রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ২০ মাসের শিশুকে বাসায় একা রেখে জন্মদিন পালন করতে পার্টিতে গিয়েছিলেন তরুণী মা। ৬ দিনের পার্টি শেষে বাড়ি ফিরে দেখেন মেয়ে মারা গেছে। খাবার না পেয়ে, পানির অভাবে, ক্ষুধা, ডিহাইড্রেশন আর জ্বরে মৃত্যু হয় শিশুটির। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, ‘অবহেলা’ই ওই শিশুটির মৃত্যুর কারণ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের ব্রাইটন শহরে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই মায়ের নাম ভার্পি কুডি। আর মৃত ওই শিশু সন্তানের নাম আসিয়াহ। এই ঘটনার পর মা ভার্পিকে আটক করে পুলিশ। দায়ের করা হয় হত্যা মামলা।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সেই মামলারই শুনানি ছিল আদালতে। আর সেখানেই বেরিয়ে আসে আরও চমকপ্রদ তথ্য। আদালতে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে জানা যায়, ক্ষুধা আর পিপাসার কারণে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শিশু আসিয়াহ’র মৃত্যু হলেও তাকে বাসায় একা রেখে যাওয়ার ঘটনাটি যে সেবারই প্রথমবার ঘটেছিল; এমন নয়। ওই বছরেরই অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে মোট ১১ বার মেয়েকে বাসায় একা ফেলে নিজের কাজে চলে গিয়েছিলেন মা ভার্পি।
২০ মাস বয়সী মেয়ে আসিয়াহকে নিয়ে ব্রাইটন শহরের এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ভার্পি। শিশু সন্তানের প্রতি তার অবহেলার কথা জানিয়েছেন সেই বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এবং ভবনের অন্যান্য বাসিন্দারা।
অসিয়াহ’র মৃত্যুর পর মা ভার্পি কুডিকে আটক করে পুলিশ। পাশে ভার্পির বাসা, এখানেই শিশু আসিয়াহকে একা রেখে পার্টিতে গিয়েছিলেন তিনি।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নিজের ১৮তম জন্মদিন পালন করতে শিশু মেয়েকে ঘরে একা রেখেই পার্টি করতে চলে যান ভার্পি। এমনকি সেটা কাছাকাছি কোনো স্থানেও নয়, ব্রাইটন শহর থেকে কমপক্ষে ১৫০ মাইল দূরে লন্ডন, কোভেন্ট্রি এবং সোলিহালে শহরে।
এর প্রায় এক সপ্তাহ পর বাসায় ফেরেন ভার্পি। তবে ততোদিনে একা ঘরে মা-কে ছেড়ে, খাবার, পানি না পেয়ে ক্ষুধা আর পিপাসায় মারা যায় ২০ মাস বয়সী আসিয়াহ।
পুলিশ জানিয়েছে, পার্টি থেকে ফিরে জরুরি নাম্বারে ফোন করেন ভার্পি। সেখানে জানান, মেয়ে অসুস্থ, সে ঘুম থেকে উঠছে না। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে আসিয়াহকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
পরে ভার্পিকে আটক করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় হত্যা মামলা। সেটারই শুনানি চলছিল আদালতে। এই মামলায় আর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আদালত রায় ঘোষণা করতে পারেন।
রায়ে ভার্পির সাজা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভার্পির আত্মীয়দের আশঙ্কা, বারবার মেয়ের প্রতি অবহেলা করার তথ্য আদালতে প্রকাশ হওয়ায় বিচারক হয়তো তার সাজার মেয়াদ বাড়াতে পারেন।