শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০১ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা: গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র ও প্রায় দুই লাখ গোলাবারুদ এবং বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ অন্যান্য অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংশ্লিষ্ট আড়াই হাজারের বেশি ব্যক্তি এবং ৭০০ জনের বেশি মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (নভেম্বর ১৩) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার খান।
ইন্তেখাব হায়দার খান জানান, এই মুহূর্তে দেশের ৬২টি জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, বিরাজমান অবস্থায় দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তায় সেনাবাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।
অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি দেশের শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা রোধে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন ইন্তেখাব হায়দার খান।
এই সেনা কর্মকর্তা জানান, দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ছয় শতাধিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে সেনাবাহিনী। কারখানাগুলোকে চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে বর্তমানে দেশের ২ হাজর ৮৯টি গার্মেন্টস কারখানার মধ্যে প্রায় সবকটিই এই মুহূর্তে চালু রয়েছে।
ইন্তেখাব হায়দার খান জানান, সাতশর বেশি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে সেনাবাহিনী, যার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ১৪১টি, সরকারি সংস্থা বা অফিস–সংক্রান্ত ৮৬টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৯৮টি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ৩৮৮টি।
অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন অপরাধী ও নাশকতামূলক কাজের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী সক্রিয় রয়েছে জানান ইন্তেখাব হায়দার খান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৯৫ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধের ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। এটার ব্যাপারে তাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী যেন বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দেয়।