সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
বিয়ানীাবাজর প্রতিনিধি : বড়লেখা ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত সুনাই নদীতে ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির একটি মাছ। বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের পাথারিপাড়া গ্রামের সৌখিন মাছ শিকারি আব্দুল আলিমের জালে সুনাই নদীর সারোপার বাজারের সাইটে মঙ্গলবার বিকেলে প্রায় ৫০০ গ্রাম ওজনের মধ্যম আকৃতির এ বিরল মাছটি ধরা পড়ে। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা মাছটি দেখার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত স্থানীয় বাজারে ভিড় জমান। মাছটি দেখতে আসা তারেক মাহমুদ বলেন, অসম্ভব সুন্দর দেখতে মাছটি এর আগে কোথাও তিনি দেখেননি।
ইন্টারনেট ঘেটে জানা যায়, আকৃতি গঠনে এবং রংয়ে মাছটি সাকার প্রজাতির মাছ, এটি সাধারনত বাংলাদেশে অনেক বিরল। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের জলাশয়ে এ মাছটি ধরা পড়ে।
বড়লেখা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে প্রায়ই এই মাছটি নিয়ে খবর ছাপা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলার নদী, খাল-বিল, হাওর এমনকি বড় পুকুরেও মাছটি ধরা পড়ার খবর পাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশের স্থানীয় মাছ নয়, মূলত এটাই খবর হওয়ার প্রধান কারণ।
মাছটির নাম ‘সাকার মাউথ ক্যাট ফিস’। এটির আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাঞ্চলের দেশগুলো, যেমন-ব্রাজিল, গায়ানা, সুরিনাম, ত্রিনিদাদ এবং ট্যোবাগো। এই মাছটি জলাশয়ের তলদেশের খাবার চুষে বা টেনে তুলে খায়। আর একারণে এর এমন নাম। এবং নিচের দিক থেকে দেখলে স্বচ্ছ পর্দা বা পেটের ভিতরের প্রত্যঙ্গগুলো দেখা যায়। মাছটিকে কমন প্লিকো এবং হাইপোস্টোমাস প্লিকোস্টোমাস নামেও ডাকা হয়।
মাছটির দেহে মাংসের পরিমাণ দেহের মোট ওজনের তুলনায় খুবই কম হওয়ায় এবং বৃদ্ধি কম হওয়ায় এটি খাওয়ার মাছ হিসেবে তেমন সমাদৃত হয়না। গায়ে সুন্দও ডোরাকাটা দাগ এবং ব্যতিক্রমী ভঙ্গিমায় খাবার গ্রহণের কারণে অ্যাকুরিয়ামে শোভাবর্ধক মাছ হিসেবেই এটি জনপ্রিয়।
মাছটি কিভাবে বাংলাদেশে এসেছে তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে ধারণা করা হয় অ্যাকুরিয়ামের জন্য মাছটি বাংলাদেশে আনা হয়েছিল এবং সেখান থেকেই কোনভাবে এটি বাংলাদেশের জলাশয়ে জায়গা করে নিয়েছে। দেখতে সুন্দর হলেও মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে এটি বাংলাদেশের স্থানীয় মাছের এবং পরিবেশের জন্য ধীরে ধীরে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এটি বাংলাদেশের জলাশয়ে চাষ না করাই উত্তম।
সাকার ফিস হালাল কিনা বা খাওয়া যাবে কিনা এটা নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। মাছটি হালাল এবং বিষাক্ত নয়, তাই খাওয়া যায়। সাধারণত দাড়ি বা এন্টেনা বিশিষ্ট এবং পিঠের উপর তীক্ষè পাখনা বিশিষ্ট মাছগুলোকে ক্যাটফিস বলা হয়। এদের খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া অন্য মাছের থেকে আলাদা হয়।