1. newsmkp@gmail.com : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. info@fxdailyinfo.com : admi2017 :
  3. admin@mkantho.com : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মুসলিম মিল্লাতের নবজাগরণে উজ্জীবিত হওয়ার নিয়ামক

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১
  • ৪১৯ বার পঠিত

আফতাব চৌধুরী
বছর ঘুরে আবার এল ঈদে মিলাদুন্নবীর ঈদ। রোজার ঈদ আর ক্বোরবানীর ঈদের আনন্দকে ছাপিয়ে যায় সর্বশ্রেষ্ঠ এ ঈদের আনন্দ। কারণ এ দু’টো ঈদ আমরা পেয়েছি যাঁর বদৌলতে, মহান সে সত্তা প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার শুভাগমন উপলক্ষে পালিত হয় মহান এ ঈদের দিন। বারই রবিউল আউয়ালÑবিশ্ব মুসলিমের মাঝে আনয়ন করে নব জাগরণ।
অমানিশার ঘোর অন্ধকার যখন গোটা বিশ্বকে ছেয়ে ফেলেছিল, মানব সমাজে মনুষ্যত্বর গুণাবলীর অভাব বড্ড প্রকট হয়ে ধরা দিচ্ছেল। বিশেষ করে আরব জাহানে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এক কথায় সর্ব পর্যায়ে অমানাবকতার জয়-জয়কার চলছিল,আদিম উদ্দামতায় মত্ত ছিল জনসাধারণ, নীতি-নৈতিকতার বালাই ছিল না মোটেই, সর্বত্র বিরাজ করছিল অস্থিরতা-অরাজকতা, শান্তি ছিলনা কোথাও, এমনি এক সময় সন্ধিক্ষণে বিশ্বের সকল মানুষের মুক্তির শাশ্বত বারতা নিয়ে পৃথিবীতে শুভাগমন করেন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এক-এক করে শত সহস্র, লক্ষ মানুষ মানুষের মনুষত্বকে জানল, চিনল নিজেকে। পরম আরাধ্য, উপাস্য স্রষ্টার একক সত্তাকে অনুভব করতে পারল। ধীরে ধীরে পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম সর্বদিকে অগণিত অসংখ্য মানুষের খোদাদ্রোহী অশান্ত-অস্থির মন পদানত হল প্রিয়নবীর ঐশী শক্তির সামনে। নূরের আলোকচ্ছটায় ভেসে গেল সব। সাহাবী বেশে সোনার মানুষে পরিণত হলেন তাঁরা। আবু বকর (রাঃ)-সিদ্দীক হলেন, ওমর (রাঃ) হলেনÑফারুকে আজম, ওসমান (রাঃ)-জিনুরাঈন হলেন আর শেরে খোদা হয়ে গেলেন হযরত আলী (রাঃ)। অর্ধ পৃথিবী শাসন করল মুসলমানরা ইসলামী আইনের আশ্রয়ে। শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করল তখন। পরমাকাক্সিক্ষত সে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)। পৃথিবীর জমীনে তৌহিদ-রেসালতের প্রচার-প্রসার ও প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তদীয় রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। আর সে সাথে হক্ব বা সত্য অর্থাৎ কুরআনুল কারীমও অবতীর্ণ করেছেন মুক্তির আসল পথ দেখাতে।
এ কথা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, আমরা পৃথিবীতে পূর্ণতা পেতে এসেছি, আর রাসূলে কারীম (স.) এসেছেন আমাদেরকে পূর্ণতা দিতে। আর তাঁকে নবী ও রাসূল হিসাবে প্রস্তুত অবস্থায় প্রেরণ করা হয়েছে। আর এ কারণেই কালামুল্লাহ শরীফ তাঁর শুভাগমনের বর্ণনায় “জা-আ, আরছালা, বা-ছা” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যা নবী ও রাসূল হিসাবে আগমন ও প্রেরিত হওয়ার বিষয়কেই সাব্যস্ত করে।
এই মহা-সত্য ধর্ম ইসলামের অনুসারীদের অনুসরণের জন্য আদর্শের মূর্ত প্রতীক হচ্ছেন স্বয়ং হুজুর আকরাম (স.)। মা আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) রাসূলে খোদা (স)’র চরিত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে এরশাদ করেছেনÑ‘ক্বোরআনুল কারীমই হচ্ছে প্রিয়নবী চরিত্র।’ কালামুল্লাহ শরীফে ঘোষিত হয়েছেÑ‘অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (স.)’