1. newsmkp@gmail.com : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. info@fxdailyinfo.com : admi2017 :
  3. admin@mkantho.com : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বিশাল অর্থনীতি হবে যদি বন্দরকে বিশাল হৃৎপিণ্ড করতে পারি: ড. ইউনূস

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ৭৫ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট :: চট্টগ্রাম সওদাগরদের শহর উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নৌকা নিয়ে, পালতোলা জাহাজ নিয়ে কে কোথায় চলে যাবে। এখানে ভিড়েছে।
আরবরা এসেছিল, পর্তুগিজরা এসেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে চাটগাঁর লোকই সওদাগরের বৃত্তি বেছে নিয়েছে।
তারা ব্যবসা চেনে। চাকরির কথা বললে, বলে চাকরি কেন করবে বোঝে না। আমাদের মা বাবারা দোকানে বসাই দেন। আমিও দোকানে বসেছি। তারা চিন্তা করে না চাকরি বলে একটা জিনিস আছে। দেশ বিদেশে যাবে ব্যবসা করবে। যার ছোট জাহাজ সে ছোট জাহাজ নিয়ে যাবে। ছোটবেলায় দেখেছি জাহাজ আসছে মাল ভর্তি হয়ে, বিশেষ করে ধান, চাল আনতো বার্মা থেকে। পাশের বাড়ির খালের মধ্যে দেখেছি। আমাদের রক্ত হলো সওদাগরের রক্ত। চট্টগ্রাম হলো এ সওদাগরের পীঠভূমি।

এদের ছেড়ে দিলে, এদের হাতে ছেড়ে দিলে দেখবে শুধু বাংলাদেশ না সারা দুনিয়াতে করে দেখাবে। নোয়াখালীর লোক, সিলেটের লোক। আজকে সিলেটের মানুষ ওই জাহাজে করে বিলেতে চলে গেছে। রান্না করেছে, আগুন দিয়েছে এই করতে করতে চলে গেছে। সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে গেছে। সেই আমলে যদি তারা এত দুনিয়াতে ছড়িয়ে যায় আজকে বন্দর ব্যবস্থাপনায় যারা যুক্ত হবে বাংলাদেশে চিন্তা করেন তারা কোথায় কোথায় যাবে। দুনিয়ার কোনো বন্দর রাখবে না যেখানে বাংলাদেশি নেই। টপ ক্লাস সার্ভিস তারা দেবে। সেটাই আমাদের ভবিষ্যৎ। যেটা আমাদের রক্তের ভেতরে আছে, ঐতিহ্যের ভেতরে আছে। আমরা যেন এটাকে অবহেলা না করি। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। আমাদের বিশাল অর্থনীতি হবে যদি চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশাল হৃৎপিণ্ডে পরিণত করতে পারি। বন্দর ফ্যাসিলিটি দিলে বিস্তীর্ণ এলাকা দিলে যেকোনো ব্যবসায়ী এসে এখানে বিনিয়োগ করবে। তাকে অনুরোধ করে আনতে হবে না। তার নিজের টানে আসবে। আমরা ডিজিটালাইজেশনের কথা বলেছি। সব কিছু দরকার। তার আগে আমাদের স্বপ্নটা দরকার। যেটা আমরা করবোই। এর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুতবেগে পরিবর্তন হতে শুরু করবে।

বুধবার (১৪ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) ৫ নম্বর ইয়ার্ডে বন্দর কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্ক্রিনে দেখছি চট্টগ্রাম বন্দরের পরিস্থিতি। আমাদের মতো দেশে, একটা বন্দর, কয়েকটা টার্মিনাল নিয়ে কথা বলছি। অনেক দেশের এ রকম ২০-৩০টা বন্দর, টার্মিনাল ভরে আছে বিশ্বমাপের, বিশ্ব সাইজের। সেদিকে তাকালে আমাদের খুব ক্ষীণ মনে হয়। এ বন্দর দিয়ে তো রোগী বেশি দিন টিকবে না। টেকানো যাবে না। কাজেই এটাকে শক্তিশালী করতে হবে। ক্রমাগতভাবে এটাকে শক্তিশালী করতে হবে। একবার শক্তিশালী করে দিলেই হবে না। সেটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।

মাঝেমাঝে প্রশ্ন শুনি যে বিদেশিকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আপনারা ইন্ডিয়াতে স্বাস্থ্যের জন্য যান না! দলে দলে যান! যখন বন্ধ করে দিছে হাহাকার করছে কেন যেতে দিচ্ছে না। কাগজ উল্টালে দেখা যায় নেতারা সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে, ব্যাংককে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে। কিন্তু বন্দর – না না এখানে আর কেউ আসতে পারবে না। ভাই আমাদের চিকিৎসা দরকার তো। এর চিকিৎসা দরকার। তাই বিদেশি ডাক্তার আনতে হবে তো। উপায় নাই আমাদের। সব থেকে সেরা চিকিৎসক এটার পেছনে দিতে হবে যাতে এটি বিরাট আকারে বানিয়ে নিতে পারি। এ হৃৎপিণ্ড ক্রমাগত মজবুত হবে, শক্তিশালী হবে ও বৃহত্তর হবে।

