রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া, সিলেট ব্যুারো: ভারতে আইন অমান্যকারীদের সমান চোখেই দেখা হয়। সিলেটের আটক আওয়ামী লীগ নেতারা অবৈধভাবে অন প্রবেশ করে যেমন অপরাধ করেছেন। তেমনি রাজ্যের আইন অমান্য করে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অন্য রাজ্যে অবস্থান করে ভারতীয় রাজ্যের আইন অমান্য করেছেন।সে বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আনা হয়েছিল সেখানকার থানা পুলিশের হেফাজতে।
ভারতের কলকাতা থেকে সিলেটের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছিলো মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি থানা পুলিশ। গত রোববার ভোরে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পশ্চিম জৈন্তা হিল জেলার একজন ট্রাকচালককে মারধরের অভিযোগে গত মাসে ডাউকি থানায় একটি মামলা থাকায় তারা এখন অবস্থান করছেন কলকাতা জেলহাজতে।
সেখানকার থানায় আটকের পর থেকে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক,সিলেটের পরিচিত মুখ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল , রাতভর তদবির করেন তাদেরকে ছাড়িয়ে নিতে। কিন্তু আগে থেকেই একটি মামলা থাকার কারণে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে আইনি কবে মোকাবেলা করে তাদেরকে মুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন সেখানে অবস্থানরত মিডিয়ায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছু আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান (মুক্তি), সহসভাপতি আবদুল লতিফ (রিপন) ও সদস্য ইলিয়াস হোসেন (জুয়েল)। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী (নাদেল)। ভারতে অবস্থানরত এই রাজনীতিবিদ বলেন, রোববার ভোরে মেঘালয়ের ডাউকি পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে ডাউকি থানায় একজন মামলা করেছেন। এ মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তবে কলকাতার জেলে পাঠানো হয়েছে তাদেরকে এক ট্রাক চালকের হামলার ঘটনায়। মেঘালয়ের পত্রিকা দ্য শিলং টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার চারজনকে রোববার রাতে কলকাতা থেকে পশ্চিম জৈন্তা হিল জেলার প্রধান শহর জোয়াইয়ে আনা হয়। ট্রাকচালককে মারধরের অভিযোগে ডাউকি থানায় হওয়া মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের পুলিশ হেফাজতে নিয়েছিল।
কিন্তু নাসির উদ্দিন সহ সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারা গ্রেফতারের খবর বাংলাদেশে চলে আসলে সিলেটের কিছু লোকজন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে অপপ্রচার করে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এমনটা জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজনীতিবিদ।
তিনি বলেন রাজনৈতিক বিরোধিতা রাজনৈতিক ভাষায় করা উচিত। অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের সম্মানের হানি ঘটানো কোন ভাল মানুষের কাজ নয়। ধর্ষণের কোন ঘটনায় সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে আটক করা হয়নি।
সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারা অবস্থান করতে অনুমতি নেন শিলং পুলিশের। মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে ছিল তাদের অবস্থান।
লাইমক্রা থানা পুলিশের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সেখানকার একটি বোর্ডিং কি অবস্থান করেন সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানসহ চারজন।
সে কারণেই পুলিশ তাদের নাম ঠিকানা জানতে আর কোন অসুবিধা হয়নি।
হঠাৎ করে সেখানে শীত বেড়ে যাওয়ায় কোন আভাস পাওয়ায় পুলিশকে না বলেই স্থান পরিবর্তন করে অন্য রাজ্যে অবস্থান নেন তারা। হয়তো এটিও যে একটি অপরাধ সেটি জানা ছিল না তাদের। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের সন্দেহ জাগে, অনুমতি ছাড়া তারা কি বাংলাদেশেই ফিরে এসেছে! কিন্তু না, রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া অন্য রাজ্যে চলে যাওয়ায় দেশটির আইন অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আটক করা হয় তাদের।
রাজ্যের শিলং পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি রিপন ও সদস্য জুয়েল।
রোববার দুপুরের দিকে কলকাতার নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে কলকাতা পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে আটক করে শিলং পুলিশ। এরপর রোববার রাতেই তাদেরকে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে আনা হয়েছে।