বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারে সুনাম ধন্য দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি কেজি এন্ড হাই স্কুল। ১৯৮৯ইং প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় সাথে কেজি ওয়ান এবং কেজি টু দিয়ে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা কালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া বেগম তার পর ফরিদা মুনির হেড মাষ্টার আক্তার উদ্দিন চৌধুরী। শহরের নামীদামী অনেক লোক শিশু বাচ্চা পড়াতে দেন এই স্কুলেপ্রথম কেজি স্কুল তাই তার বারতি কদর ছিল। এই বিদ্যালয়ের ভুমি দান করেন কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
অত্যান্ত সুনাম অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠান শহরের একমাত্র কেজি স্কুল।এখানে শহরের নামীদামী মানুষ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাচ্চারা ভর্তি হয়। ইংরেজি ও বাংলা ভার্সনের অপূর্ব এক সমন্বয় ছিল এই স্কুল।
২০০৪ সালে পুরাতন জেল খানা স্তানান্তরের পর দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি কেজি এন্ড হাই স্কুল শ্রেণীর কাজ শুরু করে। এমতাবস্থায় গণপূর্ত বিভাগ থেকে ভূমি সাবেক অর্থ পরিকল্পমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান মাধ্যমে ক্রয় করা হয়।প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আসেন মায়া ওয়াহেদ তিনি তার দক্ষতা এবং কঠোর প্রশাসনিক ক্ষমতায় স্কুলের সুনাম এবং উন্নতি চোখের পড়ার মত ছিল। স্কুল বোর্ডে পর পর সেরা খেতাব পায় সরকারি হাইস্কুল ও আলী আমজদ গ্লাস হাই স্কুলে দি বার্ডসের মত স্কুলের সাথে টেক্কা দিয়ে এ প্লাস এবং লাগাতার বোর্ড রেংকিংয়ে এক দুই তিন নাম্বার স্থান পায়। ২০১০ সালে স্কুল এমপি ভূক্ত হয়। মায়া ওয়াহেদ বয়স জনিত কারণে অবসর গ্রহণ করেন ।২০১১ সালে তার পর সুরাইয়া বেগম ভারপ্রাপ্ত হেড মাষ্টার হিসাবে দায়িত্ব চালিয়ে যান তখনও স্কুলের ধারাবাহিকতা ছিল মান বজায় ছিল।
২০১৬ সালে হেড মাষ্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন রেজাউল করিম। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরু হয় স্কুলে নিম্নমুখীতা। প্রথম বছর স্কুল বোর্ড থেকে সিটকে পরে। মায়া ওয়াহেদ থাকাকালীন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষা অনুরাগী ছিলেন- ডাঃ আব্দুল আহাদ ,মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ,ইয়াওর আলী, মোহাম্মদ হারুন মিয়া এই শহরের অত্যান্ত পরিচিত মানুষরা স্কুল প্রতিষ্ঠায় ও অবদান ছিল। হেড মাষ্টারের রেজাউল করিম আসার পর তিনি দলীয় ভাবে শিক্ষা অনুরাগী আওয়ামী সভাপতি নেছারকে নিয়ে আসেন। ফ্যাসিবাদের পতনের আগের দিন পর্যন্ত নেছার আহমদ ছিলেন। কথিত হেড মাষ্টার রেজাউল করিম ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন ও ছাত্রলীগের পদ পদবী বহন করেন। তিনি যুবলীগের সহ সভাপতি মহিউদ্দিন ফাহিম চৌধুরী মিলে স্কুল কে যুবলীগের অফিসে রুপান্তর করেন। সুনামধন্য স্কুলটি আড্ডা খানায় রুপান্তর হয়। রেজাউল করিম সাথে যোগ দেন এসিস্ট্যান্ট হেড মাষ্টার লোকমান আহমেদ। শুরু হয় ভর্তি বাণিজ্য যাকে খুশি টাকার বিনিময়ে দলীয় নেতাদের বখাটে মার্কা ছেলে মেয়ে ভর্তি। বিভিন্ন তহবিল তসরুপ করেন শিক্ষা অফিসার সরকারি কর্মকর্তা ম্যানেজ করে অডিট রিপোর্ট নিজ অনুকূল রাখেন। কিন্ত শিক্ষার মান ধারাবাহিক ভাবে নিম্নমুখী হয়ে প্রতি বছর ফেইলের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গেল বছর এস এস সি তে ১৬ জন অকৃতকার্য হলে গোটা শহর টক অব দা টাউন ছিল। পত্রিকা সোস্যাল মিডিয়ায় খবর চাউর হয়।
