শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : অভিনেত্রী কুসুম শিকদার। অভিনয় ছাড়াও তার পরিচিতি রয়েছে মডেল, গায়িকা এমনকি লেখক হিসেবেও। নির্মাতা হিসেবে তিনি যে নাম লিখিয়েছেন এ তথ্য অনেকেরই কম-বেশি জানা। তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘শরতের জবা’ ইতোমধ্যে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। এরপর থেকেই সিনেমার মুক্তির তারিখ জানার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন দর্শক-ভক্তরা। সেপ্টেম্বরে এর মুক্তির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এটি পিছিয়েছে। অবশেষে সিনেমাটি দুর্গাপূজায় মুক্তি পাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিনেমার মুক্তি প্রসঙ্গে কুসুম বলেন, ‘অনেক যত্ন করে সিনেমাটি বানিয়েছি। চাইলেই এটি আমি তিন মাসে নির্মাণ করতে পারতাম। প্রায় এক বছর সময় নিয়ে তৈরি করেছি। আমি চাইছিলাম, আমার প্রথম সিনেমাটি দর্শক দেখুক। এ কারণে একটি উৎসবের সময় খুঁজছিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুর্গাপূজার উৎসবে অর্থাৎ অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এটি দর্শক দেখতে পাবেন।’
অভিনেত্রীর লেখা ‘অজাগতিক ছায়া’ গল্পগ্রন্থে ‘শরতের জবা’ নামে একটি ছোটগল্প আছে। সেই গল্প থেকেই সিনেমার নামকরণ করা হয়েছে ‘শরতের জবা’। শুধু প্রযোজনাই নয়, সিনেমার চিত্রনাট্য, পরিচালনার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রেও অভিনয় করেছেন কুসুম। কিছুদিনের মধ্যেই সিনেমার প্রচারণা শুরু করবেন তিনি। সিনেমার পুরো শুটিং করেছেন নড়াইল জেলায়।
এই অভিনেত্রী-নির্মাতা বলেন, ‘সিনেমার সব কিছুর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থেকে কাজটি করেছি। চিত্রনাট্য করেছি, সম্পাদনা, কালার গ্রেডিং, সাউন্ড ডিজাইন থেকে শুরু করে সব নিজে থেকে করেছি। শুধু অভিনয় শেখা ছিল, বাকিটা শেখা ছিল না। কাজগুলো যেমন আনন্দের আবার কষ্টেরও। অনেক কিছু শিখছি। অভিনেত্রী হিসেবে এসব অভিজ্ঞতা নতুন এবং পরিচালক হিসেবে কাজটি ছিল চ্যালেঞ্জিং। তবে উপভোগও করছি।’ সিনেমায় কুসুম শিকদারের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান। প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেছেন তারা।
পরিচালক এবং প্রযোজক হওয়ার অনুভ‚তিও জানান কুসুম। বলেন, ‘অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। সেই ২০০২ সাল থেকে ক্যামেরার সামনে কাজ করছি। অভিনয়েই অভ্যস্ত আমি। কিন্তু পরিচালনার ইচ্ছাও ছিল মনে। পরিচালক হয়ে খুব উপভোগ করেছি শুটিংয়ের পুরো সময়টা। কিন্তু চ্যালেঞ্জিং ছিল প্রযোজনা। এত বড় টিম, তাদের থাকা-খাওয়া, শুটিং, এমনকি টাকা-পয়সার বিষয়টাও একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হয়েছে।’
গত পাঁচ বছর কেন কাজ করেননি এ ব্যাপারে কুসুম শিকদার বলেন, ‘ভাবলাম একটানা অনেক বছর তো কাজ করলাম। এবার একটু বিরতি নেই। কারণ এখন আর আগের মতো একটানা এক-দুই মাস কাজ করার ইচ্ছা নেই। তারপর থেকেই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’
তবে প্রস্তাব যে আসেনি তা নয়। ওটিটি থেকেও প্রস্তাব পেয়েছেন কুসুম। অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রচুর প্রস্তাব পেয়েছি। নানা ধরনের গল্প, চরিত্র। কখনো থ্রিলার, কখনো মিস্টিরিয়াস- বিভিন্ন ভেরিয়েশনের ক্যারেক্টার। কিন্তু যেহেতু বিরতিতে ছিলাম, তাই কোনো কাজ হাতে নেইনি। এখনো সুযোগ আছে, দেখা যাক।’
অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও কুসুম বেশ আগে ‘মরীচিকা মায়া’ শিরোনামে নতুন একটি গান গেয়েছেন। পাশাপাশি তাকে মডেল হিসেবেও দেখা যাবে এ গানে। এতে তার সহশিল্পী কাজী সাকিব। গানটি যৌথভাবে লিখেছেন কুসুম শিকদার ও সন্ধি। সুর ও সংগীত সন্ধির। এটি নির্মাণ করেছেন রায়হান খান। অনেক আগেই তো ‘মরীচিকা মায়া’র কাজ শেষ হয়েছে।
গানটি প্রকাশে এত বিলম্ব কেন জানতে চাইলে কুসুম আরও বলেন, ‘নানা ব্যস্ততায় ‘মরীচিকা মায়া’ গানটি প্রকাশ করতে পারিনি। দর্শক-শ্রোতাদের মতো আমিও অপেক্ষা করছি গানটির জন্য। সিনেমার ঢঙেই ধারণ হয়েছে সাড়ে ৮ মিনিটের মিউজিক্যাল ফিল্মটি। আশা করছি, ‘শরতের জবা’ মুক্তির পরপরই গানের ভিডিওটি মুক্তি পাবে বলে আশা করছি।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয় কুসুমের প্রথম একক অ্যালবাম ‘তুমি আজ কতো দূরে’। ২০০০ সালে মিক্সড অ্যালবাম ‘জীবনের যত পাওয়া’ এবং ২০০১ সালে ‘অদল বদল’-এ কণ্ঠ দেন তিনি। এরপর ২০০২ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর একের পর এক নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করতে থাকেন কুসুম শিকদার। অভিনয় করেন তিনটি সিনেমায়ও। ‘লাল টিপ’, ‘গহীনে শব্দ’ ও ‘শঙ্খচিল’। শেষ সিনেমার জন্য ২০১৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান। তবে অনেক দিন ধরে মিডিয়া বাইরে ছিলেন তিনি।