1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

পাঁচই সেপ্টেম্বর মরহুম অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের পনেরোতম মৃত্যোবার্ষিকীঃ এখনও স্মৃতিতে অ¤øানঃ শ্রদ্ধাঞ্জলিঃ স্মরন ও রুহের মাগফিরাত

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৬ বার পঠিত

। মুজিবুর রহমান মুজিব।
ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক “আলমে আরওয়া” থেকে হাসরের ময়দান পর্যন্ত মানবাত্বার ক্রম বিকাশের ধারায় একমাত্র “দুনিয়াবি” সময়টুকু ক্ষনস্থায়ী ও অনির্ধারিত। আমাদের ¯্রষ্ট্রাও প্রতি পালক মহান আল্লাহ তায়ালা আসমানী কিতাব আল কোরআনে বলেন “কুল্লীন নাফসীন জ্যায়িকাতুল মউত” জগতের সকল প্রানীকেই একদিন মৃত্যোর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। মহান আল্লাহর আইন অলংঘনিয়। অপরিবর্তনীয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কারো মৃত্যোই দুঃখ জনক। পরিনত বয়সের মৃত্যো হলেও মুর্দার স্বজনগন সহজ ভাবে মেনে নেন না, আকুল কান্নায় ব্যাকুল হন। আফসোস-আহাজারি করেন। কোন সাধারন মানুষের মৃত্যো নয়, একজন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতিয়াম জাতীয় ব্যক্তিত্বের অকাল না হলেও সড়ক দুর্ঘটনা জনিত কারনে আকস্মিক মৃত্যোকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট- মৌলভীবাজারে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুই হাজার নয় সালের পাঁচই সেপ্টেম্বর নিজ বাড়ী মৌলভীবাজারের বাহার মর্দান থেকে ঢাকাস্থ নিজ বাস ভবন গুলশানের “জলালাবাদ” ভবনে যাচ্ছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিশ্বস্থ ও ঘনিষ্ট সহচর, বাংলাদেশের সফল অর্থ ও পারিকল্পনা মন্ত্রী উন্নয়ন ও অগ্রগতির অগ্রদূত, বিনিয়োগের বরপুত্র আলহাজ্ব এম. সাইফুর রহমান। টেলিভিশনের “ব্রেকিং নিউজে” ঘন ঘন তাঁর মৃত্যো সংবাদ প্রচারিত হতে থাকে, দেশে বিদেশে সর্বত্র তার মৃত্যো সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল নামাজে জানাজার মাধ্যমে জেলা ও বিভাগ বাসি তাকে শেষ বিদায় জানান। মরহুমের প্রথম পুত্র জেলা সদরের সাবেক সাংসদ, জেলা বি,এন,পি-র সভাপতি এম. নাসের রহমান সদ্য প্রয়াত পিতার জন্য দোয়া কামনা করেন। স্মরনাতীত কালের মধ্যে বিশাল এই নামাজে জানাজা ও দোয়া শেষে গ্রামের বাড়ি বাহার মর্দানের পারিবারিক গুরুস্থানে মরহুমের প্রিয় পতিœ বেগম দুররে সামাদ রহমানের কবরের পাশে চীর শয়ানে শায়িত করা হয়। তাঁর শেষ বিদায়ে স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল উটে। বাহার মর্দানের শ্যামল মাটির কোমল বিছানায় তিনি চীর শয়ানে। তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ও চীর শয়ানের পর থেকে ইসলামি বিধান মোতাবেক তাঁর শুরু হয়েছে “আলম এ বরযক”-ই জীবন। মহান মালিক তাঁর “বরযক”-ই জীবর সুখ ও শান্তি