1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৬ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

সীমান্তবর্তী উপজেলার পৃথিমপাশা, হাজীপুর,শরীফপুর,কর্মধা ইউনিয়নে সক্রিয় চোরাকারবারিরা

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২২৩ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে চোরাকারবারি ও অনুপ্রবেশকারীদের তৎপরতা। এর মাঝে উপজেলার পৃথিমপাশা, হাজীপুর,শরীফপুর,কর্মধা,রবির বাজারের আশপাশের এলাকাগুলোতে এই অবৈধ তৎপরতা সবচেয়ে বেশি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রের তথ্য মতে, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের পাদদেশে অবস্থিত এসব সীমান্তবর্তী এলাকায় উভয় দেশের বাসিন্দাদের ফসলি জমি রয়েছে। এমন প্রান্তিক এলাকাগুলোকেই নিজেদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করে চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা। সীমান্ত পথে আসা অবৈধ মাদক প্রধানত উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভারতের ভিসা না পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেকেই সীমান্তবর্তী এসব এলাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে যা বেড়েই চলেছে।

জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্মধা,পৃথিমপাশা এবং শরীফপুর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তের ১৮৪২থেকে ১৮৫১নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান হয়ে আসছে। বর্তমানে ভিসা জটিলতার কারণে ভারতে অবস্থানরত অনেক বাংলাদেশি এসব এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা এক্ষেত্রে দালাল হিসেবে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠলেও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রাণ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না। এমনকি তাদের ব্যাপারে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের কাছে তথ্য দিলেও রয়েছে বিপদের আশঙ্কা।

সূত্রে জানায়, পৃথিমপাশা, কর্মধা ও শরীফপুরের বিভিন্ন গ্রাম বিদেশি মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজার মতো মাদক পাচারের হটস্পট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া অবৈধভাবে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, পোশাক, মোটরযানের টায়ার-টিউব আনা হচ্ছে বাংলাদেশে। সেই সঙ্গে মাত্র ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে এসব চক্রের সদস্যরা অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্ত পার করে দেওয়ার কাজও করছেন।

কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গভীর পাহাড়ি অঞ্চল ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মনু নদীর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এসব এলাকা বেশ দুর্গম। যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সার্বক্ষণিক সীমান্তে নজরদারি চালাতে পারছেন না সীমান্তরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই সুযোগটাই নিচ্ছে চোরাকারবারিরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, রবির বাজার ও এর সীমান্তবর্তী সড়ক দিয়ে প্রায়ই দেখা যায় সন্দেহভাজন যানবাহনের চলাফেরা। রাত যত বাড়তে থাকে তাদের চলাচলও বাড়ে।

সীমান্তবর্তী এসব এলাকায় চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ ত্যৎপরতার চিত্র দৃশ্যমান হয় সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনায়। ২২ সেপ্টেম্বর পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় এক বাংলাদেশিকে আটক করে বিজিবি। তিনি পৃথিমপাশা ইউনিয়নের গণকিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর জুড়ীর স্কুলশিক্ষার্থী স্বর্ণা দাস কুলাউড়া উপজেলার লালারচক সীমান্ত দিয়ে মায়ের সঙ্গে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। জানা গেছে, অর্থের বিনিময়ে চোরাকারবারিরা স্বর্ণা ও তার মাসহ ১০ জনকে ভারতে অনুপ্রবেশের সহায়তা দেয়। চলতি বছরের ১৭ মার্চ পৃথিমপাশার শিকড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মুরইছড়া বস্তি এলাকার কিশোর সাদ্দাম নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন বাংলাদেশের টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা মো. সাহিদ ও মানিকগঞ্জের আকলিমা বেগম। আটক ব্যক্তিদের কাছে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ১৮৪৬ নম্বর সীমানা পিলার এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তারা।

পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম জিমিউর রহমান চৌধুরী, কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ ও শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে মাদক ও অবৈধ পণ্য পাচার চলছে অবাধে। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মাসিক সভা ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। অবৈধ তৎপরতা ঠেকাতে সীমান্তরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি জানানো হয়েছে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম আফছার জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। তবে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট পর্যায় থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আরও জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল। এক্ষেত্রে স্থানীয় সচেতন বাসিন্দাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন। স্থানীয় চোরাকারবারিদের তালিকা হালনাগাদ ও তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালানো হবে। সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পাশাপাশি পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল ৪৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতা ও সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি চিহ্নিত চোরাকারবারিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..