র মাঝে তোমাদের জন্য নিহিত রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। রাসূলুল্লাহ (স)’র রেখে যাওয়া দু’টো মহাসম্পদ কুরআনুল কারীম আর সুন্নাতে রাসূল তথা হাদীসে পাককে মানুষ যতদিন আঁকড়ে থেকেছিল, মুক্তির ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে প্রতিক্ষণে। সোনালী সে দিনগুলোতে আদর্শ আর নৈতিকতার অটুট শক্তিই শক্তিমান করেছে তাঁদেরকে। কোন গোমরাহী বাতুলতা চুল পরিমাণেও স্পর্শ করতে পারেনি। স্বয়ং আল্লাহর রাসূল ঘোষণা দিয়েছেন ‘কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাত রাসূলুল্লাহকে যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আঁকড়ে থাকবে, ততক্ষণ গোমরাহ হবে না।’ অস্ত্র-শস্ত্রের ঝনঝনানিতে ইসলাম কায়েম হয়নি, কায়েম হয়েছিল আদর্শিক-নৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। কিন্তু আজ মুসলমানদের সেই দিন আর নেই। হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে, এমনকি মুছে যাচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকেও। ক্বওমের নক্বীব যাদের হওয়ার কথা, তাদের কেউ ইসলামকে নিয়েছে অস্ত্রের মহড়ায় ক্ষমতারোহণের হাতিয়ার হিসাবে। আবার কেউ নিয়েছে গন্ডীবদ্ধ জিন্দেগীর অলস-উদাসীন সময় অতিক্রমের বাহন হিসাবে। হায়রে মূঢ়তা! কারো কাছে ইসলাম আফিম বিশেষ, আবার কারো কাছে সা¤প্রদায়িকতাÑপ্রতিক্রিয়াশীলতা, আর সাধারণ মানুষ বহুধা বিভক্ত হয়ে নেতৃত্বের অনুসরণ করেই মরেছে। শান্তি মিলেনি, মুক্তি আসেনি। চরম উৎকর্ষিত সভ্যতা, বিস্ময়কর বিজ্ঞান জগত কিছুই পারেনি আকাক্সিক্ষত পরিবর্তন আনতে। লক্ষ-কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার কতটুকু সংরক্ষিত হয়, কিংবা আনায়াসে খর্ব করা হয় নূন্যতম চাওয়া-পাওয়া-চাহিদা, তার খতিয়ান আমাদের নিজেদের চেয়ে বেশী তো আর কেউ জানার কথা নয়। আমার এক ভাইয়ের, এক বোনের, আমার পরিবারের, প্রতিবেশীর, সমাজের প্রতিজন লোকের, আমার ও আমাদের কর্তৃত্ব আর শাসনাধীন আপামর জনসাধারণের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা সর্বোপরি নাগরিক নিরাপত্তা প্রদানের মত একান্ত মানবিক ও যোক্তিক অধিকার কি আমরা সংরক্ষণ করতে পেরেছি?
এসব চিন্তা করার সময়ই বা কোথায়। লোভ-লালসা, ক্ষমতার দর্প আর মদমত্ততা আমাদের অতীতকে ভুলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আর কত! বিবেকের দরজায় মনুষ্যত্ববোধের করাঘাত আর তার প্রতিধ্বনিও কমে আসবে ধীরে ধীরে।
বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের মুসলমানদেরকে নিজেদের অতীত কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করে সার্বিক জীবন ব্যবস্থায় নীতিগত পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে। বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে আর মুসলমানদেরকে নিজেদের মধ্যকার সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে এক সুরে-এক আওয়াজে কথা বলতে হবে। এ মুহূর্তে এর চেয়ে বড় করণীয় আর কিই-বা হতে পারে। এবারের ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)’র প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকার এটাই হউক যে, আমরা মহানবী (স.)’র জীবনাদর্শের অনুসরণ ও অনুকরণে আমাদের সার্বিক জীবন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাব। অতীতের সোনালী সেই ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনব আমরা। আমাদেরকেই কাঁধে তুলে নিতে হবে নিজেকে-গোটা মিল্লাতকে হেফাজতের দায়িত্ব। সে তওফিক আল্লাহ আমাদের দান করুন-এই কামনা করি।
সাংবাদিক-কলামিস্ট

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..