বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : পবিত্র ঈদ-উল-আযহার টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি। জেলার চা-বাগান অধ্যুষিত কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল এলাকায় ঈদের ছুটি কাটাতে ছুটে এসেছেন দেশি-বিদেশি পর্যটক।
হোটেল ও রিসোর্ট মালিকরা জানিয়েছেন, ঈদের পঞ্চম দিনেও অধিকাংশ হোটেল ও রিসোর্ট “হাউজফুল” রয়েছে। পর্যটন এলাকাগুলোতে রেস্টুরেন্ট ও দোকানগুলোতেও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
দর্শনার্থীদের পছন্দের শীর্ষে কমলগঞ্জের প্রকৃতি ও ইতিহাস জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, ধলই চা বাগানে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান পর্যটকদের মন জয় করেছে। এছাড়াও রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, লক্ষ্মীনারায়ণ ও ছয়চিরী দিঘী, পদ্মছড়া লেক, মাগুরছড়া গ্যাসফিল্ড, খাসিয়া পুঞ্জি, পদ্মছড়া চা বাগান, মনিপুরী ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো ছিল দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
চট্টগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা সুমন ও সৃতি নামে এক দম্পতি বলেন,“লাউয়াছড়া সত্যিই মনমুগ্ধকর। অনেকদিন ধরে আসার ইচ্ছা ছিল, এবার সুযোগ পেলাম। আরও কয়েকদিন থাকবো। এখানের সকল স্পট ঘুরে দেখার ইচ্ছে রয়েছে।”
শ্রীমঙ্গলেও বিপুল ভিড়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
শ্রীমঙ্গল শহর ও আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চা কন্যার ভাস্কর্য, বিটিআরআই রাধানগর, সাত রঙের চা-এর দোকান ও মনিপুরী পাড়ায় পর্যটকদের ভিড়। রাস্তা জুড়ে দেখা গেছে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও বিখ্যাত চাঁদের গাড়ি। পর্যটকদের কেউ কেউ রাস্তার ধারে আনারস খাচ্ছেন, কেউ ছবি তুলছেন চা বাগানে।
সিলেট থেকে ঘুরতে আসা রাবেয়া বিলকিস চৌধুরী বলেন,“পরিবারসহ এসেছি। চা বাগান, মনিপুরি পাড়া খুব ভালো লেগেছে। আবার আসার ইচ্ছে রয়েছে।”
শ্রীমঙ্গল চামুং রেস্টুরেন্টের পরিচালক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন,“ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।”
শ্রীমঙ্গল ট্যুর অপারেটর অ্যান্ড গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম জানান,“এই ঈদে শহরের সব রিসোর্ট হাউজফুল। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশিরাও এসেছেন। শ্রীমঙ্গল নিরাপদ গন্তব্য হওয়ায় পর্যটকরা নিশ্চিন্তে ঘোরাঘুরি করছেন।” নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের তৎপরতা লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান,
“ঈদের সময় প্রতি বছরই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে, তবে এবার তুলনামূলক বেশি। আমরা সব প্রস্তুতি রেখেছি।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন,“প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”