রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
সৈয়দ আশফাক তানভীর :: কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে একটি সরকারি রাস্তার অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সালিশ বৈঠকে কোন সমাধান না হওয়ায় উভয় পক্ষই থানায় পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন। দুই পক্ষই গ্রামের মানুষের ব্যবহারের রাস্তা প্রশস্তকরণে নিজেদের দখলে থাকা সড়কের অংশ ছাড় না দিয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করায় বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে সেজন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকা ও রাস্তার পাশে কোন ধরণের নির্মাণকাজ এবং দখল কর্মকাÐ থেকে বিরত থাকতে বলা হয় ।
সরেজমিন পরিদর্শন পুলিশ ও দুই পক্ষের অভিযোগ থেকে জানা যায়, সরকারি রাস্তার অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের দেওগাঁও গ্রামের হারিছ মিয়া, লাল মিয়া ও গুলাইছ মিয়াদের সাথে একই গ্রামের বাসিন্দা বাসিন্দা লেছু মিয়া, মখলিছ মিয়াদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিগণ। কিন্তু বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মানায় বিষয়টি অমিমাংসিত রয়ে যায়। সম্প্রতি হারিছ মিয়ারা তাঁদের পাকা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে ২১ আগস্ট শনিবার রাতে লেছু মিয়াসহ অপর পক্ষ প্রাচীর নির্মাণে বাঁধা দেন এবং ভাংচুর চালান। এ নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ বিষয়ে হারিছ মিয়া জানান, রাস্তা প্রশস্ত হোক ও রাস্তার অবস্থান কাগজপত্র অনুযায়ী হোক সেটা চাই। আমরা আমাদের নিজস্ব জায়গার ওপর দেয়াল নির্মাণ করেছি। জায়গা যে আমাদের সেটার বৈধ কাগজাদিও রয়েছে। দির্ঘদিন ধরে রাস্তার অপর পাশের জমির মালিক লেছু মিয়া ও মখলিছ মিয়া গংরা ইর্ষান্বিত হয়ে জোরপূর্বক শুধু আমাদের জায়গার ওপর দিয়ে সরকারি রাস্তা স্থাপনের পায়তারা করছেন। রাস্তার অবস্থান লেছু মিয়া গংদের দখলে রয়েছে। তাঁরা যে জমি নিজের বলে দাবি করছেন সেটা রেকর্ড অনুযায়ী সরকারি রাস্তা। নিজেদের দখল বাঁচাতে তাঁরা আমাদের নিজস্ব জায়গা রাস্তার জায়গা দাবি করে বাড়ির দেয়াল ভাঙচুর চালায় ও হুমকি এবং উল্টো থানায় মিথ্যা অভিযোগ দেয়। বিষয়টি শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তির জন্য আমি প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
মখলিছ মিয়া ও লেছু মিয়া জানান, সরকারি রাস্তা হলেও হারিছ মিয়া ও তার সহযোগিরা রাস্তাটি কেটে কেটে অর্ধেক তাদের বাড়ির সীমানায় মিশিয়ে ফেলেছে। রাস্তাটি ইটসোলিংয়ের জন্য উদ্যোগ নেয়া হলে হারিছ মিয়া বাড়ির সীমানা প্রাচীর পাকা করার জন্য নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হলে রাস্তাটি ১৪ ফুট প্রশস্থ করা সম্ভব হবে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কিবরিয়া হোসেন খোকন ও এলাকার বাসিন্দা জুবের আহমদ জুয়েল জানান, দেওগাঁও রাস্তাটি প্রসস্থকরণে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের দখলবাজীতে এটির সংস্কার করা যাচ্ছেনা। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থান এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের অন্য বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। বিষয়টি জরিপের মাধ্যমে রাস্তার অবস্থান নির্ধারণ করলে বিষয়টি সমাধান হবে।
পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান জানান, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু তাঁরা একমত না হওয়া নিষ্পত্তি হয়নি। আমরা আবারো রাস্তার অবস্থান জরিপ করে নির্ধারণ করে দুই পক্ষকে নিয়েই ব্যাপরটি সমাধানের উদ্যোগ নিবো।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় জানান, উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আইন শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না ঘটে সেজন্য উভয়পক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।