শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রে আটকে থাকা আফগানিস্তানের ৭ বিলিয়ন অর্থাৎ সাতশ কোটি মার্কিন ডলার সম্পদের অর্ধেক ৯/১১-এর হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। বাকি অর্থ খরচ হবে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে আর্থিক সংকটে থাকা মানুষদের সহায়তার জন্য।
আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে জমা থাকা ওই অর্থ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ ধরনের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, স্থগিতাদেশে থাকা এই অর্থ কোন খাতে ব্যবহার করা হবে- তা নিয়ে এতদিন চাপে ছিল মার্কিন সরকার। কারণ, ট্রেজারি বিভাগের নির্দেশনা ছিল- সন্ত্রাসবাদের জন্য সহায়ক হয়- এমন কোনো ক্ষেত্রে এই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ১ হাজার কোটি ডলারের মধ্যে ৭০০ কোটি ডলার ৯/১১ হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বাবদ ব্যায় করা হবে। বাকি ৩০০ কোটি ডলার ব্যায় হবে অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজে।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘৯/১১ হামলাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা এবং কাকে কত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে—তা চুড়ান্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আদালতে সেই তালিকা পাঠানোও হয়েছে। আদালত সম্মতি দিলেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।’
এদিকে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান মার্কিন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘চুরি’ ও ‘আদর্শগত অবক্ষয়’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর; কিন্তু গত বছর ১৫ আগস্ট তালেবান বাহিনী জাতীয় ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশগুলো।
ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগস্ত হয় দেশটির অর্থনীতি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে আফগানিস্তানের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে আছেন এবং ২০২২ সালের মাঝমাঝি সময়ের মধ্যে এই হার আরও বাড়বে।
বাইডেন প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে থাকা সাধারণ আফগানদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ৩৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে মার্কিন সরকার, কিন্তু সেই ডলার পাঠানোর ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
তালেবান সরকারের কাছে এই অর্থ স্থানান্তর করতে চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু তার বিকল্প হিসেবে কোন সংস্থার কাছে অর্থ পাঠানো হবে— সে সিদ্ধান্তও এখনো নিতে পারেনি বাইডেন প্রশাসন।