মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের রাজধানী আরবিলে প্রবল বৃষ্টিপাতের পর উত্তর ইরাকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আকস্মিক বন্যায় তিন বিদেশীসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার কুর্দিস্তানের একজন কর্মকর্তা এ খবর জানিয়েছেন।
প্রচণ্ড খরার সঙ্গে মোকাবিলা করা দেশটিতে, ভোরের সূর্য ওঠার আগেই শহরের পূর্ব শহরতলিতে শক্তিশালী এ ঝড়ের সঙ্গে বন্যার পানি ঘর-বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এতে অনেকেই অবাক হয়ে যায়।
প্রাদেশিক গভর্নর ওমিদ খোশনাউ জানান, নিহত ১২ জনের মধ্যে এক ১০ মাস বয়সী শিশু, একজন তুর্কি ও দুই ফিলিপিনো নাগরিক রয়েছেন।
খোশনাও এএফপিকে বলেন, “ভোর ৪টায় বন্যা শুরু হয়। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের হয়েছে নারী ও শিশুরা।”
এদিকে বন্যায় গাড়ি ভেসে যাওয়ায় জরুরি সেবার চার সদস্য আহত হন।
জরুরী সেবার মুখপাত্র সারকাওত কারাচ বলেছেন, “নিহতদের মধ্যে একজন বজ্রপাতে মারা গেছেন এবং অন্যরা তাদের বাড়ির ভিতরে ডুবে গেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং কিছু পরিবার তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ভেসে গেছে অনেক যানবাহন। বাস, ট্রাক এবং ট্যাঙ্কার ট্রাকগুলো বন্যার পানিতে ভেসে যায়। কিছু উল্টেও যায়।”
খোশনাও বাসিন্দাদেরকে প্রয়োজন না হলে বাড়িতে থাকার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কারণ আরও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, “চিকিৎসা ও জরুরি সেবা দল, অঞ্চলের আশেপাশের স্থানীয় কাউন্সিলগুলো সহ নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, রেকর্ড কম বৃষ্টিপাত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইরাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় হুমকির দিকে যাচ্ছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের (এনআরসি) সামাহ হাদিদ বলেছেন, “প্রতিবেশী দেশ তুরস্ক ও ইরানে বাঁধ নির্মাণের ফলে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর পানির স্তর কমে যাওয়ার কারণে কম বৃষ্টিপাতের প্রভাব আরও বেড়েছে।”
ইরাকে একের পর এক চরম আবহাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খরার তীব্রতায় অনেক কৃষক পরিবারকে তাদের জমি ছেড়ে শহুরে এলাকায় বসবাস করতে বাধ্য করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এনআরসি বলেছে যে, ইরাকের খরা-পীড়িত এলাকায় বসবাসকারী অর্ধেক পরিবারের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংক এক সতর্ক বার্তায় বলেছিল যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইরাকে ২০৫০ সালের মধ্যে জল সম্পদের ২০ শতাংশ হ্রাস পাবে।