বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় তৃতীয় ধাপে সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনের দশ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের বিরুদ্ধে ‘নৌকা’র প্রার্থীদের বিপক্ষে প্রচরাণা এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ ও উস্কানী প্রদানের অভিযোগ তুলেছেন। শুক্রবার রাতে দলিয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের প্রতিবাদে ‘নৌকা’র বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী নিয়ে পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে তারা পৌরসভা হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার ও দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদিরের দৃষ্ঠি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বড়লেখা সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ছালেহ আহমদ জুয়েল। এসময় উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ, উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের বেশকয়েকজন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বড়লেখার ১০ ইউপির মধ্যে নিজবাহাদুরপুর, উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর, বড়লেখা সদর ও দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। এরমধ্যে বর্ণি, দাসেরবাজার, তালিমপুর, সুজানগর ও দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নে ‘নৌকা’র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পরাজিত হন। ওই ইউনিয়নগুলোতে নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কিছু সংখ্যক বিএনপি-জামায়াত অনুসারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। যার কারণে ওই ইউনিয়গুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এমনকি জাকির অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রশাসন ম্যানেজ করে অবৈধ ব্যালটের মাধ্যমে জয় করিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেছেন। তিনি নির্বাচন পরবর্তী ভোটের চারদিন পর শুক্রবার আ’লীগ থেকে বহিস্কৃত স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আপ্যায়নসহ গোপন বৈঠক করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মদদ দিচ্ছেন। বৈঠকের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া এসএম জাকির হোসাইন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের পাশাপাশি পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেছেন। সংগঠন বিরোধী তার এমন কার্যকলাপে বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উত্তর শাহবাজপুর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ, দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ বাবলু, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের নৌকার পরাজিত প্রার্থী সুলতানা কোহিনুর সারোয়ারির ছেলে যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমদ আদনান, দাসেরবাজার ইউনিয়নের নৌকার পরাজিত প্রার্থী জিয়াউর রহমানের বড়ভাই ফয়জুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রিয় আ’লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন জানান, ইউপি নির্বাচনে তিনি দলিয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা করেছেন। নির্বাচনের পর ‘নৌকা’র পরাজিত প্রার্থীদের বাড়ি গিয়ে ও ফোনে সমবেদনা জানিয়েছেন। আ’লীগের বিদ্রোহী কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কেউ প্রমাণ দিলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে নির্বাসিত হবেন। পরাজিত আ’লীগ বিদ্রোহীদের বাড়িতে গিয়ে আপ্যায়ন, গোপন বৈঠক, মদদ ও উস্কানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শুক্রবার এক সামাজিক অনুষ্ঠানে কাকতালিয়ভাবে এক আ’লীগ বিদ্রোহী পরাজিত প্রার্থীর সাথে একটেবিলে খেতে বসেছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।