শিক্ষার মান নিম্ন মুখী হয়ার আরেকটি কারণ হল শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য গত ফ্যাসিবাদের সময় হেড মাষ্টার রেজাউল করিম ও লোকমান আহমেদ এমপিও ভুক্ত শতভাগ বেতন তুলেন। হেড মাষ্টার সরকার থেকে চল্লিশ হাজার আবার স্কুল থেকে চল্লিশ হাজার বেতন তুলেন যা একজন জেলা প্রশাসকের বেতনের বেশী ।এভাবে বাকী এমপিও ভুক্ত স্যাররা দুইটা বেতন গ্রহণ করেন। এক ব্যক্তি দুইটা বেতন এটা কিভাবে সম্ভব? সরকারি শতভাগ বেতন গ্রহণ করে আবার স্কুল থেকে ও বেতন গ্রহণ করে এতে করে স্কুলের পুরাতন স্যাররা মনক্ষুন্ন। স্যারদের কথা হল আমরা শিক্ষক কেন আমরা অনৈক টাকা গ্রহণ করব।এই টাকা স্কুলের সন্তানদের কিন্তু রেজাউল করিম এবং লোকমান স্যার যেন এই অনৈতিক টাকার লোভ সামলাতে পারেন না। এ নিয়ে গত সদ্য বিলুপ্ত নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সময় ব্যাপক জল্ডনা- কল্পনা হয়। পরবর্তীতে স্কুলের সভাপতি জেলা প্রশাসকের বেতন সমম্বয় করবেন বলে গুঞ্জন শুনা যায়। ফ্যাসিবাদের পতনের দিকে এই আওয়ামী দোসর রেজাউল করিম কে স্কুলের ছাত্ররা পদত্যাগ করাতে বাধ্য করতে বিভিন্ন স্থানে মিটিং করে সাথে কিছু স্যাররা ছিল। কিন্তুু আওয়ামীলাীগের এই দোসর রেজাউল বিষয়টি আচ করতে পেরে ম্যানেজিং কমিটির দ্বারস্থ হন ম্যানেজিং কমিটির কিছু সদস্য ছাত্রদের সাথে কথা বলেন ও লোকমান স্যারের মাধ্যমে ছাত্রদের বাসায় বাসায় গিয়ে আকুতি মিনতি করে রেহাই পান। ফলাফল নিম্নমুখী হয়ার আর কিছু কারণ রয়েছে – প্রাইভেট যারা পড়ায় তারা তাহাদের ছাত্রদের প্রশ্ন বলে দেয় ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত বিভিন্ন ক্লাসে পাস করে কিন্তু চুড়ান্ত এসএসসি পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করতে পারে না। সংবাদিটির প্রতিবেদতের অনুসন্ধানীতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গার্জেনদের সাথে আলাপকালে জানান, ছাত্র/ছাত্রীদের মার্ক কম দিবে এই জন্য পরিচয় দিবেন না প্লিজ। এছাড়াও অনেক শিক্ষক তথ্য দিয়েছেন তারা আভ্যন্তরীণ সমস্যা হবে তাই নাম প্রকাশ করতে চান নি। আপসুস ও দুঃখ করে শিক্ষকরা বলেন স্কুলের অনেক ছাত্রছাত্রী ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার বড় বড় চাকুরী করে বুয়েট সাস্টের মত বাংলাদেশে নামকরা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পায় কিন্তু আজ আমাদের মাথায় কলংক তিলক। শিক্ষকদের অদক্ষতা আর আর উদাসীন মনোভাব আজ স্কুলের এই অবস্থা। স্কুলে দুই- চারজন শিক্ষক ছাড়া প্রায় স্কুল শিক্ষক হেড মাষ্টারের ও লোকমান স্যারের উদাসীনতা নয়-ছয় মনোভাব কে দায়ি ক্ষোভ হতাশ করেন। বড় ও ছোট দুটি স্কুল যেন ইতিহাস,সুনাম আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।
অভিযোগ উঠেছে সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্টানকে রক্ষা করতে হলে রেজাউল করিম ও লোকমান স্যার কে সরাতে হবে। পাশাপশি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে শক্ত হাতে বদলীর জন্য কাজ করতে হবে। শ্রেণীর কাজ তদারকি করতে হবে। শহরের এই নামীদামী প্রতিষ্ঠান ধংশের আগে রক্ষা করা অতিব জরুরী। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সহ সবার সু দৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।