মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : মিয়ানমারের মংডু শহর নিয়ন্ত্রণে দেয়ার দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর ফলে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সকালে জান্তার সীমান্ত এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। মংডু শহরের বাইরে তারা অবস্থান করছিল।
আরাকান আর্মির দাবি, তারা জান্তা বাহিনীর পাশাপাশি তাদের মিত্র আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির রোহিঙ্গা মিলিশিয়া, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে।
রাখাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডুতে লড়াইয়ের পর সোমবার আরকান আর্মি মিলিটারি অপারেশন কমান্ড ১৫–এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন ছাড়াও ৮০ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও জান্তা সেনাকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি। উল্লেখ্য, গত মে মাসের শেষ দিকে আরাকান আর্মি মংডুতে হামলা শুরু করে। এই মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে। শহর নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে আরাকান আর্মির দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু, রাখাইনের বুথিডং ও শিন এলাকার পালেতাওয়ার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে তারা। এদিকে রাখাইনে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য পুনঃস্থাপন করলে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে বসবাসকারী মানুষের দুর্দশা কমবে।’ সামরিক ওই বিশ্লেষক আরও বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপ করতে হবে।
রাখাইন অধিবাসীর দুর্দশার বিষয়ে গত মাসে জাতিসংঘের তথ্য থেকে জানা যায়, রাখাইনে ২০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। মূলত, জান্তার পক্ষ থেকে এসব রাজ্যে যাওয়ার জন্য সড়কপথ ও নৌপথ অবরোধ করে রাখায় আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাসহ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ ওই এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ মুহুর্তে আরাকান আর্মি দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে বলে জানা যায়। ইতোমধ্যে আন শহরে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখলও করে নিজেরদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠী। ধাপে ধাপে অন্যান্য শহরগুলোতেও এগিয়ে যাচ্ছে এই আরাকান বাহিনী।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।