আমাদের বড় ডাক্তার দিয়ে কাজ করতে হবে। এতে আমাদের লাভ। একটা লাভ হলো এর পেছনে আমাদের কোনো টাকা-পয়সা খরচ হচ্ছে না। একটা মজার জিনিস- বিল্ড অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার। তোমরা বানাও রোজগার করো, এই মেয়াদের মধ্যে আমাদের দিয়ে দিতে হবে। কাজেই পয়সা বেচে গেল কাজটা হয়ে গেল। তারা যখন কাজে নামবে, তারা দুনিয়াতে শত শত পোর্ট পরিচালনা করে। তারা দুনিয়ার সেরা। যেকোনো বন্দরে যান তাদের মার্কা দেখবেন। তারা যখন বন্দরের দায়িত্ব নেয়, আমাদের মতো বানাবে না। এটা তাদের বন্দর। তাদের রোজগার করে টাকা তুলতে হবে। তারা আগে যেসব বন্দর বানিয়েছে তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি, সর্বশেষ অভিজ্ঞতা এখানে আনবে। যাতে টাকা তাড়াতাড়ি তুলতে পারি, বেশি টাকা উঠাতে পারি। তারা যন্ত্র বানিয়ে দিল, মেয়াদ শেষে আমরা চালাতে পারবো। আমাদের টাকা লাগলো না। আমাদের অভিজ্ঞতা লাগলো না। তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু হলো। আমরা প্রযুক্তির শেষ মাথা থেকে শুরু করলাম, উচ্চতম শীর্ষ থেকে শুরু করলাম। সেটুকুই আমরা পেলাম।

চাকরি প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওরা যে আসছে তারা কি তাদের দেশ থেকে লোকজন নিয়ে আসবে? বন্দর চালাতে হলে আমাদের লোকই চালাবে। এটা থেকে গত্যন্তর নেই। আমাদের লোকদের শিখিয়ে দিলে খুব সহজে শিখে নেবে। খরচ কম। ইউরোপ থেকে শ্রমিক এনে যদি আমাদের বন্দর চালাতে হয় সেই ব্যবসা লাটে উঠবে। বন্দর বড় হবে, ক্যাপাসিটি বড় হবে। প্রযুক্তি সত্ত্বেও আগে যেখানে একজন লোক লাগতো এখন বন্দর বড় হওয়ায় পাঁচজন লাগবে। আমি বলি, আজ সই করে দিলেও পাঁচ বছর লাগবে বন্দর হিসেবে পরিচালনা করতে। ধরলাম ২০৩০-৩১। সত্যিকার ফুল স্পিডে কাজ শুরু হবে পাঁচ বছর পর। আমাদের লোকজন এর মধ্যে অভিজ্ঞ হবে। ক্রমে তাদের ওপর ভরসা করবে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, ২০৩১ সালে তারা কর্মক্ষম হয়ে যায়, সব কিছু চালু হয়ে যায় ২০৩৬ সালের মধ্যে পৃথিবীর যত দেশে যত বন্দর তারা চালায় এসব টপ কোম্পানি তাদের বহু জায়গাতে বাংলাদেশিরাই পরিচালনা করবে। তাড়াতাড়ি বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা আছে আমাদের লোকদের। দেখবে যে বন্দরে পা দাও দেখবে পরিচালনা করছে বাংলাদেশি। কোথা থেকে এসেছে? চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। চাকরি কমবে নাকি চাকরি বাড়বে। আমরা বুঝতে চাই না কেন। মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে এটা করবে। আমাকে দরখাস্ত নিয়ে ঘুরতে হবে না। যারা ভালো কাজ করবে পরিবারসহ নিয়ে যাবে। যে জায়গা খালি হবে সেখানে আরেক বাংলাদেশি চাকরি পাবে। কাজেই বিরাট একটা সুযোগ আমাদের।

তিনি বলেন, একসময় দেখা যাবে যে বন্দরেই পা দাও পরিচালনায় সব বাংলাদেশি, চাটগাঁইয়া, নোয়াখাইল্যা, বরিশাইল্যা। সব আমাদের দেশি। আমাদের সেই ক্ষমতা আছে। অবজ্ঞা করে, পাশ কাটিয়ে চলে গেলে আমাদের কপালে দুঃখ দিলাম। সবার কাছে অনুরোধ, বন্দর চেয়ারম্যানের পাশে আমরা দাঁড়াই। আমাদের বলেন, আপনি কী করতে চান। আমরা তার দলে শরিক হলাম। এ চট্টগ্রাম বন্দর দেশসেরা বন্দর হিসেবে রাখবো এ জন্য কারণ এটি সেরা না হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সেরা হবে না। এ কথাটা আমাদের বুঝতে হবে এবং তড়িৎ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে। ২০৩৬ সালের কথা বললাম, যেখানে বাংলাদেশিরাই পৃথিবীর বন্দরগুলো চালাবে। সেই দিনের আমরা অপেক্ষায় থাকলাম। আমি বিশ্বাস করি, আমরা দ্রুত চুক্তিগুলো সই করে ফেলতে পারি। কাজগুলো শুরু করতে পারি। অনেক দিন গত হয়ে গেছে। আর অপেক্ষা করার সুযোগ নেই আমাদের। যত দিন অপেক্ষা করবো আমাদের এ বন্দরে এত চাপ পড়বে একদিন কলাপস করে যাবে। সহ্য করতে পারবে না। তার চেয়ে এ অবস্থাতেই আমরা ডাক্তারদের হাতে ছেড়ে দিই। তারা আমাদের বানিয়ে দেখাক। আমরা তাদের কাছ থেকে কাজগুলো শিখে নিই বুঝে নিই। যাতে যেটুকু পেয়েছি তার চেয়ে বহুগুণ বেশি ভালো করতে পারি। যাতে বন্দর ব্যবসাতে বাংলাদেশিদের কথা সবাই সব জায়গাতে স্মরণ করে তারা জানে বন্দর কীভাবে ম্যানেজ করতে হয়। সেই গোপন রহস্য আমরা উদ্ধার করে ফেলতে পারি, বন্দর কীভাবে চালাতে হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..