনকচাঁপার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’, ‘তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়’, ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’, ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘তুমি আমার এমনই একজন’ উল্লেখযোগ্য।

গঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কনকচাঁপা বাচসাস, মেরিল প্রথম আলোসহ ৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ‘স্থবির যাযাবর’, ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’, ‘মেঘের ডানায় চড়ে’সহ বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন তিনি। কণ্ঠশিল্পী বশীর আহমেদের ছাত্রী কনকচাঁপা। দীর্ঘদিন তার কাছে উচ্চাঙ্গ, নজরুল সঙ্গীতসহ অন্যান্য ভারতীয় সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন। তবে তিনি যে উচ্চতার শিল্পী হয়েছেন তার জন্য সব সময় তার পিতা আজিজুল হক মোর্শেদ ও স্বামী মইনুল ইসলাম খান, এ দুজনের অবদানকেই অগ্রগণ্য করেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..