1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০০ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

গ্যাস সংকটে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৫ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট :: সপ্তাহখানেক ধরে বিদ্যুৎ সংকট চলছেই, এবং এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। গ্যাস সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদিত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎও পাওয়া যাচ্ছে না, যার কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে এবং সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় ১ হাজার ৮৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। গত রোববার গড়ে ১ হাজার ২৯১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিং হয়েছিল।

মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। গ্যাস সংকটে দেশে ৬ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বিদ্যুতে প্রতিদিন গড়ে ৮৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, যা এপ্রিলে ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। পেট্রোবাংলা প্রতিদিন ২৫৯ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে।

জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে। ত্রিপুরা থেকে ঘণ্টায় ১৬০ মেগাওয়াটের পরিবর্তে ৬০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা থাকলেও মিলছে ৮৮০ মেগাওয়াট। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ৪০০ মেগাওয়াট কম আসছে।

পিজিসিবির তথ্যানুসারে, গতকাল বেলা ৩টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট, আর উৎপাদন হয়েছিল ১২ হাজার ৭৮৮ মেগাওয়াট। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের কাছে ভারতের ৫ বিদ্যুৎ কোম্পানির প্রায় ১০০ কোটি ডলার পাওনা রয়েছে। এই বকেয়ার মধ্যে আদানি পাওয়ার পাবে প্রায় ৮০ কোটি ডলার। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহীরা বলেছেন, বকেয়া থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে, কিন্তু সতর্ক করে বলেছেন যে, এই অবস্থা অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না।

কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে, যা সেচ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে। শহরের মজিদা কলেজ মোড়ের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানান, ‘সকাল থেকে বিদ্যুৎ গেছে চারবার। ছবি তোলা ও প্রিন্টের কাজ করতে পারছি না, ক্রেতারা চলে যাচ্ছে।’ পুরাতন থানাপাড়ার রুমা রানী মোহন্ত বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনে তুলনায় রাতে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানায়, বানিয়াচং উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট, আর পাওয়া যাচ্ছে ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াট। উপজেলার নন্দীপাড়ার মহিনুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উত্তরের ১৬ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, কিন্তু দুই দিন ধরে সরবরাহ হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। রংপুর বিভাগের আট জেলায় চাহিদা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াটের কম বিদ্যুৎ।

রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সরবরাহ কম থাকায় বিদ্যুৎ বিভাগ ঘন ঘন লোডশেডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বগুড়া শহরের রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ঠিকমতো বেচাবিক্রি করা যাচ্ছে না, আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’ নেসকো সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় বিদ্যুতের চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট, আর জাতীয় গ্রিড থেকে মিলছে ৫০ থেকে ৬০ মেগাওয়াট।

নীলফামারীতে লোডশেডিংয়ে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ছোট উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন এবং লো-ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। ঢেলাপীরের কাদিখোল এলাকার ইকু জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম জানান, তার কারখানা থেকে পণ্য রফতানি হয় ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে। দেড় মাস ধরে লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে গেছে, ফলে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকার দুই বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকোর তথ্যানুসারে, গতকাল ঢাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৪০০ মেগাওয়াট। পরিস্থিতি সামলাতে ডেসকোকে অঞ্চলভেদে ৩ থেকে ৪ বার লোডশেডিং করতে হয়েছে, আর ডিপিডিসির এলাকায় দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং হয়েছে। সেগুনবাগিচার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন জানান, গতকাল দুপুর পর্যন্ত দুইবার বিদ্যুৎ গেছে, একবার এক ঘণ্টা আরেকবার দেড় ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ ছিল না। মিরপুরের বাসিন্দা সোনিয়া ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘একটু পরপর লোডশেডিং না দিয়ে একটা দিলেই ভালো হয়।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..