1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

হাকালুকিতে জীবিকা সংকটে মৎসজীবিরা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১
  • ৯৭৯ বার পঠিত

এস আলম সুমন, হাকালুকি পাড় থেকে ফিরে: বছরের এই সময়ে (জুন-জুলাই মাসে) হাকালুকি হাওর থাকে জলে টুইটুম্বুর। তবে এবার চলতি বর্ষা মৌসুমেও হাওর অনেকটাই জলশূন্য। পানি না থাকায় মিলছে না মাছও। এতে করে জীবিকা সংকটে পড়েছেন হাকালুকি তীরবর্তী মৎসজীবিরা।
পুরো হাওরে মৎস্যজীবিরা শিকারে নেমেও অনেকেই কাঙ্খিত মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন। মৎসজীবিদের দাবি ভরা বর্সায় হাওরের এমন দৃশ্য আর কখনো দেখেননি। চলতি বছরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ও উজানের পানি না নামায় হাওরে পনি পরিপূর্ণ হয়নি এমনটি ধারণা মৎস্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে হাকালুকির হাওরের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া অংশের ইসলামপুর বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,হাওরের খাল,বিল ও জলাশয়ে কিছুটা পানি রয়েছে। বাকি হাওরের বিস্তীর্ণ ভূমি এখনো শুকনো। শিকারে বের হয়ে মাছ না পেয়ে বাজারের প্রাঙ্গণে বসে লুডু খেলছেন স্থানীয় মৎসজীবি শাহয়ুব আলী,আজমত আলী,তয়জুল ইসলামসহ কয়েকজন।

মৎস্যজীবি শাহয়ুব আলী, আজমত আলী, তয়জুল ইসলাম ও মনসুর আলীসহ একাধিক মৎস্যজীবি দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ ‘র এ এ প্রতিবেদককে বলেন,‘কোন বছরই এমন হাকালুকি হাওর দেখিনি। বৈশাখ মাস থেকে বিল, খাল পানিতে ভরে গিয়ে হাওর জুড়ে পানি থাকতো। আষাঢ় মাস শেষের দিকে এখনো হওরের খাল বিলে পানি ঠিকমতো হয়নি। নৌকা নিয়ে সকালে বের হয়েছি। বিকেল পর্যন্ত জাল দিয়ে খালে মাছ ধরার চেষ্টা করেছি। বড় মাছতো দূরের কথা। ৫ জন মিলে এক কেজি ছোট মাছও ধরতে পারিনি।’তারা বলেন, অন্যান্য বছর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাওরে জাল দিয়ে কম হলেও ছোট বড় ১৫ থেকে ২০ কেজি মাছ ধরতে পারতাম। বিকেলে সেটা আবার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা পাওয়া যেতো। নৌকা ও জালের মালিককে ভাড়া দিয়ে জনপ্রতি ৫ থেকে ৬ শত টাকা থাকতো। এখন রোজগারতো দূরের নৌকার মহাজনকে ভাড়া দিতে পারিনা।

মৎস্যজীবি ব্যবসায়ী শাহিদুর রহমান, আব্দুর রউফ দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ ‘র এ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাওরে শিকারীরা এখানে মাছ নিয়ে আসেন। আমরা তাঁদের কাছ থেকে মাছ কিনে নিয়ে বিক্রি করি। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছি। যারা এসেছেন তাঁদের কেউ কেউ সামান্য মাছ ধরতে পারলেও অনেকে মাছ পাননি। আমাদেরও খালি হাতে ফিরে যেতে হবে। এমন দিন আসবে ভাবিনি। হাওরে মাছ না পেয় ফিরে যেতে হবে। মৎস্যজীবি ইলাই মিয়া, বয়তুল আলী, রেনু মিয়া বলেন, ‘আষাঢ় মাসে হাওরে পানি কম। নৌকা নিয়া হাওরে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়। শুধু খালে মাছ ধরতে হয়। বিলে নৌকা নিয়ে নামলে ইজারাদারদের পাহারাদাররা জাল নৌকা আটকে রাখেন। টাকা দিয়ে জাল ও নৌকা ছাড়িয়ে আনতে হয়। মৎস্যজীবি নওয়াব মিয়া ও ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমাদের জীবদ্দশায় হাওরে পানির সংকট দেখিনি। হাওর ভরে রাস্তাঘাটে পানি থাকতো বর্ষায়। বিলে, খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আগে বছরের ছয় সাত মাস পানি থাকতো হাওর জুড়ে। এখন বছরের তিন মাসও হাওরে পানি থাকেনা। হাকালুকিতে মাছ ধরে জীবন চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজহারুল আলম দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ ‘র এ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘চলতি বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় হাকালুকি হাওরে বর্ষায়ও পানি অনেক কম। হাওরের খাল বিলের পানিতে মাছ ধরতে হচ্ছে। বিস্তীর্ণ হাওরজুড়ে পানি থাকলে জেলেরা কাঙ্খিত মাছ পেতেন। ইলিশের বংশবিস্তারে দেশের বরিশাল, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাছের প্রজননকালে মাছ দলা নিষিদ্ধ থাকায় ওই অঞ্চলের জেলেদের নির্দিষ্ট সময় সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়। হাওরাঞ্চলে এরকম মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই এরকম কোন ত্রাণ আসেনা। ঢাকা মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সুলতান মাহমুদ মোবাইল ফোনে দৈনিক মৌমাছি কন্ঠ ‘র এ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাকালুকির নদী ও খাল দিয়ে পলিমাটি এবং বালি এসে খাল-বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মৎস্য সম্পদের জোগানদাতা হাকালুকি হাওরে অন্যান্য বছর এপ্রিল মাস থেকে পানি থাকতো। গত কয়েক বছর হাওরে ইলিশেরও দেখা মিলেছে। এ বছর হাওরে পানি কম থাকার কারন পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায়। এটা হাওরের মৎস্য সম্পদ ও জেলেদের জীবিকাও সংকটে পড়বে। তিনি বলেন, ‘এপ্রিল মে মাসে মাছের প্রজননকাল। হাওরে ওই সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকলে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে। চলতি বছরের জানুয়ারীতে আমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের কাছে হাওরের মৎস্য সম্পদের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ ও ওই সময় বেকার থাকা মৎস্য বিভাগের আওতাধীন জেলেদের ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি। বিষয়টি সচিব মহোদয় গুরত্বসহকারে নিয়েছেন। প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে হাকালুকির বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ বৃদ্ধি পাবে। জেলেদের জীবিকা প্রাণ ফিরে পাবে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..