1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বড়লেখায় চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগে প্রবাসফেরৎ বৃদ্ধাকে হত্যা, ছেলেসহ সেই প্রতারক গৃহকর্মীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৬৯ বার পঠিত

বড়লেখা প্রতিনিধি: বড়লেখায় গৃহকর্মী সেজে চাকরি নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগে গৃহকর্ত্রী আমেরিকা ফেরৎ বৃদ্ধা হাজেরা বেগমকে (৮৫) হত্যা, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটকারী সেই প্রতারক গৃহকর্মী ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু ওরফে বেঙ্গি (৬০) ও তার ছেলে জয়নাল হোসেনকে (৩৫) অবশেষে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনার প্রায় সাড়ে ৮ মাস পর বুধবার রাত ১০টায় ঢাকার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার মাহমুদপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে প্রতারক মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়। ভিংরাজ বিবি বেঙ্গাই হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মৃত আব্দুল হামিদের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১৪ জানুয়ারি ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু বেঙ্গি নিজেকে মরিয়ম (জয়নব) বেগম পরিচয় দিয়ে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের বড়থল গ্রামের আমেরিকা ফেরৎ বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের বাড়িতে নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ চান। ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু স্বামী-সন্তান কেউ নেই বলায় হাজেরা বেগম ও তার ছেলে সেলিম আহমদের দয়া হয়। মানবিক কারণে তারা তাকে গৃহস্থালী কাজের চাকরি দেন। বৃদ্ধা হাজেরা বেগম দেশে বসবাস করলেও তার ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। অপর ছেলে সেলিম আহমদ স্ত্রী-সন্তানসহ বড়থল গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বার্ধক্যজনিত কারণে বৃদ্ধা হাজেরা বেগম দেশে এসে ওই ছেলের সঙ্গে বসবাস করছেন। গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে হাজেরা বেগমের ছেলে সেলিম আহমদ বৃদ্ধা মা ও গৃহকর্মী ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু বেঙ্গিকে বাড়িতে রেখে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে বড়লেখায় যান। সন্ধ্যার পর তিনি বাড়ি ফিরে মাকে অজ্ঞান অবস্থায় খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় গৃহকর্মী ভিংরাজ বিবিকে কোথাও খুঁজে পাননি। পরে দেখেন ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো এবং তার মায়ের পরণে থাকা এবং ঘরের বিভিন্ন আলমারীতে থাকা প্রয় ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে ওই গৃহকর্মী পালিয়ে গেছে।

এদিকে অচেতন অবস্থায় গৃহকর্ত্রী হাজেরা বেগমকে উদ্ধার করে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপণ হওয়ায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় ১ মাস মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ২০ ফেব্রæয়ারি চিকিৎসাধিক অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনায় হাজেরা বেগমের ছেলে সেলিম আহমদ বড়লেখা থানায় মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানে নামে পুলিশ। থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদারের দিক নির্দেশনায় প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রত কুমার দাস আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করেন। এরপর বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার মাহমুদপুর এলাকায় ফতুল্লাহ থানা পুলিশের সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে ভাড়া বাসা থেকে বড়লেখা থানা পুলিশ প্রতারক গৃহকর্মী ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু বেঙ্গি ও তার ছেলে জয়নাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত বৃদ্ধার ছেলে ও মামলার বাদি সেলিম আহমদ জানান, তারা ভাবতেও পারেননি এভাবে ভুয়া নাম-ঠিকানা বলে অনুনয়-বিনয় করে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সুযোগ বুঝে সবকিছু নিয়ে উধাও হবে। ডাকাতি করতে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে সে আমার মাকে হত্যা করেছে। চিকিৎসকরা বলছেন মায়ের শরীরে উচ্চ মাত্রার চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগের কারণে তিনি মারা গেছেন। আমার মায়ের নির্মম ঘটনাটি পত্রিকায় ছাপা হলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি পোষ্ট হলে অনেকেই ওই মহিলার একই কায়দায় বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণার কাহিনী তুলে ধরেন। ওই নারী বড় একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি পুলিশের প্রতি এ সিন্ডিকেটের অপরাপর সদস্যদের খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করার দাবী জানান।

বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত কুমার দাস জানান, ভিংরাজ বিবি ওরফে বেঙ্গাই বানু বেঙ্গি ও তার ছেলে জয়নাল হোসেনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পাঠালে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতকে তারা জানিয়েছেন, পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে গৃহকর্ত্রী হাজেরা বেগমকে তারা অজ্ঞান করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। জবানবন্দিগ্রহণ শেষে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..