সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার সোনাটিকি গ্রামে এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ১৬/১২/২০২০ইং তারিখে রোজ বৃহ:বার রাত অনু: ৮.০০ ঘটিকার সময় সোনাটিকি গ্রামের মৃত ফরিদ আহমেদের ছোট মেয়ে নাজমিন আক্তার (২৭) শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের স্বীকার হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় মেয়েটির মা আনোরা বেগম বৃহ:বার রাজনগর থানায় স্থানীয় লেবু মিয়া, তাহার ০৩ পুত্র জুবেল মিয়া, সালেহ আহমেদ, বাবুল মিয়া এবং ডালিম মিয়ার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার এবং ধর্ষণের ফলে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা করার চেষ্টা করলে রাজনগর থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেন নাই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত যুবতী নাজমিন আক্তারের বাবার সাথে তাহার বড় চাচা লেবু মিয়া ও তাহার চাচাত ভাই জুবেল মিয়া, সালেহ আহমদ ও বাবুল মিয়ার সাথে জোরপূর্বক জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে অর্থাৎ নিহত নাজমিন আক্তারের পিতার মুন্সীবাজার আবাসিক এলাকায় মূল্যবান কিছু জমি, যাহা নিহত নাজমিন আক্তারের পিতা বাড়ি নির্মানের জন্য রেখেছিলেন। ঐ জমি নিহত নাজমিন আক্তারের বড় চাচা লেবু মিয়া ও চাচাত ভাইয়েরা স্থানীয় এমপি নেছার আহমেদের খুব পছন্দের এবং এমপি নেছার আহমদ একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য ঐ জমিটি জোরে বলে নিহত নাজমিন আক্তারের পিতার কাছ থেকে দখল করার পায়তারায় লিপ্ত থাকিয়া নিহত নাজমিন আক্তারের পিতাকে গত কয়েক মাস আগে শারীরিক নির্যাতন করে মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয় ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং নিহত নাজমিন আক্তারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে প্রাণে হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে। তৎপর নিহত নাজমিন আক্তারের বড় ভাই রাসেল আহমেদ তাহার চাচাত ভাই লাঠি দিয়ে সালেহ আহমেদের হাতে ও পায়ে আঘাত করে। নিহত নাজমিন আক্তারের পিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাহার বড় ছেলে রাসেল আহমদ রাজনগর থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বর্ণিত লেবু মিয়া ও তাহার ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে অসম্মতি জানালে পর গ্রাম সালিশে বিচার চাইলেও বর্ণিত লেবু মিয়া ও তাহার পুত্রদ্বয় সরকারদলীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী থাকায় স্থানীয়ভাবে কোন মীমাংসা হয়নি। তৎপর বিগত ১৪/০৫/২০২০ইং তারিখে রাতে স্থানীয় লেবু মিয়া ও তাহার পুত্রদ্বয় জুবেল মিয়া, সালেহ আহমদ ও বাবুল মিয়া জমি জোর পূর্বক দখল করার চেষ্ঠায় নিহত নাজমিন আক্তারের বড় ভাই রাসেল আহমেদকে তাহার বাড়ি হইতে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় নিহত নাজমিন আক্তারের পিতা অসুস্থ থাকার দরুণ নিহত নাজমিন আক্তার তাহার অপহরণকৃত বড় ভাই রাসেল আহমেদকে উদ্ধারের জন্য থানায় গিয়ে থানার কর্মকর্তাকে সমস্ত ঘটনা বললে থানা কর্তৃপক্ষ এম.পি নেছার আহমেদের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠজন স্থানীয় মুন্সীবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ
সেক্রেটারী সালেহ আহমদ, মুন্সীবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ প্রচার সম্পাদক জুবেল মিয়ার নাম শুনে মামলা গ্রহণ করেন নাই। নিহত নাজমিন আক্তারের পিতা তাহার চাচা লেবু মিয়া ও তাহার চাচাত ভাই সালেহ আহমেদের মারপিঠ ও জমি জবর দখলের চেষ্ঠার ফলে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ফরিদ আহমদ হার্ট এ্যাটাকে ২৮/০৫/২০২০ইং তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে নিহত নাজমিন আক্তার অপহরণকৃত ভাইয়ের সংবাদ পাবার জন্য এবং তাহার চাচা লেবু মিয়া ও চাচাত ভাই জুবেল মিয়া, সালেহ আহমদ ও বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার জন্য রাজনগর থানায় আবারও অনেক চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হওয়ায় নিহত নাজমিন আক্তার একজন উকিল সাহেবের সাথে মামলা দায়ের সংক্রান্ত বিষয় নিয়া পরামর্শ করার জন্য নিজ পিত্রালয় হইতে উকিল সাহেবের চেম্বারে বিগত ০৭/০৬/২০২০ইং তারিখে একাই কোর্টে যায়। নিহত নাজমিন আক্তারের একা কোর্টে যাওয়ার খবর পেয়ে সালেহ আহমদ ও তাহার খালাত ভাই ডালিম সহ সালেহ আহমেদের সঙ্গে আরও অজ্ঞাতনামা আরও ০২ জনকে নিয়া নিহত নাজমিন আক্তার কোর্ট হইতে তাহার পিত্রালয় ফেরার পথে দক্ষিণ মুন্সীবাজার সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ি ষ্ঠ্যান্ডে পৌছামাত্র জোরপূর্বক সালেহ আহমদ ও তাহার সঙ্গীয় অপর ৩ জন নিহত নাজমিন আক্তারকে নোহা গাড়িযোগে জোরপূর্বক অপহরণ করিয়া নিয়া যায়। অপহরণকারী সালেহ আহমদ, ডালিম মিয়া ও তাহার অপর ০২ জন সঙ্গী মিলে নিহত নাজমিন আক্তারকে অজ্ঞাত স্থানে রাখিয়া বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করে সবাই মিলে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। সমস্ত দিন রাখিয়া ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর ঐ দিন আনুমানিক রাত ১০ টায় একটি নোহা গাড়িতে করে নিহত নাজমিন আক্তারের পিতার বাড়ির সামনে এনে গাড়ি থেকে নাজমিন আক্তারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে যায়। স্থানীয় ভাবে স্থানীয় দের মধ্যে জানাজানি হইলে পর নিহত নাজমিন আক্তার তাহার মান, সম্মান ও ইজ্জত হানির ঘটনার কষ্ট সহ্য করতে না পেরেই পারিবারিক মান সম্মানের কথা ভেবে মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে নিহত নাজমিন আক্তার তাহার পিত্রালয়ে লেখাপড়ার রুমে দরজা বন্ধ করে নিহত নাজমিন আক্তার তাহার মা ও ভাইয়ের অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে রাজনগর থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে নিহত নাজমিন আক্তারের লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, নিহত নাজমিন আক্তারের মরদেহ পরীক্ষা করে জানা গেছে, নিহত নাজমিন আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রাজনগর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হইয়াছে। নিহত নাজমিন আক্তারের মা জানান, ১৬/১২/২০২০ইং তারিখে রোজ বুধবার নিয়মিত ভাবে তাহার নিজ রুমে পড়তে গেলেও অনেকক্ষণ কোন সাড়া শব্দ না পেলে সন্দেহ হলে বাহির থেকে অনেক ডাকাডাকি করে পরবর্তীতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার গলায় ফাস লাগানো মরদেহ পুলিশ এসে উদ্ধার করে।