বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখা নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রী কলেজের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বি,এ (সম্মান) প্রথমবর্ষের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী হোছনে আরা খানম তানিয়া রেজিষ্ট্রেশন বিড়ম্বনায় অটোপাস বঞ্চিত। গত মার্চ মাসে প্রথমবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে কলেজে গিয়ে জানতে পারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে তার রেজিষ্ট্রেশন কার্ড আসেনি। অফিসিয়েল জটিলতায় ফরম পূরণ করতে না পারায় আটকে যায় তানিয়ার অটোপাস। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে মেধাবী এ শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন মাঝপথে থেমে যাওয়ার দায় কার, কলেজ কর্তৃপক্ষের নাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। অফিসিয়েল ভুলের ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গত ৭ আগস্ট ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, দরিদ্র শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবার বোঝা কমাতে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন নিয়ে নারীশিক্ষা একাডেমী ডিগ্রী কলেজে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স প্রথমবর্ষে ভর্তি হয় মেধাবী শিক্ষার্থী হোছনে আরা খানম তানিয়া। ওই শিক্ষাবর্ষে একই বিয়য়ে তানিয়াসহ ৪৫ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি নিশ্চায়ন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তালিকা প্রকাশ করে। তার নিশ্চায়ন তালিকার রোল-৫৩৪৯১৪৬। সহপাঠিদের সাথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে কলেজে গিয়ে যথারীতি সে ক্লাস করেছে। প্রথমবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গেলে দেখা যায় ৪৪ জন শিক্ষার্থীর রেজিষ্ট্রেশন কার্ড এসেছে, তানিয়ার রেজি:কার্ড কলেজে পৌঁছেনি। এদিকে ফরম পূরণের শেষ দিন ঘনিয়ে আসলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে দেয়নি কোনো সঠিক জবাব কিংবা শান্তনা। এতে বাড়তে থাকে তানিয়ার দুশ্চিন্তা। হোছনে আরা খানম তানিয়া অভিযোগ করেন, নানা প্রতিকুলতার মধ্যে ফিস দিয়ে অনার্সে ভর্তি হলাম, ক্লাস করলাম ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় সবার রেজি:কার্ড আসলেও অদৃশ্য কারণে আমারটা আসেনি। পাগলের মতো অন্তত ৩০ বার কলেজের বিভিন্ন জনের কাছে ধর্না দিলাম, সমাধানের শুধু আশ্বাসই দিলেন। অবশেষে বললেন আমি ছাত্রীই নই। সহপাঠীরা অটোপাস করে এখন দ্বিতীয় বর্ষে। আমার শিক্ষা জীবন বন্ধের উপক্রম। কার দোষে আমার এমন সর্বনাশ, উচ্চ শিক্ষা
অর্জনের স্বপ্নভঙ্গ। অবশেষে করুণ কাহিনীর ব্যাপারে ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি।
ইউএনও ও কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, রেজিষ্ট্রেশন না হওয়া এবং ফলাফল না পাওয়ায় ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে চিঠি দিয়ে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীর শিক্ষাবর্ষ নষ্ট এবং শিক্ষার্থীকে কোনো ধরণের অতিরিক্ত ব্যয় বহন
করতে না হয়।
অধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিন জানান, এটা পূর্ববর্তী অধ্যক্ষের সময়কালের ঘটনা। কলেজ থেকে ৪৫ জনের তালিকা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু ৪৪ জনের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড আসে। একজনেরটা আসেনি। এব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরাবরে তাৎক্ষণিক চিঠি পাঠানো হলেও রেসপন্স করা হয়নি।
ইউএনও মহোদয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় শিক্ষার্থীর অভিভাবককে নিয়ে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছেন।