1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কোরবানি ঈদ সম্পর্কে যা বললেন মুফতী মুস্তাফিজুর

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১
  • ২৩৪ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট :: বছর ঘুরে আবারো এল পবিত্র ঈদুল আযহা। মুসলিমদের জীবনে ঈদুল ফিতরের মতো আরেকটি আনন্দোৎসব হলো ঈদুল আজহা । এদিন ধনী-গরীব সকল মুসলমানই ঈদগাহে হাজির হয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দু’রাকাত নামায আদায় করে। আর সামর্থ্যবান মুমিন বান্দারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য রাসূল সাঃএর তরিকা অনুযায়ী কুরবানীর পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে থাকেন। পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলমানদের অন্যতম উৎসবের দিন। যার মূল বিষয় হল কুরবানী।এটি কুরআন-সুন্নাহয় অকাট্যভাবে প্রমাণিত বিধান এবং আল্লাহ ও রাসূলের পক্ষ হতে নির্দেশিত অন্যতম প্রধান ইবাদত।

এই দিনের আনন্দ হল, দশই যিলহজ্ব আল্লাহর মাগফিরাত লাভের আনন্দ এবং ত্যাগের মহিমায় কুরবানী পেশ করা। তাৎপর্যগত দিক থেকে ইসলামী ঈদ আর অন্যান্য ধর্মের পর্ব উৎসবের মাঝে এই পার্থক্য রয়েছে যে, অন্যান্য ধর্মে যেখানে শত বছরের পুরনো কোনো ঘটনা কিংবা বিশেষ কোনো ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে বছর বছর উৎসব উদযাপিত হয় সেখানে ইসলাম নিজেরই সদ্য করা ইবাদতের সৌভাগ্য-আনন্দে উজ্জীবিত হতে বলে। তাই এক মাস সিয়াম সাধনার সৌভাগ্যের আনন্দ উৎসব হল ঈদুল ফিতর।

আর হজ্ব, কুরবানী ও মহান আল্লাহর মেহমানদারী লাভের খুশির উৎসব হচ্ছে ঈদুল আযহা। মনে রাখতে হবে যে, এই কুরবানীর মূল সূত্র যদিও মিল্লতে ইবরাহীমিতে বিদ্যমান ছিল কিন্তু মিল্লাতে ইবরাহীমির ‘সেই’ ঘটনাই আমাদের আনন্দের মৌলিক উৎসব নয়; বরং আমাদের আনন্দের অন্তর্নিহীত কারণ তাই যা উপরোল্লেখিত হয়েছে।

কারণ কুরবানী ইসলামেরই একটি স্বতন্ত্র বিধান এবং শরীয়তে মুহাম্মাদীর শিআর। যুগে যুগে কুরবানী বা প্রিয় বস্তুটি মহান আল্লাহর দরবারে উৎসর্গ করার ইতিহাস সুদীর্ঘ। হযরত আদম আঃ-এর দুই সন্তানের কুরবানীর কথা বিবৃত হয়েছে সূরা মায়েদায়। এই কুরবানীর প্রেক্ষাপট বর্ণিত হয়েছে উত্তম সূত্রে বর্ণিত হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর একটি রেওয়ায়েতে।

হযরত আদম আ.-এর দুজন ছেলে ছিল। হাবিল আর কাবিল। হযরত হাওয়া আ. প্রত্যেকবার এক জোড়া সন্তান প্রসব করতেন। একটি ছেলে অপরটি মেয়ে। এই জমজ ভাইবোনদের বিয়ে ছিল হারাম। তাই তখন এক গর্ভে জন্মলাভ করা ছেলের সাথে ভিন্ন গর্ভে জন্মলাভ করা মেয়ের বিয়ের নিয়মই প্রচলিত ছিল। কাবিলের জমজ বোনটি ছিল সুশ্রী। জমজ হওয়ার কারণে তাকে কাবিল বিয়ে করার নিয়ম না থাকলেও তার হঠকারিতা ছিল যে, সে তাকে বিয়ে করবেই।

