1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২২০ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক: সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ১৪ জন ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।ইতিমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়ামিন বাতেন তার তিনটি প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তার মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি তাতে সাড়া দেননি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

চুল এত বড় কেন?’

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিবিসি কথা বলেছে। তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেছেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর তারও চুল কেটে দেওয়া হয়। তিনি তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেছেন, গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। তাতে দুটি পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি না থাকায়, শিক্ষার্থীরা বিভাগে এর প্রতিবাদ করে। আনুষ্ঠানিকভাবে কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি স্মারকলিপি লিখেও শেষে চেয়ারম্যানের ভয়ে সেটি জমা দেয়নি শিক্ষার্থীরা।এর মধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর রবিবার বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষার হলে ঢোকার মুখে চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলছিলেন কারা আন্দোলন করতে চেয়েছে তিনি জানেন।‘এরপর হঠাৎ কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উনি একজনের চুলের মুঠি ধরে জিজ্ঞেস করেন- চুল এত বড় কেন? এরপর চুল হাতের মুঠায় ধরা যায় যাদের এরকম ১৪ জনকে আলাদা করে পরীক্ষার হলের বাইরে দাঁড় করানো হয়।এর মধ্যে বিভাগের একজন কর্মচারীকে কাঁচি নিয়ে আসতে বলা হয়।’ বলেন ওই ছাত্র।ছাত্রের ভাষ্য- ‘আমাদের যাদের দাঁড় করানো হইছিল, সবার চুল মুঠিতে ধরে কেটে দেন ম্যাডাম। কারো এক মুঠি, কারো আরও বেশি।এই ছাত্র বলছিলেন, তার মাথায় তিন জায়গায় এবড়োথেবড়ো করে চুল কেটে দেওয়া হয়েছে।

কথা বলতে বলতে ওই শিক্ষার্থী কেঁদে ফেলেন, তিনি বলেন, ‘গ্রামে শুনছি অনৈতিক কাজ করলে চুল এইভাবে কেটে দেয়। আমি সবাইকে কী বলবো, বলতে পারেন?’তিনি জানিয়েছেন এরপরও শিক্ষার্থীরা পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা দিতে যায়।‘কয়েকজন পরীক্ষা দিতে চাইছিল না, আমরা বিভাগের নিচে বসেছিলাম। কিন্তু উনি (চেয়ারম্যান) এসে খুব বকাবকি শুরু করেন, কেন পরীক্ষা বাদ দিয়ে নিচে বসে আছি সেজন্যে। এই বকা পরীক্ষার হলেও চলতে থাকে।’-বলেন এই শিক্ষার্থী।এবড়োথেবড়ো করে কাটা চুল অনেকে এরপর নাপিতের কাছে কামিয়ে ফেলেন এবং তার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি এরপর সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই মূলত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন এর আগেও শিক্ষার্থীদের ধমকাধমকি, হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

তদন্ত কমিটি কী বলছে? শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ২৮ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং ওইদিন থেকেই পাঁচ সদস্যের কমিটি কাজ শুরু করেছে।কমিটির প্রধান রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লায়লা ফেরদৌস বিবিসিকে বলেছেন, ‘ঘটনার পর যখন ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে তখন ওই (অভিযুক্ত) শিক্ষকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, সেখানে তিনি ঘটনা স্বীকার করেছিলেন এবং দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু এখন তো তিনি সরাসরি অস্বীকার করছেন সব অভিযোগ।’

অধ্যাপক ফেরদৌস বলেছেন, তদন্ত কমিটি, চুল কেটে দেওয়া শিক্ষার্থী, ঘটনার সময় পরীক্ষার হলে উপস্থিত ওই বিভাগের অপর দুইজন শিক্ষক এবং কর্মচারী-সবার সাথে কথা বলেছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা সিসিটিভি ফুটেজের জন্য অপেক্ষা করছি। যাতে সত্যিকারের ঘটনার প্রমাণ জানতে পারবো আমরা এবং তখন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী বলছে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল লতিফ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারের মধ্যে যা ছিল তা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এখন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তা ঠিক করা হবে।

এদিকে, যার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং যার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা, সেই সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে বিবিসি একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে কথা বলতে পারেনি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই পদ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় ২০১৭ সালের মে মাসে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট পাঁচটি বিভাগ রয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..