সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের কাউকে এখন আর বাইরে গিয়ে কথা শুনতে হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এখন আমরা আর পিছিয়ে নেই। বারবার আমাকে ভোট দেওয়ায় দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই। এক দশকের ভেতরে বাংলাদেশের পরিবর্তন সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাউকে বাইরে গিয়ে কথা শুনতে হয় না। সোমবার জাতীয় সংসদের চলমান পঞ্চদশ অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় সাম্প্রতিক বিদেশ সফরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন এবং প্যারিসে ইউনেস্কোর ৭৫ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফর শেষে রবিবার সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। সাধারণ আলোচনায় স্বাধীনতার পর দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে জাতির পিতার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর আমরা কী দেখেছি? ১৯টা ক্যু হয়েছে। হাজারো সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসার ও সৈনিক এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। কারাগারে ফেলে রাখা হয়েছে, নির্যাতন চলেছে। গুলি-অস্ত্র, দুর্নীতি- এটাই ছিল জননীতি।’
‘এর বাইরে একটা দেশকে যে উন্নত করা যায়, সেদিকে কোনো আন্তরিকতাই আমরা দেখিনি। আমি বাংলাদেশে আসার পর কী দেখেছি? বিজ্ঞান পড়েই না মানুষ। এই অবস্থা! বিজ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। গবেষণা তো ছিলই না। কোনো বিশেষ বরাদ্দও ছিল না’। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তার সরকারের বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমরা পিছিয়ে নেই। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের জনগণকে। তারা বারবার আমায় ভোট দিয়েছে। সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। এক দশকের ভেতরে বাংলাদেশের পরিবর্তন সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাউকে বাইরে গিয়ে কথা শুনতে হয় না।’
করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদন করে অন্য দেশকে দেওয়ার বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যে সাফল্য, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আমি এটাও বলে এসেছি, আমরা নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে চাই। ভ্যাকসিন তৈরি করার যে বাধাগুলো আছে সেগুলি আপনাদের সরিয়ে দিতে হবে। করোনাভাইরাসের টিকা সর্বজনীন করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি তার আহ্বান জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, ‘এটি উন্মুক্ত করতে হবে। এটা জনগণের প্রাপ্য। জনগণের সম্পদ হিসেবে দিতে হবে। সারাবিশ্বে কোনো মানুষ যেন ভ্যাকসিন থেকে দূরে না থাকে। আমাদেরকে সুযোগ দিলে আমরা উৎপাদন করব। আমরা বিশ্বে দিতে পারব। সে সক্ষমতা আমাদের আছে। জমিও নিয়ে রেখেছি। এভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার চালু করায় সংসদের আলোচনায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থার প্রবর্তন করা প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার এটি। ১২ নভেম্বরে প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার পেয়েছে ‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ নামে উগান্ডার একটি সংগঠন। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। সে বিষয়টি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘একদিন ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশেরও কোনো না কোনো উদ্যোক্তা এই পুরস্কারটা পাবে বলে আমি আশা করি।’
সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়াসিকা আয়শা খান, বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাপার রুস্তম আলী ফরাজী, পীর ফজলুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর আগে আলোচনায় বক্তব্য দেন।