ময় করুন, তাকে “জান্নাতুল ফেরদৌস” দান করুন তার পঞ্চদশ মৃত্যোবার্ষীকে এই মোনাজাত। দেশ ও জাতির কৃতি সন্তান এম. সাইফুর রহমান বৃটিশ ভারতে শেষ সময় ১৯৩১ সালের ৬ই অক্টোবর সদর উপজেলাধীন ঐতিহ্য বাহী বাহার মর্দান গ্রামে এক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর শিক্ষানুরাগি শিক্ষাবিদ পিতার নাম আব্দুল বাছির এবং মাতার নাম মোসাম্মত তালেবুন্নেছা। তার দুই ভ্রাতা মহামান্য হাই কোর্টের প্রয়াত বিচার পতি সিরাজুল ইসলাম এবং ব্যাংক ও বীমা বিশেষজ্ঞ মোঃ ফয়জুর রহমান। বাল্য কাল থেকেই বালক সাইফুর অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বাল্য কৈশোর কালে শিক্ষাবিদ পিতা আব্দুল বাছির এর আকস্মিক ও অকাল মৃত্যোতে দুঃখিনী জননী তালেবুন্নেছা সংসার পরিচালনা ও সন্তানদের উপযুক্ত লোখাপড়া নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়লে শিক্ষানুরাগি চাচা মোহাম্মদ সুফি আন্তরিকতার সাথৈই এগিয়ে এসে এতিম ভ্রাতাস্পুত্রদের শিক্ষার দায়িত্ব ভার নিয়ে পুত্র ¯েœহে দায়িত্ব পালন করেন। কৃতিছাত্র এম. সাইফুর রহমান কৃতিত্বের সাথে ১৯৫৯ সালে ইনিস্টাটিউঢ অব চাটার্ড একাউন্টেন্ট ইংলন্ড এন্ড ওয়েলস থেকে সি-এ ডিগ্রী অর্জন করে সফল শিক্ষা জীবনের অবসান ঘটান। উচ্চতর বেতন বহুবিদ সুযোগ সুবিধা বিলাস বাহুল বাংলো-বাড়ি-গাড়ির সুযোগ সুবিধা সমেত বহুজাতিক কোম্পানী পাকিস্তান অক্সিজেন লিঃ এ পরিচালক অর্থ হিসাবে যোগ দিয়ে মেধা ও মননে কর্ম্মস্পৃহা ও কর্ম্ম দক্ষতায় পারঙ্গঁমতা প্রদর্শণ করতঃ মুন্সিয়ানা ও প্রতিভার ছাপ রাখেন। উচ্চ পদে বিপুল অংকের চাকরি শান শওকত ও সামাজিক মান মার্য্যাদার মাঝেও বাঙ্গাঁলিদের প্রতি বিমাতা সলভ আচরনে মনোঃক্ষুন্ন হয়ে স্বেচ্ছায় এই লোভনীয় চাকুরিতে পদত্যাগ পত্র দিয়ে ১৯৬২ সালে দুই সহকর্মিকে নিয়ে গঠন করেন সি/এ ফার্ম রহমান-রহমান-হক এন্ড কোম্পানী। যা পরবর্তী কালে সমগ্র পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশ আমলেও প্রথম কাতারের সি/এ ফার্ম হিসাবে খ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জন করে। বৈচিত্রময় পেশাগত জীবনে তিনি খ্যাতি ও স্বীকৃতির শিখরে আপোহন করে ছিলেন। ১৯৬০ সালে করাচির জীবনে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন চট্রগ্রামের এক অভিজ্ঞাত খান্দানী পরিবারের কৃতি কন্যা বেগ দুররে সামাদ এর সাথে। কনের পিতা তৎকালীন ষ্টেট ব্যাংক ব্যাংক অব পাকিস্তান পেশেয়ার শাখার ব্যবস্থাপক জনাব বি,এস, চৌধুরী। সাইফুর-দুরের সামাদ রহমানের দাম্পত্য জীবন ছিল সুখময়। প্রেমময়। এই দম্পতির সন্তান চতুষ্টয় হলেন ১। এম. নাসের রহমান, ২। এম. কাইসার রহমান, ৩। এম. সফিউর রহমান, ৪। সাইফা রহমান। মহান আল্লাহর দান সন্তান চতুষ্টয় উচ্চ শিক্ষিত। কর্ম্ম জীবনে সু –প্রতিষ্টিত। মরহুমেন প্রথম পুত্র এম. নাসের রহমান পিতার পদাংক অনুসরন করে শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসাবে বি,এন,পি-তে যোগদান করে জেলা সদর থেকে সাংসদ এবং কৃতিত্বের সাথে শক্ত হাতে জেলা বি,এন,পি-র সভাপতির দায়িত্ব ভার পালন করছেন। পঁচাত্তোরের পনেরোই আগষ্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের আভ্যন্তরিন কলহ কোন্দল শেখ মুজিব মন্ত্রী সভার প্রভাবশালী মন্ত্রী খন্দকার মোস্তাক আহমদ এর মোনাফেকিতে এক ব্যর্থ আংশিক সেনা অভ্যত্থানের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যাকরে বঙ্গঁবন্ধুর আজীবনের বন্ধু আওয়ামী লীগ এর প্রতিষ্টাকালীন প্রভাব শালী নেতা খন্দকার মুশতাক আহমদ নিজেকে দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে পনোরো-ই আগষ্টের “সারথী” হিসাবে ঘোষনা করেন, গঠন করেন নিজ দল “ডেমক্রেটিক লীগ”। সাত-ই নবেম্বর সিপাহী বিদ্রোহ, তেছরা নবেম্বরের জেল হত্যা বাংলাদেশের প্রশাসন জন জীবনে অস্থিরতা দেখা দেয়। সিপাহী বিপ্লবে মুক্ত মানব জেনারেল জিয়া বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সেনা প্রধানের দায়িত্বভার নিয়ে সেনাবাহিনীতে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনেন, আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ধারাবাহিক ভাবে পর্য্যায় ক্রমে জেনারেল জিয়া দেশের রাষ্ট্র পতির দায়িত্ব ভার নিয়ে প্রশাসন ও জন জীবনে শান্তি শৃংখলা ও স্বস্থি এনেদেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া তার ঐতিহাসিক ১৯ দফা কর্ম্ম সূচী ও উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতিতে দেশের জ্ঞানীগুনীদের সমাবেশ করেন। তাঁর ক্যেবিনেট ট্যেলেন্টেড কেবিনেট হিসাবে দেশে বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করে। সফল রাষ্ট্র নায়ক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর আহŸানে সাচ্চা জাতীয়তাবাদী, আজীবন রাজনীতি সচেতন ও রাজনীতি মনস্ক সৎ মানুষ- মহৎ মানুষ এম. সাইফুর রহমান ধর্মীয় মূল্যবোধ ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতির অনুসারি সমর্থক হিসাবে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করেন। আজীবন পেশাদারি ও চাদ্দরি রাজনীতিবিদ না হলেও তিনি কখনও রাজনীতি বিমুখ ছিলেন না বরং ছিলেন রাজনীতি মনস্ক ও গনমুখী। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র এম. সাইফুর রহমান ভাষা আন্দোলনের সমর্থক হিসাবে সক্রিয় ভাবে ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহন করেছেন, গ্রেপ্তার হয়ে কারা যাতনা ভোগ করেছেন, কতৃপক্ষের কাছে আত্মসর্ম্পন করতঃ মুচলেকা দিয়ে মুক্তি চান নি, আইনী লড়াই করে আইনের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করেছেন। “জাগদল” গঠনের প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি দায়িত্ব ও নেতৃত্বে ছিলেন। একজন সংঘটক হিসাবে সমগ্র সিলেট বিভাগের