1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

সংকটে দুর্যোগে শহীদ জিয়ার নেতৃত্ব ছিল অপরিসীম

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৬১ বার পঠিত

:বিশেষ প্রতিবেদন:
পৃথিবীর ইতিহাসে জাতীয় সংকট সন্ধিক্ষণে যেসব নেতা দিয়েছেন দিশা, জাতিকে উদ্ধার করেছেন মহাদুর্যোগ থেকে, তাঁরা ইতিহাসের পাতায় অক্ষয়, অব্যয়, অমর হয়ে আছেন। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সংকট সন্ধিক্ষণে-স্বাধীনতা ঘোষণার ক্রান্তিকালে, রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ও ৭ নভেম্বর, ১৯৭৫-এর রাজনৈতিক দুর্যোগে যে নেতা এই জাতির ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি জিয়াউর রহমান।
তুরস্কের ইতিহাসে কামাল আতাতুর্ক, মিসরের ইতিহাসে নাসের, ফ্রান্সের ইতিহাসে দ্য গল ও কিউবার ইতিহাসে ক্যাস্ট্রো যে চির অম্লান ভূমিকা নিয়েছিলেন আমাদের ইতিহাসে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাও অনুরূপ চির অনির্বাণ। করোনাভাইরাসের মতো পৃথিবীব্যাপী মহামারির এই দুর্যোগে ‘বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র’ নতুন করে জিয়াউর রহমানের সাহস, সুশাসন ও নেতৃত্বের কুশলতার কথা স্মরণ করছে। এই দুঃসময় তিনি আমাদের দেশপ্রেম, সংযম, ধৈর্য্য ও কর্মউদ্দীপনার উৎস। ব্যক্তিগত জীবনে অসাধারণ ধীশক্তিসম্পন্ন এই নেতা ছিলেন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুস্থির, বাস্তবায়নে দৃঢ় ও কুশলী। শারীরিকভাবে অসম্ভব পরিশ্রমী, সুশৃঙ্খল ও নিজ লক্ষ্যে অদম্য।

তিনি ছিলেন ‘সৃজনশীলতার চেয়েও প্রায়োগিক’। (ডেনিস রাইট : ১৯৯৬:২) জাতির এই দুর্যোগময় মুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব যখন দিশাহারা, তখন শহীদ জিয়ার আদর্শ হতে পারে আমাদের অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। এই দুর্যোগ ও দুঃসময়ে জিয়ার নেতৃত্বের বড় প্রয়োজন ছিল, ‘Zia ! thou should’st be living at this hour : Bangladesh hath need of thee.’

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন এই দেশ ও জাতির এক অনন্য রাষ্ট্র নায়ক। তাঁর নেতৃত্বে সংহত হয়েছিল অর্জিত স্বাধীনতা। জনগণের বিশ্বাস ও জীবন বোধের আলোকে পুনঃস্থাপিত হয়েছে জাতীয় আদর্শ। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠানের পর সতর্ক, সযত্ন সংস্কারের সূচনা করলেন তিনি। পুনর্বহাল হলো অপহৃত বহুদলীয় গণতন্ত্র। অর্জিত হলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আইন ও শৃঙ্খলা ফিরে এলো। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলো রাজধানী থেকে গ্রাম-গঞ্জে। কর্মউদ্দীপনা ও দেশপ্রেম দিয়ে উজ্জীবিত করলেন গোটা জাতিকে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, খালকাটা কর্মসূচি, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, জনসংখ্যা নিরোধে গৃহীত হলো কর্মসূচি। নারী, শিশু ও যুবকের কল্যাণ প্রাতিষ্ঠানিকতা পেল। মনোযোগ এলো শিল্পকলা ও ক্রীড়ায়।

আজকের বাংলাদেশের নির্ভরতার প্রধান দুটি উৎস-জনশক্তি রফতানি তথা ‘রেমিট্যান্স’ এবং তৈরি পোশাক শিল্প- ‘গার্মেন্টস’ যুগের সূচনা করলেন তিনি। সর্বোপরি জাতিকে দিলেন জাতিসত্তার নতুন পরিচয়, নতুন উপলব্ধি ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’। আর কিছু না হোক এ জাতিকে নতুন সত্তায় অধিষ্ঠিত করার বাস্তবসম্মত দার্শনিক ভিত্তির জন্য বাংলাদেশের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন তিনি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মাধ্যমে জাতিকে শান্তি, স্বস্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিলেন তিনি। মুসলিম জাহান ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে তার নেতৃত্বে অর্জিত হলো বিরল সম্মান। তাই তিনি আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি। এর স্বীকৃতি রয়েছে বিশেষজ্ঞের মন্তব্যে : “Zia imprinted an indelible mark in Bangladesh’s history a mark that will continue to influence its political and economic domains for a long time to come.” (Habib Jafrullah: 2000 : A)

