রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করলেন দেশটির সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরি। বিন সালমান ২০১৪ সালে ‘বিষাক্ত আংটি’ ব্যবহার করে তৎকালীন বাদশাহ আবদুল্লাহকে খুন করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের এক অনুষ্ঠানে তিনি সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনেন।
সাদ আল জাবরি সৌদির একজন সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সন্ত্রাস দমন প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখেন। তিনি ৬০ মিনিটের এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এমন দাবি করেন।
শুধু তা-ই নয়, যুবরাজের দুর্নীতির তথ্য যাতে ফাঁস না হয়, এ জন্য চার বছর আগে তাকেও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে দাবি করেন জাবরি।
জাবরির কথায়, মোহাম্মদ বিন নায়েফকে তখন বিন সালমান বলেছিলেন, ‘আমি বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করতে চাই। রাশিয়া থেকে একটি বিষাক্ত আংটি পেয়েছি। তার সঙ্গে শুধু করমর্দন করলেই যথেষ্ট। তিনি শেষ হয়ে যাবেন।’
জাবরি বলেন, ‘তিনি (বিন সালমান) বড়াই করেও এটি বলতে পারেন। তবে তিনি এটি বলেছেন এবং আমরা এ কথাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলাম।’
তিনি জানান, বৈঠকটি রাজদরবারে গোপনীয়তার সঙ্গে হয়েছিল। তবে গোপনে বৈঠকটি ভিডিও করা হয় এবং ভিডিও রেকর্ডিংয়ের দুটি কপি কোথায় আছে তা তিনি জানেন।
চার বছর আগেই সৌদি আরবের শাসনক্ষমতায় আসা যুবরাজ সালমান সম্পর্কে জাবরি বলেন, দেশের ডি ফ্যাক্টো শাসক এবং বাদশাহ সালমানের ছেলে ‘মধ্যপ্রাচ্যে অসীম সম্পদের অধিকারী। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ, খুনি, নিজ দেশের জনগণ, আমেরিকা এবং সারাবিশ্বের জন্যই তিনি হুমকি।’
২০১৫ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ। তার সৎ ভাই এবং মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা সালমান বিন আব্দুল আজিজ তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। মোহাম্মদ বিন নায়েফকে তখন ক্রাউন প্রিন্স করেছিলেন বাদশাহ সালমান। এর পর ২০১৭ সালে বিন নায়েফের জায়গায় ক্রাউন প্রিন্স হিসাবে স্থলাভিষিক্ত হন মোহাম্মদ বিন সালমান।
বিন নায়েফ তখন তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদও খোয়ান এবং গৃহবন্দি হন বলে শোনা যায়। এর পর গত বছর কয়েকটি অভিযোগে তিনি আটকও হন। বিবিসি জানায়, নায়েফ উৎখাত হওয়ার পর সাদ আল-জাবরি কানাডায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশুগজি তুরস্কে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি আরবের এজেন্টদের হাতে খুন হওয়ার কয়েকদিন পর জাবরি এ সতর্কবার্তা পান।
জাবরির অভিযোগ, ছয় সদস্যের একটি দল কানাডার অটোয়া বিমানবন্দরে নেমেছিল। কিন্তু তাদের কাছে ডিএনএ বিশ্লেষণের সন্দেহজনক কিছু যন্ত্রপাতি থাকার কারণে কাস্টমস কর্মকর্তারা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।