দায়িত্ব ছিলেন তিনি। দেশীয় রাজনৈতিক সংকট ও শূন্যতা পূরনের জন্য বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্য বোধের অনুসারিদের নিয়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বি,এন,পি গঠিত হলে এম. সাইফুর রহমান স্থায়ী কমিটির প্রভাব শালী সদস্য নির্ব্বাচিত হন। আমৃত্যো তিন এই দায়িত্বে থেকেছেন সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ৮২ সালে সেনাপ্রধান লেঃ জেনারেল এইচ.এম.এর্শাদ এক সেনা অভ্যোত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ কায়েম করে বি,এন,পি সরকারকে হটিয়ে বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখল করেন। মন্ত্রী সভায় যোগদানের চাপ দিলে তিনি ঘৃনা ভরে তা প্রত্যাখান করতঃ কারাযাতনা ভোগ করেছেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে ও তিনি সফলও সার্থক। সমগ্র সিলেট বিভাগে তিনি একাই দলকে সংঘটিত সু-সংঘটিত করেছেন। বিভিন্ন জেলায় বিভাগে একটি রাজনৈতিক দলে একাধিক নেতা থাকলেও সমগ্র বৃহত্তর সিলেটে এম. সাইফুর রহমান ছিলেন একাই একশ। তার ¯েœহ ধন্য সহ-কর্মি কর্মি-সংঘটকগনকে তিনি সন্তান সহোদরের মত ¯েœহ মমতা করতেন। নেতা নিয়ম নীতি হিসাবে তিনি যেমনি ছিলেন নীতিবান, নিষ্টাবান, আদর্শ বাদী ও নিয়ম নীতির অনুসারি, ঠিকতে মনি মায়ায় মমতায় নেতা হিসাবে ছিলেন পিতার মত কোমল ¯েœহময়। মন্ত্রী হিসাবে ও এম. সাইফুর রহমান ছিলেন সফল। সার্থক। ব্যতিক্রমি। ৭৬ সালের ২৬ শে ডিসেম্বর রাষ্ট্র পতি এ.এস.এম সায়েমের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য হিসাবে তার মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব প্রাপ্তি শুভ সূচনা। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়ার মন্ত্রী সভায় বানিজ্য মন্ত্রী এবং ৮০ সালে অর্থ মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মন্ত্রী সভায় অর্থ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন কালে এম. সাইফুর রহমান স্বৈরাচার বিধ্বস্থ অর্থনীতিকে পূর্নঘটন ও দেশীয় অর্থ নৈতিক উন্নয়নে কৃতিত্ব পূর্ন ভূমিকা রাখেন। এ সময় তিনি বিশ্ব ব্যাংক এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বহিবিশ্বে বাংলাদেশের মর্য্যাদা ও ভাব মূর্তি বৃদ্ধি করেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার আমলে অর্থ মন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান অর্থের সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সমগ্র বৃহত্তর সিলেটের উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেন। আমার প্রতি তার বিশ্বাস ও মায়া মমতার কারনে একটি রাষ্ট্রায়াও বানিজ্যিক ব্যাংক এর পরিচালক এবং নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পাই, জাতীয় পর্যায়ে বৃহত্তর পরিসরে কাজ করার সুযোগ হয়। ইতিপূর্বে নব্বইর