একটি দেশ ও জাতির প্রাণ পুরুষ যখন সীমানা পেরিয়ে গড়তে চান আপন অন্য ভুবন, তখন সীমানা পেরুনোর বিপদ হিসেবে উড়ে যেতে পারে তার প্রাণ পাখি। একজন সামরিক শাসক ব্যারাক অতিক্রম করে যখন অর্জন করেন জনগণের অকুণ্ঠ ভালোবাসা তখন ব্যারাকের উচ্চাভিলাশীরা ঘুরিয়ে দিতে পারে তাদের বন্দুকের নল। জনগণের কল্যাণ সাধনে যখন এই দেশনায়ক নিরন্তর সংগ্রামরত, পাহাড় কেটে কেটে এই জন নায়ক যখন এই জাতির ভাগ্যপথ নির্মাণে ব্যস্ত, তখন তাঁর সাবেক সভাসদরা নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের মোহে বাতিকগ্রস্ত। দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা, ব্যক্তি নৈকট্য বা বন্ধুত্বের চেয়ে তখন ক্ষমতা ও ক্ষমতার লালসাই একমাত্র নিয়ামক। তখন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা দলীয় স্বার্থের আড়ালে উচ্চারিত হয় মহৎ শব্দাবলি। এ ক্ষেত্রে ভৌগোলিক ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক সমীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ পরবর্তী দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও কূটনীতি ‘বাংলাদেশের রাজনীতি’ বিশ্লেষণে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জিয়াউর রহমানের শাহাদাত ওই উভয় সমীকরণ-অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিবেচ্য।

জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনী এবং রাজনীতিতে সমঝোতা, সহমর্মিতা এবং আস্থার প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছেন। মানুষের ওপর এত আস্থা ও বিশ্বাসের মূল্য দিতে হয় তাঁকে অবশেষে। তাঁর হত্যাকারী ছিল তাঁরই এক বিশ্বস্ত বন্ধু। ১৯৮১ সালে ৩০ মে চট্টগ্রাম যাত্রার পূর্বেই সামরিক গোয়েন্দাদের তরফ থেকে তাঁকে সতর্ক করা হয়; কিন্তু, তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, বিশ্বস্ত বন্ধু তাঁর নিষ্ঠুর ঘাতকে পরিণত হতে পারে। তাঁর নির্মম মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আবারও ‘জাতীয় ঐক্য’ সূচিত হয়। সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক বিরোধ বিদূরীত হয়; কিন্তু, তাঁর অনুপস্থিতজনিত নেতৃত্বের শূন্যতা তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধানকে উচ্চাকাঙ্ক্ষি করে তোলে। সেনাবাহিনীতে পেশাদারিত্ব (Professionalism) ফিরিয়ে আনার এবং সেনাবাহিনীকে ক্রমেই রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার যে প্রক্রিয়া জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন তার অবসান ঘটে। দেশ নিক্ষিপ্ত হয় সেনাবাহিনীর একনায়কত্বে। সন্দেহ নেই যে, জিয়াউর রহমানও একজন ‘সৈনিক থেকে রাজনীতিক’ (Soldier Turned Politician); কিন্তু পার্থক্য এই যে, জিয়াউর রহমান জনগণের আস্থা, ভালোবাসা এবং বৈধতা অর্জন করেছিলেন। “Zia weaved a new pattern in state craft and left behind a legacy rejected by the cynics but intensely revered by his followers and admirers” (Habib Jafrullah :1996:179)।

সমসাময়িক ‘সামরিক রাজনৈতিক নেতৃত্বে’ এটি একটি বিরল ঘটনা । জিয়াউর রহমানের স্বকীয় ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতির’ ফসল এটি। এই স্বাতন্ত্র্যের জন্য ‘টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া- জিয়া আছে দেশ জুড়িয়া’। তিনি চিরদিন বেঁচে আছেন বাংলাদেশের সবুজ ধানের শীষে। একজন জীবিত জিয়ার চেয়ে একজন মৃত জিয়া অনেক শক্তিশালী। গত কয়েক দশকের রাজনৈতিক ঘটনাবলি তার প্রমাণ। তিনি মৃত্যুকে জয় করেছেন। তাঁর বিশ্বাস, শৃঙ্খলা ও দৃঢ়তা দিয়ে আমরা করোনার ভয়কে জয় করেছি, করবো। সেই সঙ্গে আমাদের জয় করতে হবে ভীতির রাজত্বকে। জাতীয়তাবাদী শক্তি ‘জাতীয় মুক্তি’র লক্ষ্যে নিরন্তন সংগ্রামে নিবেদিত। শহীদ জিয়ার শাহাদাতের এই দিনে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনের আন্দোলনে নিবেদিত হোক আমাদের দেহ-মন-প্রাণ।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন এই দেশ ও জাতির এক অনন্য রাষ্ট্র নায়ক। তাঁর নেতৃত্বে সংহত হয়েছিল অর্জিত স্বাধীনতা। জনগণের বিশ্বাস ও জীবন বোধের আলোকে পুনঃস্থাপিত হয়েছে জাতীয় আদর্শ। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠানের পর সতর্ক, সযত্ন সংস্কারের সূচনা করলেন তিনি। পুনর্বহাল হলো অপহৃত বহুদলীয় গণতন্ত্র। অর্জিত হলো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আইন ও শৃঙ্খলা ফিরে এলো। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলো রাজধানী থেকে গ্রাম-গঞ্জে। কর্মউদ্দীপনা ও দেশপ্রেম দিয়ে উজ্জীবিত করলেন গোটা জাতিকে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, খালকাটা কর্মসূচি, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, জনসংখ্যা নিরোধে গৃহীত হলো কর্মসূচি। নারী, শিশু ও যুবকের কল্যাণ প্রাতিষ্ঠানিকতা পেল।

লেখক: অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..