সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণের এক বছর ৮মাস পার করলো। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে কয়েকদফা কড়া লকডাউনও দেওয়া হয়। সংক্রমণ কমার পর শিথিল করা হয় লকডাউন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে মানুষ। তবে যেকোনও সময় করোনা ভয়াবহ রূপ ধরণ করতে পারে এমন আশঙ্কা আছে। এ জন্য হাট-বাজার, গণপরিবহনসহ সব জায়গায় সরকারিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথাও বলা হচ্ছে। কিন্তু সবখানেই তা উপেক্ষা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সাধারণ মানুষ যেন করোনাকে ভুলতে বসেছে। করোনা যেন আবারও ভয়াবহ আকারে ফিরে না আসে এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মৌণভীবাজার জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে সরজমিনে দেখা যায়, ক্রেতারা গায়ে গা ঘেঁষে চলছেন। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বাজার করছেন। একই দ্রব্য একাধিক ক্রেতা ছুঁয়ে দেখছেন। একজনের টাকা একাধিক মানুষের হাত ঘুরে যাওয়াটাও স্বাভাবিক চিত্রে পরিণত হয়েছে। বাজারে আসা বেশিরভাগ ক্রেতাই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক নেই। কেউ কেউ পরে এলেও তা থুতনিতে লাগিয়ে রেখেছেন। কেউবা হাতের ভাঁজে মাস্ক নিয়ে ঘুরছেন।
বাজারে আসা ক্রেতাদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, তাদের বেশিরভাই বিশ্বাস করেন না যে করোনা এখনও আছে। থাকলেও প্রভাব কম। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আগ্রহ নেই। অনেকেই সচেতন থাকাটাকে (মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার) অতিরিক্ত ঝামেলা মনে করেন।
মৌলভীবাজার শহরের ব্যস্ততম পশ্চিমবাজারে সবজি বিক্রি করেন মাহির,তাপস,খছরু, আলম। তিনি বলেন, ‘দোকানে দৈনিক শত শত ক্রেতা আসেন। বেশিরভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক থাকে না। মানেন না স্বাস্থ্যবিধি। আরেক শবজি বিক্রেতা আকাশ চৌধুরী বলেন, ‘এই বাজারে শত শত দোকান। কোনও দোকানিই স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। মাস্ক পরে কথা বলতে সমস্যা হয় তাদের। বাজার করতে আসা লোকদের মধ্যেও বিক্রেতাদের উদাসিনতা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।
ক্রেতারা অনেকেই রাসেল বলেন, ‘বাজার তো করতেই হবে। আমার একার পক্ষে তো স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব নয়। আমি একা মেনেও লাভ নেই। এসে এই ভিড়ের মধ্যেই বাজার করতে হবে। চৌমুহনা বাজারে আসা সিতারা/আয়শা বেগম বলেন, ‘৯ দিন পর বাজারে আসছি। সহজে আসতে চাই না। আমি তো মাস্ক নিয়ে আসছি, অনেকেই মাস্ক নিয়ে আসে না। এটা যার যার বিষয়। মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার পেছনে মূল কারণ কী জানতে চাইলে ডা: একেএম জিলুল হক বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানাটা মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে না পারার মূল কারণ আমরা মানুষের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছি। যেভাবে বোঝালে মানুষ বুঝবে সেভাবে বোঝাতে পারিনি। এ ক্ষেত্রে অঞ্চলভেদে নিজস্ব ভাষা এবং মানুষের প্রকৃতি বুঝে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘করোনা এক ধাপেই নির্মূল হওয়ার নয়। এটি কমবে, আবার বাড়বে। এ ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। প্রতিনিয়ত সচেতন থাকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবার টিকা প্রদান সম্পন্ন করতে পারলে এক সময় এর প্রভাব শেষ হয়ে যাবে।