সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: নতুন শুরুর আশায় পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। পাওয়ার প্লে-তে ঝড় তোলা তো দূরের কথা, টানা উইকেট পতনে উল্টো চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যা একটু চেষ্টা করলেন আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান ও মেহেদী হাসান। এই তিনজনের ব্যাটে ভর করেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানের সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। পিচ রিপোর্টের সময় ধারাভাষ্যকার এড রেইন্সফোর্ড এবং টসের সময় পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বলেছিলেন, এখানে টস জিতে আগে বোলিং নেওয়াই হবে ভালো। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টস জিতে নেন আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়াই যেন গলার কাঁটা হয়ে ওঠে বাংলাদেশ দলের লাইনআপে। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারের মধ্যেই সাজঘরে ফিরে যান টপঅর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটার। ছয় ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে মাত্র ২৫ রান।
বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম ওভার করেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ। দ্বিতীয় বলে রানের খাতা খোলেন নাইম। পরের চারের বল ডট খেলেন অভিষিক্ত ডানহাতি ওপেনার সাইফ হাসান। শেষ বলে রানের সুযোগ থাকলেও নিতে পারেননি সাইফ।পরের ওভারের প্রথম বলটি ওয়াইড করেন হাসান আলি। পরে প্রথম বৈধ ডেলিভারিতেই কট বিহাইন্ড হন নাইম। আউট হওয়ার আগে করেন ৩ বলে ১ রান।
তিন নম্বরে নামেন আরেক বাঁহাতি নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু সাইফ-শান্তর কেউই ব্যাট হাতে কিছু করতে পারেননি। নাইম ফিরে যাওয়ার পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফ। একের পর এক ডট খেলে ৮ বলে করেন ১ রান, আউট হন প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। আশার আলো ছিল শান্তর ব্যাটে। হতাশ করেন তিনিও। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে মাত্র ৭ রান। দলীয় ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে প্রথম বাউন্ডারি হাঁকান চার নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব। হারিস রউফের এই ওভার থেকে আসে ১০ রান। এই ওভারের মধ্য দিয়েই শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মিশনে নামেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও তরুণ বাঁহাতি আফিফ। কিন্তু মোহাম্মদ নওয়াজের করা ইনিংসের ৯ম ওভারের শেষ বলটি মিস করেন মাহমুদউল্লাহ।একটু পর দেখা গেলো স্ট্যাম্পের বেল পড়ে গেলো। নওয়াজ উইকেট পাওয়ার আনন্দে উল্লাস করছেন। রিয়াদ অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। আম্পায়াররা দু’জন কথা বলে টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চাইলেন।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল স্ট্যাম্পের উপর দিয়ে যাওয়ার পথে আলতো ছোঁয়া লাগিয়েছে বেলের ওপর। মনে হচ্ছিল যেন বাতাস লাগিয়েছে। এর খানিক পরই বেল পড়ে যেতে দেখা গেলো। ফলে আউটের সিদ্ধান্ত দেন থার্ড আম্পায়ার। সাজঘরে ফেরার আগে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৬ রান।মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর অবশ্য আফিফকেও আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। শাদাব খানের বলে এলবিডব্লিউ আউট দেন আম্পায়ার। কিন্তু আফিফ রিভিউ নিলে দেখা যায়, তিনি আউট হননি। বল অফ স্ট্যাম্প মিস করে যেতো। এ যাত্রায় বেঁচে গিয়ে পরের ওভারেই চড়াও হন মোহাম্মদ নওয়াজের ওপর। পরপর দুটি ছক্কার মার মারেন তিনি।
সেই ওভারেই পূরণ হয় দলীয় পঞ্চাশ। মনে হচ্ছিল ব্যক্তিগত ফিফটিও হয়তো তুলে নেবেন আফিফ। কিন্তু শাদাবের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর, তার ওভারেই আউট হন আফিফ। শাদাবের ১৩তম ওভারের পঞ্চম বলে গুগলি ধরতে না পেরে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন দুইটি করে চার-ছয়ের মারে ৩৬ রান করা আফিফ।
তখন বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ১২.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ৬১ রান। সেখান থেকে শেষে সাত ওভারে বাংলাদেশের ইনিংসে যোগ হয় আরও ৬৬ রান। যার মূল কৃতিত্ব নুরুল হাসান সোহান ও শেখ মেহেদি হাসানের। সাহসী ব্যাটিংয়ে শেষদিকে তুলনামূলক দ্রুত রান তোলেন এ দুজন। অবশ্য দলীয় একশ পূরণ হওয়ার আগেই আউট হন সোহান। তার ব্যাট থেকে আসে দুই ছয়ের মারে ২২ বলে ২৮ রান। অন্যদিকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে মেহেদি খেলেন এক চার ও দুই ছয়ের মারে ২০ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ক্যামিও। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ১২৭ রানে নিয়ে যান তাসকিন আহমেদ।
পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে ৩ উইকেট নেন হাসান আলি। মোহাম্মদ ওয়াসিমের শিকার ২ উইকেট। অন্য দুই উইকেট নিয়েছেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ।