রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৪:০০ অপরাহ্ন
সিলেট প্রতিনিধি :: অবৈধ জবর দখলকারীদের কবল থেকে পৈতৃক সম্পদ এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন সিলেট নগরের দাড়িয়াপাড়ার মেঘনা এ/৮ নম্বর বাসার মৃত আজিমুল হকের ছেলে ফজলুল হক মোর্শেদ।
বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানোর পাশাপাশি তার চাচাত ভাই জাবেদ ও ভোলার জনৈক কবির আহমদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগও তুলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার পৈতৃক সম্পদ জিন্দাবাজারের কাকলি শপিং সেন্টার ১৩ বছর পরিচালনা করেছেন চাচাত ভাই মৃত আজিজুল হকের ছেলে মুজিবুল হক জাবেদ। তিনি ভাড়াটিয়া ভোলার আব্দুল মোতালিবের ছেলে নগরীর কাজিইলিয়াছের বাসিন্দা কবির আহমদের সাথে মিলে ৪৯ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আত্মসাত করেছেন। হোল্ডিং ট্যাক্স, ইনকাম ট্যাক্স, শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে এবং ব্যাংক লোন পরিশোধ না করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। এমনকি তারা দোকান কোটা অবৈধভাবে দখল ও বিক্রি করেছেন।
ফজলুল হক মোর্শেদ লিখিত বক্তব্যে জাবেদের কুকর্মের কথা প্রকাশ হলে ২০১৪ সালে তাকে মার্কেটের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় আমমোক্তার নামার মাধ্যমে। ২০১৭ সালে মার্কেটের সব দায়িত্ব আমাকে সমঝে দেওয়া হয়। আমি আইনীভাবে ব্যবসার স্বার্থে কিস্তিতে প্রতি মাসে বকেয়া বিল ও ট্যাক্স পরিশোধ করছি। ৩ মাস আগে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা আমার উপর হামলা করে। আমি থানায় অভিযোগ দিলেও কোন আইনী সহযোগীতা পাইনি।
তিনি বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে মার্কেটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। সেরাতে জাবেদ ও কবির মার্কেট দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরদিন দুপুর ১২টার দিকে মার্কেটের সামনে প্রাণনাশের ও মার্কেট দখলের উদ্দেশ্যে আমার উপর হামলা করে। আমি ট্রিপল নাইনে কল দিলেও কোন সহযোগীতা পাইনি। মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায় আমাকে দায়ী করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে। তারা নাকি নবম তলায় আমাকে আগুন লাগাতে দেখেছেন।
অথচ এ ব্যাপারে সিলেটের একটি জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকায় জাবেদ নিজেই বলেছিলেন শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এমনকি ফায়ার সার্ভিসও তাই বলছে। তাছাড়া সেদিন শুক্রবার ছিল। মার্কেট বন্ধ অবস্থায় তারা কিভাবে নবম তলায় গেলেন? আর গিয়ে থাকলেই বা কি উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন? এতেই কি পরিস্কার হয়না যে, কোতোয়ালি থানায় আমাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত? বর্তমানে কবির সপ্তম তলায় আড়াই হাজার বর্গফুটের অফিস জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। তিনি একটি জাল রেজিস্ট্রারি বায়না করে আমাদের নামে সমন পাঠিয়েছেন। মার্কেটটি যেহেতু সাইথইস্ট ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ তাহলে তিনি কিভাবে বায়না করেন? এটিও তার একটি জালিয়াতি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জাবেদ ও কবিরের অব্যাহত হুমকি ও হামলার মুখে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। গত ৮ জানুয়ারি বিকেলে আমার ভাই এনামুল হক খোর্শেদের উপরও মার্কেটের সামনে হামলা চালিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে আমরা দুটি মামলা দায়ের করেছি (কোতোয়ালি সিআর মামলা নং ২৪, ৬ জানুয়াপরি ২০-২২ও কোতোয়ালি বিবিধ মামলা নং ০৮/২২) দায়ের করেছি। জাবেদ ও কবির প্রভাব বিস্তার করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকেও আমার বিপক্ষে কাজে লাগাচ্ছে। কবির জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকার গাড়ি বাড়ির মালিক হয়েছে। তার একাধিক আইডি কার্ড রয়েছে এবং ৭/৮টি গাড়ির মালিক তিনি। একসময় তিনি অবৈধভাবে লোকজন বিদেশ পাঠাতেন। সিলেটে কোটি কোটি টাকার ফ্লাট ও জমির মালিক হয়েছেন।
মোর্শেদ নিজের পৈতৃক সম্পত্তি ও জানমালের নিরপত্তা রক্ষায় সিলেটের প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।