সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: সীমান্তে মাঝেমধ্যেই চোখ রাঙায় লালফৌজ। কখনও সীমান্ত বরাবর চলে চীনা সেনার টহল, আবার কখনও এলএসি’র ধারে ওড়ে লালফৌজের কপ্টার। সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন করতে একাধিকবার আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি ভারত-চীন। চলেছে দফায়-দফায় বৈঠক। সম্প্রতি দু’দেশের দ্বাদশ বৈঠকে সীমান্ত বিবাদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু গোগরা থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়েছে ভারত ও চীন। তবুও ভরসা নেই চীনের। আর তাই পূর্ব লাদাখে ভারতীয় জওয়ানদের প্রস্তুতিতে কোনওরকম খামতি রাখতে চায় না দেশটির সেনাবাহিনী।
প্রায় এক বছর ধরে পূর্ব লাদাখে মুখোমুখি ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়ে ওঠে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে। সেখানেই অল্পের জন্য যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ।
কিন্তু পরবর্তীতে একাধিকবার বৈঠকে বসলেও বারংবার ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে চলেছে চীনের সেনা। আর তাই সদা সতর্ক ভারতীয় সেনা। সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, “এক বছর আগে চীনা আগ্রাসন রুখতে অপরাশেন স্নো লেপার্ড শুরু করেছিল ভারতীয় সেনা। পূর্ব লাদাখের ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় একবছরের বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছে টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক এবং টি-৭২ অজয় ট্যাঙ্কগুলি। প্রায় -৪৫ ডিগ্রি ঠাণ্ডাও সেগুলিকে কাবু করতে পারেনি। এই কঠিন আবহাওয়ায় আমরা নিজেদের কর্মক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে নিতে পেরেছি।”
ইতিমধ্যে চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে মহড়াও সেরেছে এই ভীষ্ম ট্যাঙ্ক। শুধু তাই নয়, শীতকালে ট্যাঙ্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কারণ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় সেগুলির যন্ত্রপাতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এদিকে, লাদাখে চীন সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের হাতে অত্যাধুনিক আমেরিকান রাইফেল এবং সুইস পিস্তল তুলে দেওয়া হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, যে ধরনের রাইফেল এবং পিস্তল ফরওয়ার্ড বেসে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তা পার্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধের অত্যন্ত উপযোগী। চীনকে চাপে রাখতেই সেনাবাহিনী যে এই অস্ত্রের সম্ভার বাড়াচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, অত্যাধুনিক আমেরিকান সিগ সওয়ার ৭১৬ রাইফেল তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনার হাতে। সঙ্গে রয়েছে সুইস এমপি-৯ পিস্তল। রাইফেলগুলির ফায়ারিং রেঞ্জ প্রায় ৫০০ মিটার। যা চিনা আগ্রাসন প্রতিহত করতে অত্যন্ত কার্যকরী।
ভারতীয় সেনা আরও জানিয়েছে, নেগেভ লাইট মেশিন গান, টেভর-২১ এবং একে-৪৭ রাইফেলও তুলে দেওয়া হয়েছে এই এলাকায় মোতায়েন জওয়ানদের হাতে। রয়েছে পোর্টেবল এয়ার মিসাইল সিস্টেমও। এছাড়া মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সেনার গরুড় কম্যান্ডোবাহিনীকেও। সবমিলিয়ে লাদাখে পরিস্থিতি কিন্তু আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।