বিশেষ প্রতিবেদক:: একটি সূত্র জানিয়েছে, বালুর ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ এর কথা বলে মির্জাপুর, ভুনবীর, সাতগাঁও এলকার বালু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করতে হৃদয়। প্রেসক্লাব, থানা, পুলিশ, এমনকি এসিল্যান্ড এর নাম ভাঙ্গিয়ে বালুর চাঁদা আদায় করার দু:সাহস দেখাতো হৃদয় দেবনাথ। মাজার, পতিতা, ও জুয়া থেকেও নিয়মিত মাসোহারা আদায়ের কথা জানা গেছে। থানা পুলিশের তদবির বাণিজ্য করতে গড়ে তোলে একটি চক্র। শহরের রুবেল ও রুপক দত্ত নামে দুই ব্যক্তি তার ডান ও বাম হাত। অভিযোগ রয়েছে, গত জুন মাসে ক্ষতিগ্রস্ত একজন ঠিকাদারের চুরি যাওয়া মালামাল পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করে দেয়ার চুক্তি নিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে হৃদয়। পরবর্তিতে এশিয়া টিভির রাজশাহীর বুরে্যা প্রধান শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধির সহায়তায় টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হৃদয়ের এসব অপকর্ম নিয়ে গত ৫ ও ৬ জুলাই শ্রীমঙ্গলে বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে দেয়। একজন সাংবাদিকের এমন একটি পোষ্ট ভাইরাল হয়ে পড়ে। এতে শত শত ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ঘৃনা প্রকাশ করতে দেখা যায়। এর পরদিন ৭ জুলাই হৃদয় নিজে প্রধানমন্ত্রীর পদক পাচ্ছেন জানিয়ে সারাবাংলা ডট নেটের একটি লিংক পোষ্ট করে। পোষ্টে তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর পদক পাওয়ায় নাকি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এদিকে, ১৫ জুন সারাবাংলা ডট নেট ‘প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পদক পাচ্ছেন সাংবাদিক হৃদয়’ শীর্ষক সংবাদ জানাজানি হওয়ায় পর শ্রীমঙ্গলের সব শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। গাছ না লাগিয়েও একজন মাদকসেবীর প্রধানমন্ত্রীর পদক পাওয়ার ঘটনায় অনেকে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। সংবাদে ‘বৃক্ষ রোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় এ পুরষ্কারের জন্য তাকে মনোনীত করার কথা বলা হয়েছে। জানা গেছে এই পদক প্রদানের বিরুদ্ধে শহরের পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকার জনৈক কৃপেশ দত্ত এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। কৃপেশ দত্ত জানান, খোজঁ নিলে জানতে পারবেন, বৃক্ষরোপণে মৌলভীবাজার জেলা তথা শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হৃদয় দেব নাথ নামে কোন ব্যক্তির বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই। বৃক্ষপ্রেমী নয় বরং মাদকাসক্ত ও চাদাঁবাজ হিসেবে সে অধিক পরিচিত। শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার থানা পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে অবগত রয়েছেন। তিনি জানান, আমার আশংকা পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে ধুর্ত হৃদয় তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত করে থাকতে পারে। শ্রীমঙ্গলের শীতেশ দেব, বিকুল চক্রবর্তী, বেলাল মিয়া, বড়লেখার লেদু নার্সারি, আবুল কালামের মতো অনেক প্রকৃত বৃক্ষপ্রেমি রয়েছেন। মানবাধিকার কর্মী কৃপেশ ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, যারা কোন পুরষ্কারের আশা না করে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বনায়নে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। সমাজে এরাঁ অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে পরিচিত।
অথচ এদের বাদ দিয়ে বৃক্ষের সাথে যার বিন্দু মাত্র সম্পর্ক নেই এমন এক বিতর্কিত চিহ্নিত মাদকাসক্ত ও চাদাঁবাজকে প্রধানমন্ত্রীর মতো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা দেয়া মৌলভীবাজারের সাংবাদিক সমাজসহ আপামর জনসাধারণের জন্য অত্যন্ত দুঃখের, লজ্জার, বেদনার ও অবমাননার।