শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশী এখনো অবস্থান করছে। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবেশ ঠেকাতে সেখানে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে পোল্যান্ড সরকার। সীমান্তে এমন জটিল পরিস্থিতির জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মারেউতস মোরাউইকি।
মঙ্গলবার পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মারেউতস মোরাউইকি বলেছেন, বেলারুশের কর্তৃত্ববাদী নেতা পুতিনঘনিষ্ঠ আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো এই সংকটের সূচনা করলেও এর ‘পরিকল্পনা মস্কোতে হয়েছে’।
পোল্যান্ডে ঢোকার লক্ষ্যে তীব্র শীতের মধ্যেই সীমান্তের বেলারুশ অংশে অন্তত ২ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী খোলা আকাশের নিচে অপেক্ষা করছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য তারা বেলারুশের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তার বদলা নিতেই লুকাশেঙ্কো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পোল্যান্ড সীমান্তে পাঠাচ্ছে।
ভিডিও ফুটেজে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার একপাশে, বেলারুশ অংশে বিপুলসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে দেখা গেছে। তাদের কেউ কেউ বোল্ট কাটার, গাছের গুঁড়ি ও দলবদ্ধ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করছে; অন্যদিকে পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীরা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সাধ্যমতো চেষ্টা চালাছে, বেশিরভাগ সময় তারা কাঁদুনে গ্যাস ছুড়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে।
এ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অধিকাংশই তরুণ; আছে নারী ও শিশুও। বেশিরভাগই এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে। তারা সীমান্তের কাছে তাঁবু খাটিয়েছেন, একপাশে পোশিল সীমান্তরক্ষী আর অন্যপাশে বেলারুশের রক্ষীদের মাঝে পড়েছেন আটকা।
বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে এখন রাতের বেলায় তাপমাত্রা শূন্যের নিচে নেমে যায়; সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানে অবস্থান করা অভিবাসনপ্রত্যাশী কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।
সীমান্ত পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার পার্লামেন্টের এক জরুরি অধিবেশনে মারেউতস মোরাউইকি বলেন, লুকাশেঙ্কো যে ‘আক্রমণ’ চালাচ্ছেন তার পরিকল্পনা হয়েছে মস্কোতে, আর পরিকল্পনাকারী প্রেসিডেন্ট পুতিন।
রাশিয়া ও বেলারুশের এই দুই নেতা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে প্রবেশে বেলারুশের ভেতর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে ২৭ দেশের ইইউ জোটকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, অভিযোগ পোলিশ প্রধানমন্ত্রীর।
সীমান্তের এই সংকটকে ‘নতুন ধরনের’ যুদ্ধ অ্যাখ্যা দিয়ে মারেউতস বলেন, এই যুদ্ধে সাধারণ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ৩০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীরা এত নির্মম আক্রমণের শিকার হলো।
সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা পোল্যান্ড সম্ভাব্য ‘সশস্ত্র’ সংঘাত নিয়ে সতর্ক করেছে; বেলারুশ উসকানিমূলক কিছু ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কাও করছে তারা।