দশকে তিনি আমাকে এ জেলার পাবলিক প্রসিকিউটার নিয়োগ করিয়ে দিয়েছিলেন। আমি সততা ও সুনামের সাথে দৈনিক কয়েক’শ টাকা এবং মাসিক মাত্র এক হাজার টাকা ভাতায় দায়িত্ব পালন করে তার প্রশংসা প্রাপ্ত হয়েছিলাম। দুই হাজার এক সালে আমাদের দল সরকার গঠন করলে আমি পি,পি, জি,পি কিংবা কিছু হতে চাই নি। তিনি এবং তার পতিœ বেগম দুরের সামাদ রহমান আমাকে পুত্র বৎ¯েœহ মমতা করতেন। আমাদের এই ¯েœহ ময়ীজননী ও এখন কবর বাসি। মহান আল্লাহ তার ও বেহেশত নসীব করুন। একটি রাষ্টায়াত্ব বানিজ্যিক ব্যাংক এর পরিচালক অতঃপর নির্বাহী কমিটির চেয়ার‌্যমান নির্ব্বাচিত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক অঙ্গঁনকে কাছে থেকে দেখার, কাজ করার সুযোগ পাই। তখন মৎ সম্পাদিত রাজীনতি ও রম্য মেগাজিন দর্পন অনিয়মিত ভাবে হলেও বের হত। কেয়ার টেকার সরকারামলে পত্রিকাটির ডিকলারেশন বাতিল করে দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অর্থ নীতিবিদ এম. সাইফুর রহমান একজন আদর্শ শিক্ষকের মত আমাকে মানি মার্কেট, মানিলন্ডারিং, হুন্ডি ব্যাংকিং চ্যেনেল ইত্যাদি বিষয়ে দিকে নির্দেশনা দিতেন ঠিক তেমনি আমি পাঁচ বৎসর ব্যাপী “চেক হুন্ডি-ইউজ ব্যাংকিং চ্যেনেল বিষয়ক” সেমিনার ওয়ার্কশপ করেছি- ভাষন দিয়েছি, পত্র পত্রিকায় ছুটিয়ে কলাম লিখেছি, পাঠক প্রিয়তা পেয়েছি। টাকার চেয়ার বসেও কমিশন খাই নি, ঋন খেলাপিদের সঙ্গেঁ আতাত করে ঘুষ, উৎকোচ, হারামের টাকা নিয়ে বাটাবাটি করি নি, মাসিক মাত্র চার হাজার টাকা ভাতা নিয়ে সততা ও ইমানদারির সাথে দায়িত্ব পালন করেছি, তাঁর সঙ্গেঁ বিশ্বাস ঘাতকতা ও বেঈমানি করিনি। তাঁর ¯েœহ ভাজন বিশ্বস্থ ও কাছের লোক হয়েও চান্দাবাজি-ধান্দাবাজি করিনি হারাম খাই নি। ব্যাংকিং সেক্টারে পাঁচ বৎসর কাজ করে দেখেছি- দেশীয় অর্থ নীতি ছিল তাঁর নখ দর্পনে, মন্ত্রনালয় ছিল তাঁর পুর্ন নিয়ন্ত্রনে। চুন থেকে পান খসার কোন উপায় ছিল না। পিয়ন থেকে সচিব পর্যন্ত সকলেই ছিলেন সজাগ। সতর্ক। তাঁর কার্য্যকালে ব্যাংকিং সেক্টার মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রনে ছিল। শেয়ার বাজার চাঙ্গাাঁছিল। মুদ্রা স্ফীতি ছিল না হুন্ডি ছিল না। ব্যাংকিং চ্যেনেল গুলি সক্রিয় ছিল। অথছ বিগত দেড় দশক টানা আওয়ামী দূঃশাসন ও নিষ্টুর স্বৈর শাসনামলে ব্যাংকিং সেক্টার শেয়ার বাজার লুন্ঠিত। ব্যাংকিং সেক্টার ও মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রনহীন হুন্ডিবাজ-মুদ্রাপাচারকারীদের উদ্ভিন্ন উল্লাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপর্য্যস্থ। বিধ্বস্থ। বিগত পতিত সরকার ব্যাংক শেয়ার বাজার লুন্ঠন করে ও জাতিকে লক্ষ কোটি টাকা ঋন গ্রস্থ করে গেছে দেশীয় অর্থনীতির এই চড়ান্ত হযবরল অবস্থার মাঝে তার মত একজন সৎ নিষ্টাবান প্রজ্ঞা, পন্ডিতের খুব প্রয়োজন ছিল। দেশীয় অর্থনৈতিক অঙ্গঁনে যেকজন প্রজ্ঞা পন্ডিত বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ আছেন, এরা সকলেই তার সহকর্মি ছিলেন।
