সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন টমেটোর রাজ্য নামে পরিচিত। উপজেলার ভানুগাছ বাজার থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত সড়কের পাশে টমেটো পাইকারি বিক্রি করা হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার এসে এখান থেকে টমেটো ক্রয় করেন। এই অঞ্চলের টমেটো চাষের বীজতলা তৈরি থেকে সবকিছু ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয়। এখানকার অনেক কৃষক টমেটো চাষ করে বিত্তবান হয়েছেন।
টমেটো চাষিরা জানান, কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, মাধবপুর, আলীনগর, তিলকপুর, পাত্রখোলা, শ্রীচন্দনপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ব্যাপক ভাবে টমেটো চাষ করা হয়। মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এখানকার টমেটো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হয়। এখানে অনেক কৃষক আছেন টমেটো চাষ করে বিত্তবান হয়েছেন। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মালচিং পদ্ধতি টমেটো চাষ করা হয়।
সরেজমিনে কমলগঞ্জ উপজেলার
আদমপুর, মাধবপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করেছেন। খেত থেকে শ্রমিকেরা টমেটো তুলে বিক্রির জন্য ক্যারটে জমা করছেন। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি টমেটো ১০০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন মৌসুমের শেষ সময়ে চলে এসেছে এজন্য দাম কম। এখন আকার অনুযায়ী ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। বিশেষ করে পাইকারি টমেটো কেনার জন্য দূরদূরান্ত থেকে সবজি ব্যবসায়ীরা এসেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবছর সারা জেলায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি টমেটো কমলগঞ্জ উপজেলায় চাষ করা হয়। এখানকার উৎপাদিত টমেটোর বীজের নাম ‘বারি-আট’ ও ‘বারি-চার’। এগুলো গ্রাফটিং পদ্ধতিতে লাগানো হয়ে থাকে। এ গাছগুলো দীর্ঘদিন ফল দিতে পারে। বৃষ্টিতে নষ্ট হয়না আবার অতিরিক্ত গরমেও পুড়ে না।একেকটি গাছ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি পরিমাণ টমেটো উৎপাদন হয়ে থাকে।
কমলগঞ্জ উপজেলার টমেটো চাষি আব্দুল মান্নান জানান, এবছর ‘মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করেছি। এই পদ্ধতিতে খরচ কম হয় উৎপাদন বেশি হয়।
এবছর ১০ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ লাখের ওপরে। ফলন ভালো হওয়েছে ও বাজারে দামও ভালো। সব খরচ বাদে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, কমলগঞ্জের আদমপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন টমেটোর জন্য প্রসিদ্ধ। এখানকার টমেটো চারা গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা হয়। শুরুতে এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ চারা ক্রয় করেন। আর মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টমেটো পাওয়া যায়। এখানকার অনেক কৃষক টমেটোর চারা ও টমেটো বিক্রি করে বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা আয় করেন।