1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

তালেবান ইস্যুতে কিছু ‘ধর্মীয় বক্তা’ উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে: র‌্যাব মুখমাত্র

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১
  • ৩৪৮ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক: আফগানিস্তানে চলমান তালেবান ইস্যুতে বাংলাদেশের কিছু ধর্মীয় বক্তা তরুণদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তবে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের গ্রেপ্তার জঙ্গিরা আফগানিস্তানে যাবে বা তালেবানদের সঙ্গে যুক্ত হবে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এলিট ফোর্স র‌্যাবের মুখপাত্র এমন দাবি করেন। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘যারা এ ধরনের উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে, সেসব স্কলারদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।গত ১ মে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে তালেবানরা দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এতে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।

র‌্যাব বলছে, আফগানিস্তানে চলমান তালেবান ইস্যুতে বাংলাদেশের কিছু ধর্মীয় বক্তা তরুণদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। দেশে জঙ্গিবাদের যাতে উত্থান না হয়, সেজন্য তারা প্রতিনিয়ত কাজ করছে। র‌্যাবের তৎপরতায় দেশে এখন পর্যন্ত জঙ্গি ‘মাথাচারা’ দিয়ে ওঠেনি।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শাহ আলী এলাকা থেকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ’আনসার আল ইসলাম’এর আধ্যাত্মিক নেতা মাহমুদ হাসান গুনবি ওরফে হাসান ওরফে গুনবিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তিনি (শুনবি) ওয়াজের আড়ালে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দাবি র‌্যাবের।

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, গ্রেপ্তার গুনবি প্রথমে জঙ্গি সংগঠন হুজি (বি) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক জঙ্গি নেতা জসিম উদ্দিন রহমানির সঙ্গে তার পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা হয়। এরপর থেকে আনসার আল বাংলা টিম বা আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। জসিম উদ্দিন রাহমানি গ্রেপ্তারের পর উগ্রবাদিত্ব প্রচারক হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেন। জঙ্গি নেতা গুনবি আনসার আল ইসলামের দাওয়াত ও প্রশিক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় খণ্ডকালীন বা অতিথি বক্তা হিসেবে দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষকতা ও মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এসব মাদ্রাসায় সম্পৃক্ত হয়ে তিনি জঙ্গিবাদের বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন। আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি ছিল গুনবির। সাধারণ জঙ্গিদের তিনি আত্মঘাতি হিসেবে উদ্বুদ্ধ করতে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনে দায়িত্ব পালন করতেন।

গুনবির মতো অনেক বক্তা বাংলাদেশে তালেবানপন্থি। তাদের বক্তব্যের কারণে দেশের অনেক যুবকের মধ্যে তালেবানদের বিষয়ে সফটকর্ণার তৈরি হচ্ছে। এজন্যই কী এসব বক্তাদের বিরুদ্ধে র‍্যাব অভিযান পরিচালনা করছে এমন প্রশ্নে র‌্যাবের কমান্ডার আল মঈন বলেন, ‘দেশে যাতে জঙ্গিবাদের উত্থান না হয়, সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের তৎপরতার কারণে দেশে এখন পর্যন্ত জঙ্গি মাথাচারা দিয়ে উঠেনি দেশে। আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতির ওপর আমরা নজরদারি রাখছি। পাশাপাশি অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমরা র‍্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমে নজরদারি রাখছি।’

বাংলাদেশ থেকে তালেবানদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে দেশীয় জঙ্গিদের আফগানিস্তানে যাওয়ার কোনো প্রবণতা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাম্প্রতি সময়ে র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আনসার আল ইসলামের জঙ্গিরা সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হচ্ছে। র‍্যাব এখন পর্যন্ত ৩৭০ জন আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি যে, তারা আফগানিস্তানে যাবে বা তালেবানদের সঙ্গে যুক্ত হবে। তবে তাদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এক শ্রেণির স্কলাররা চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের অনেক স্কলারদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

গুনবির কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ও হামলার পরিকল্পনা ছিল কি-না জানতে চাইলে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা দেখেছি তিনি (গুনবি) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছে। ওই সংগঠনের বিভিন্ন মিটিং বা মাহফিলে যোগদান করলেও তার কোন সাংগঠনিক পদ ছিল না। তবে দাওয়াতে ইসলামের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।’

গ্রেপ্তার জঙ্গি ওসামার সঙ্গে গুনবির কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা আছে এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘ওসামার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, সে বিষয়ে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাজবাড়ীতে ওসামার যে মাদ্রাসা রয়েছে সেখানে নিয়মিত মাহফিলে বক্তব্য দিতেন এবং উগ্রবাদী আদর্শ প্রচার করতেন। সেই মাদ্রাসায় একজন প্রতিষ্ঠিত উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত ছিল গুনবি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে এসেছে ওসামা ও সাকিবের যে পরিকল্পনা ছিল সেখানে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। সংসদ ভবন ও পুলিশের উপর হামলার পরিকল্পনায় তার গাইড লাইন ছিল।’

গ্রেপ্তার জঙ্গি ওসামা ও সাকিবের কী পরিকল্পনা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা ছিল সংসদ ভবনের আশপাশে তারা জমায়েত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করবে। এই পরিকল্পনার সময় গুনবি আত্মগোপনে চলে যায়। তাকে আমরা তখন খুঁজছিলাম জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন ওসামা ও গুনবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখনো গুনবির নাম উঠে আসে।গুনবিকে কেন আধ্যাত্মিক নেতা বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, ‘গুনবির বক্তব্যের মাধ্যমে মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা অনেক। গ্রেপ্তার জঙ্গি সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গুনবি তাদের কাছে আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত। সে বক্তব্যের মাধ্যমে মানুষের মতাদর্শ পরিবর্তন করার একটি ক্ষমতা তার মধ্যে আছে। আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা গুনবির ওয়াজ মাহফিলে তার উগ্রবাদী মতাদর্শের বক্তব্য শোনে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন। এছাড়া গুনবি বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রুপকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও রাজবাড়ী মাদ্রাসায় নিয়ে বক্তব্যের তাদের মধ্যে জঙ্গি মতাদর্শ ঢুকাতো।আনসার আল ইসলামের মানহাজি এখন পর্যন্ত কতজন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিন জন মানহাজির আমরা পেয়েছি।রাজধানীর কোনো এলাকায় জঙ্গিদের তৎপরতা বেশি জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করলে দেখা যায় জঙ্গিদের তৎপরতা রাজধানীতে মিরপুর এলাকায় বেশি। আমরা প্রচুর পরিমাণে জঙ্গি মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি।গুনবির মাধ্যমে কত জন আনসার ইসলামে এসেছে প্রশ্ন করা হলে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, ‘নির্দিষ্ট সদস্য সংখ্যা জানা যায়নি। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায় উগ্রবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে সে অনেকে আনসার আল ইসলামের নিয়ে এসেছে।হেফাজত ইসলামের সঙ্গে গুনবির কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘সরাসরি এই সংগঠনের তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে হেফাজত ইসলামের বিভিন্ন সমাবেশে সে যোগদান করেছে।’

ইসলামের দাওয়াতের মাধ্যমে কতজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে গুনবি ইসলাম ধর্মে আনতে পেরেছে জানতে চাইলে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘কয়েকজনকে সে আনতে পেরেছে। তবে তাদেরকে সে জঙ্গিবাদে আনার জন্য নানা উগ্রবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে চেষ্টা করেছে।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..