রাজনীতিবিদ হিসাবে মানুষ এম, সাইফুর রহমান ছিলেন একান্ত মানবিক একজন মিঃ ক্লিন। রাজনীতির কালিমা, কলংক ও মালিন্য তাঁকে স্পর্শ করতে পারে নি। সহজ সরল সাদা মনের মহত মানুষ সৎ মানুষ এম, সাইফুর রহমানের সফেদ পাঞ্জাবি তার সাদা মনের মতই ছিল ধবধবে সফেদ সাদা সাফ্ফান সাফফা। “স্পীড মানি” ঘুষ, উৎকোচ, দূর্নীতি, স্বজন প্রীতির কোন কলঙ্খ নেই- কালিমা নেই। তাঁকে ঘিরে কোন দূর্নীতিবাজ ধান্দাবাজ চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেনি, তিনি উঠতে দেন নি। ভাষা সৈনিক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে বিশ্বস্থ ও ঘনিষ্ট সহচর, “জাগদল” ও বি,এন,পি-র প্রতিষ্টাকালীন প্রভাব শালী নেতা, বি,এন,পি-র সকল সরকারামলের প্রভাব শালী মন্ত্রী, “এক-নেক” এর বিকল্প চেয়ারম্যান এবং তাঁর প্রজ্ঞা ও পান্ডিত্য, মেধাও মনন, শিষ্টাচার ও সৌজন্য বোধের কারনে বি,এ,পি-র সফল সরকারামলে তাঁর একটা শক্ত অবস্থান ছিল। প্রধান মন্ত্রী দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁকে সম্মান করতেন। তিনি মেধাহীন চাপা ও গলাবাজ ভোটার বিহিন মন্ত্রীদের মত আমলা তন্ত্রের বেড়াজালে বন্দী ছিলেন না, বরং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্ম্মকর্তাগন সচিব পর্যন্ত তাকে সমীহ করতেন, ধান্দাবাজ মতলব বাজ, দূর্নীতিবাজ সরকারি কর্ম্মকর্তাগন তাঁর ভয়ে তটস্থ থাকতেন। কখন কোথায় ধান্দাবাজিতে তাঁর কাছে ধরাপড়ে যাবেন। দূনীতিবাজ, অযোগ্যগনকে তিনি পছন্দ করতেন না, কাকে দিয়ে কোন কাজটি হবে কিংবা কে কোন কাজ করতে পারবে তিনি তা যান তেন। বলা বলিতে তিনি ছিলেন সত্যবাদি ও স্পষ্টবাদি। রাজনীতি প্রশাসনের ও প্রশাসনে এত উচ্চ পদও অবস্থানে থেকে সত্য কথনেও সত্য বলেনে তিনি অতুনলীয়। মরহুম অর্থ মন্ত্রী এ,এম,এ মুহিত শেয়ার বাজার কেলেংকারীর রিপোর্ট, ব্যাংকার ইব্রাহিম খালেদের রিপোর্ট জাতির কাছে উপস্থাপন করতে পারেন নি নাম বলেন নি, বলেছেন এরা অত্যন্ত পাওয়ার ফুল ক্ষমতাবান। এদের নাম বলা যাবে না, অতছ সমগ্র দেশও জাতি যানেন ব্যাংকিং সেক্টারে কে লুন্ঠন ও মুদ্রাপাচারকারী, “ওল্ড গোন্ডা, জাতির কাছে কথিত দরবেশ সত্যিকার অর্থে অর্থ নৈতিক সেক্টারের এক নম্বর স্থল দস্যু সুফিসদৃশ সালমান এফ রহমান। তার এমন বুকের পাটাও সৎ সাহস আছে তিনি তা নির্দ্বিধায় লুন্ঠনকারীর নামটি বলতেন। প্রসঙ্গঁত দূঃখও দূর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করতে হয়, না করলে সত্য প্রকাশ হয় না, মিডিয়া মারফত দেশও জাতি দেখেছেন পতিত ও পলাতক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব শালী উপদেষ্টা শিল্পপতি সালমান এফ রহমান সহযোগী সাবেক আইন মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক সহ আত্বগোপনে থেকে নদী পথে