1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির \ বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৩৯৪ বার পঠিত

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ: মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলাজুড়ে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় মৌলভীবাজার জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা কয়েক দিন ধরে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শহর থেকে গ্রামে শীতের তীব্রতা বেশি। এখানে গ্রাম ও চা-বাগান অঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে সেখানকার মানুষজন পড়েছেন ভোগান্তিতে। উপজেলায় ঠাÐাজনিত রোগে প্রতিদিন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের নিয়মিত ভর্তি অব্যাহত রয়েছে। প্রায় মানুষই জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত। দিনে কিছু সময়ের জন্য সূর্য্যরে দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা কমছে না। হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন চা শ্রমিক, গরিব, ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। কষ্টে রয়েছে গবাদিপশুও। নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র¿ বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় একেবারে কম।
কমলগঞ্জ উপজেলায় গাছ গাছালি ও সবুজে ঘেরা থাকায় চা বাগান সমুহে সাধারণত শীত, মৃদু বাতাস ও ক‚য়াশাও তুলনামূলক বেশি থাকে। ফলে প্রচÐ ঠাÐার সময়ে কাবু হয়ে পড়েন চা শ্রমিকদের একটি বৃহৎ অংশ। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে হাড় কাঁপানো শীতে তারা খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। কয়েক বছর আগেও শ্রমিকদের চাহিদা অনুযায়ী বাগান কর্তৃপক্ষ শীত নিবারনে চটের বস্তা বিতরণ করলেও এখন আর কোন কিছু দেয়া হয় না। হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে নি¤œ আয়ের লোকজন। শীতে ছিন্নম‚ল মানুষেরা বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে। চারদিকে শীতজনিত রোগ নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, জ্বর, আমাশয়সহ নানা রোগ দেখা দিয়েছে। হাটবাজারে শীতের কাপড়ের চাহিদা বেড়ে গেছে। অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শরীরে উত্তাপ নিচ্ছেন। মানুষ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।
চা শ্রমিকরা জানান, স্বল্প আয় থাকায় গরম কাপড় কেনা তাদের অধিকাংশেরই সামর্থ্যের বাইরে। শীত নিবারনে এসব পরিবার সদস্যরা ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড়খুঁটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সময় কাটান। বর্তমানে চা বাগানে শ্রমিকদের মধ্যে বাগান পঞ্চায়েত, জনপ্রতিনিধি ও ম্যানেজমেন্টের সুবিধাভোগীসহ স্বচ্ছল প্রায় ১০ শতাংশ হাতে গোনা কিছু পরিবার স্বাচ্ছন্দে দিন কাটালেও ৯০ শতাংশেরই খুবই দু:খ-কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে। শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক স্বপন গোয়ালা, আদরমনি মৃধা বলেন, দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে পাঁচ, সাত সদস্যের পরিবারের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। আমরা চা শ্রমিকরা খাইবো কি আর কাপড় চোপড় কিনবোই বা কি? আর বাজারে জিনিসপত্রের দামও যে হারে বাড়ছে তাতে গরম কাপড় কেনা মোটেও সাধ্য নেই। অভাব অনটনসহ সব মিলিয়ে শীতে আমাদের কষ্ট আরও একধাপ বেড়েছে। সবগুলো চা বাগানে একই অবস্থা। তারা আরও বলেন, শীতে খড়কুঁটো বিছিয়ে কেউ কেউ ঘুমানোর ব্যবস্থা করেন। কেউ কেউ বস্তা বিছিয়ে ঠান্ডা থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন আবার কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শরীরে গরম ভাপ লাগান।
শমশেরনগর কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন, দেওছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি শংকর রবিদাস ও চা শ্রমিক সংঘের নেতা রাজদেও কৈরী বলেন, শীতের সময়ে চা শ্রমিকদের মধ্যে বাগান কর্তৃপক্ষ কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করেন না। কয়েক বছর আগে বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মধ্যে চটের বস্তা বিতরণ করতো। এখন আর কিছুই দেয়া হয় না। অধিকাংশ শ্রমিক পরিবার সদস্যরা শীতে কষ্ট পোহাচ্ছেন। তাছাড়া চা বাগানগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থাও নাজুক। ডিসপেনসারীগুলোতে ভালো চিকিৎসা সুবিধাও নেই। সবমিলিয়ে চা শ্রমিকরা ভালো নেই।
এ ব্যাপারে ডানকান ব্রাদার্স আলীনগর চা বাগানের আলীনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক হাবিব আহমেদ চৌধুরী বলেন, আগে এক সময় শীতবস্ত্র দেয়া হতো। এখন চা বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মধ্যে কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করছে না।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যক্ষেক মুজিবুর রহমান জানান, শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় মৌলভীবাজার জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..