অন্যদিকে, হকদার হওয়ার দাবি ছিল হাবিলের। এই দ্বন্দের ফয়সালা হল এভাবে-প্রত্যেকে আল্লাহর সান্নিধ্যে কিছু কুরবানী করবে। যার কুরবানী কবুল হবে তার দাবিই গ্রহণযোগ্য হবে। হাবিল ও কাবিল উভয়েই কুরবানী পেশ করল। তখনকার দিনে কুরবানী কবুল হওয়ার আলামত ছিল, আকাশ থেকে আগুন নেমে কবুলকৃত কুরবানী খেয়ে ফেলত। যথারীতি আগুন এসে হাবিলের দুম্বাটি খেল, কাবিলের কুরবানী রয়ে গেল । কিন্তু তা মেনে নিতে পারেনি কাবিল। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সে হত্যা করে ফেলল তার ভাইকে।

(তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৪৮) সূরা মায়েদার ২৭ থেকে ৩১ আয়াত পর্যন্ত এই ঘটনাটি সংক্ষিপ্তভাবে বিবৃত হয়েছে। যার প্রথম আয়াতটি হল, (তরজমা) আর (হে নবী) আপনি তাদের সামনে আদম আ.-এর দুই ছেলের ঘটনা সঠিকভাবে পাঠ করে শুনিয়ে দিন। যখন উভয়েই এক একটি কুরবানী পেশ করেছিলেন। তাদের মধ্য থেকে একজনের কুরবানী কবুল হল আর অপরজনেরটি কবুল হল না। সেই (অপরজন) বলতে লাগল, আমি নিশ্চয়ই তোমাকে হত্যা করে ফেলব।

সেই (প্রথম জন) বলল, আল্লাহ তাআলা মুত্তাকীদের আমলই কবুল করেন। হযরত আদম আ.-এর পর প্রত্যেক উম্মত বা জাতির মধ্যেই এই মুবারক আমল বিদ্যমান ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) আর প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানী নির্ধারণ করেছি। যেন তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।

তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ। অতএব তোমরা তারই অনুগত থাক এবং (হে নবী) আপনি সুসংবাদ দিন বিনীতদের।-সূরা হজ্ব : ৩৪ উল্লেখ্য যে, সকল উম্মতের কুরবানীর নিয়ম এক ছিল না। ইসলামী শরীয়তে যে পদ্ধতিতে কুরবানী করা হয় তাও আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে নির্দেশিত এবং তা মিল্লাতে ইবরাহীমির অংশ।

হযরত ইবরাহীম আ. আল্লাহ তাআলার আদেশে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী দিতে উদ্যত হওয়ার ঘটনা খুবই প্রসিদ্ধ। মূল ঘটনাটি কুরআনে আছে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কিচ্ছা-কাহিনী রচিত হয়েছে, যা ইসরাঈলী রেওয়ায়েতনির্ভর। কুরআনে আল্লাহ তাআলা এই ঘটনা যতটুকু বর্ণনা করেছেন তাই মুমিনের জন্য যথেষ্ট।’

আল্লামা ইবনে কাসীর রাহ. বলেন, অতঃপর এ ব্যাপারে যে সমস্ত আছার বর্ণিত তার অধিকাংশই হচ্ছে ইসরাঈলী। এই সুন্দর ঘটনা, মহান পরীক্ষা ও আল্লাহর পক্ষ হতে বিশাল দুম্বা প্রেরণ সম্পর্কিত ঘটনার জন্য কুরআন মজীদের বর্ণনাই যথেষ্ট। অতএব এই ব্যাপারে ইসরাঈলী রেওয়ায়েত বা অলীক কল্প-কাহিনীতে না গিয়ে কুরআনে বর্ণিত ঘটনার উপরই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত।

লেখক: তরুণ আলেমেদ্বীন ও ইসলামী লেখক, ফরিদপুর।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..