পালিয়ে যাবার পথে সদর ঘাট এলাকায় জনতা কর্তৃক ধৃত হয়ে গনরোশ-গনধোলাইর সম্মুখীন হন। ছবিতে টিভিতে দেখা গেল কথিত দরবেশ সুফি সদৃশ সালমান এফ রহমানের সফেদ সাদা বিশাল চুল দাড়ি নেই, কর্তন করে কালো রং ব্যবহার করেও রেহাই পান নি, আল্লাহর বিচার আল্লায় করেছেন। উভয়ে বর্তমানে জেল হাজতে আছেন। বিচারের সম্মুখান হবেন। ব্যক্তি গত ভাবে আমি ব্যক্তি এম. সাইফুর রহমান এবং তাঁর সহ ধর্মীনি বেগম দবরে সামাদ রহমানের কাছে ঋণী। এ ঋন অপরিশোধ্য। আমি পিতৃ-মাতৃহীন একজন এতিম এছির। বাল্য কৈশোর কালে হোষ্টেলে হলে থেকে ছাত্র জীবন কাটিয়েছি। পিতৃ-মাতৃ ¯েœহ পাইনি। বয়স কালে ও শিক্ষা জীবন শেষে জীবনের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী পেশা ও কর্ম্মজীবনে প্রবেশ করে আয়রোজগার করতঃ সংসার ধর্ম পালন ও সংসার পরিচালনার কথা। পিতা মাতার প্রথম সন্তান হলেও তাদের পক্ষ থেকে আমার কাছে আমার উপর দাবী ছিল না, শুধু মাত্র লেখা পড়া শেষ করে মানুষের মত মানুষ হওয়া ছাড়া। পারিবারিক ভাবে স্বচ্ছলতা থাকায় আমার পিতা আমাকে তাঁর ভাষায় সসিয়্যালওয়ার্ক দেশের কাজে উৎসর্গ করে ছিলেন। একাত্তোরের ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে মাষ্টার্স ফাইন্যাল ফেলে মুক্তিযুদ্ধে যুগ দেই। স্বাধীনতা উত্তর কালে একজন স্বপ্নবাজ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সুখী সম্বৃদ্ধশালী বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষে দেশের প্রথম বিরোধী দল জাসদে যোগ দেই। এ ব্যাপারে আমাকে অনুপ্রনিত করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনৈতিক তাত্বিক সিরাজুল আলম খাঁন এবং বাংলার মেহেনতি মানুষের কন্ঠস্বর আশম রব। সেই ঘোড়ায় লাগাম টেনে ছিলেন রাজনীতি ও অর্থনৈতিক শিক্ষক এম. সাইফুর রহমান। বাল্য কৌশোরে পিতার হাত ধরে কোন দিনই ঈদের জামাতে, খেলায়, মেলায় যাবার সময় ও সুযোগ হয় নি। জননেতা এম. সাইফুর রহমান এর পিছু পিছু তার একজন কর্মি (সহকর্মি নয়) হিসাবে সিলেট-হবিগঞ্জে গেলে তৃপ্তি পেয়েছি, মনে হত পিতার সান্যিধ্য লাভ করছি। জীবনের সকল ক্ষেত্রে চাকরি, বিবাহ, ব্যবসা, রাজনীতি, মন্ত্রীত্ব পারিবারিক জীবন সকল ক্ষেত্রে ঈর্ষনীয় সাফল্য এলেও ক্ষমতাও প্রাপ্তির শীর্ষ বিন্দুতে আরোহন করলেও তার মধ্যে কোন অহংকার কিংবা অহংবোধ কি হনুরে ভাব ছিল না, বরং তিনি ছিলেন বিনয়ী, বন্ধু বৎসল, কর্ম্মি বৎসল। আমি লক্ষ করেছি এতিম এম. সাইফুর রহমান এর ভাষা ভাষা দু’চোখে এক রাশি অব্যক্ত বেদনা ছিল। সে বেদনার ভাষা আমি অনুধাবন করতে পারি নি, অনুধাবন করার ক্ষমতাও আমার ছিল না। রাজনীতি গত ভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহকর্মি হিসাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বি,এন,পি-ই ছিল তাঁর শেষ ঠিকানা। যদিও প্রফেসর ডা. একিউএম, বদরুদ্দোজা চৌধুরী কে এম. ওবায়দুর রহমান, কর্নেল অলি আহমদ বি,বি প্রমুখ প্রতিষ্টাকালীন নেতা দল ত্যাগী হয়েছেন কিন্তু জননেতা এম. সাইফুর রহমান তা করেন নি। ৫ই সেপ্টেম্বর মরহুমের মৃতে্যুা বার্ষিকীতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে তার প্রথম পুত্র সাবেক সাংসদ ও জেলা এন,পি-র সংগ্রামী সভাপতি এম. নাসের রহমান স্মরন সভা, মিলাদ, শিরনীর আয়োজন করে থাকেন। বৃহত্তর সিলেটের জিয়ার সৈনিকগন মরহুমের কবর জিয়ারত পুস্পস্তবক প্রদান করতঃ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। গ্রামের বাড়ি বাহার মর্দানে সিলেট বিভাগীয় বি,এন,পি ও অঙ্গঁ সংগঠন সমূহের নেতা কর্ম্মিদের মিলান মেলা বসে। আমার পক্ষ থেকে তিনি যে কোর্ট মসজিদে নামাজ আদায় করতেন, রমজানে আমাদের সঙ্গেঁ ইফতার করতেন, সেখানে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, জেলা আইনজীবী সমিতির তিন নম্বর ভবন যা তারই উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল সেখানেও মিলাদ দোয়া ও শিরীন বিতরন করি। বি,এন,পি ও অঙ্গঁ সংগঠন সমূহ এবং শহীদ জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের পক্ষ থেকেও অনুরুপ কর্ম্ম সূচী নেয়া হয়েছে। বিভাগে সর্ব্বত্র যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাব গম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হবে জন নেতা এম. সাইফুর রহমানের পঞ্চদশ মৃত্যো বার্ষিকি। বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী প্রতিভা বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বলে ছিলেন “মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভূবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই”। কবি গুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের বেঁচে থাকার এই আকুল আকাংখা শরীরিক ছিল না, ছিল কাব্যিক। কার্য্যকি। কবি গুরু আজও বেঁচে আচেন তার গানেও কবিতায়। মানুষ এম. সাইফুর রহমান ও মৃত্যোবরন করেছেন পনেরো বছর হল। তিনি জন্ম ও পিতৃভূমি ঐতিহ্য বাহী বাহার মর্দান গ্রামের পারিবারিক কবর স্থানে চীর শয়ানে। তাঁর কবরের মাটি পুরাতন হয়ে গেছে। গজিয়েছে অনেক ঘাস-সবুজ লতাপাতা হয়ত ফুটেছে ফুটবেত আকর্ষনীয় ঘাসফুল। লতাপাতা ঘাস ঘাসফুল মায়ায় মমতায় জড়িয়ে আছে পাকা কবর গাহটি। তাঁর কবরের মাটি শুকিয়ে কবরটি পুরাতন হয়ে গেলেও তিনি আছেন আমাদের অন্তরে। অনুভবে। চিন্তায়। চেতনায়। সর্ব্বজন শ্রদ্ধেয় সহজ সরল সাদা মনের মহৎ মানুষ সৎ মানুষ এম. সাইফুর রহমানের উজ্জল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
[মরহুমের ¯েœহ ধন্য কর্মি। মুক্তিযোদ্ধা। সাবেক পরিচালক ও চেয়ারম্যান নির্বাহী কমিটি-বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিঃ ঢাকা। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।]

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..