সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়ার পর ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আক্রমণ শুরুর প্রথম এক ঘণ্টায় ইউক্রেনের ৪০ জনের বেশি সৈন্য এবং ১০ বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনে বলছে, পাল্টা প্রতিরোধে রাশিয়ার অন্তত ৫০ দখলদার সৈন্য নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেন বলছে, তাদের সৈন্য রাশিয়ার অন্তত ৫০ দখলদার সৈন্যকে হত্যা করেছে। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কিয়েভ এই দাবি করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, একেবারে নিখুঁত অস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর ঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার পাঁচটি বিমান এবং একটি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার দাবি জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। পরবর্তীতে আরও একটি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, শচস্ত্য শহর এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাশিয়ার ৫০ দখলদার সৈন্য নিহত হয়েছে। ক্রামতোর্স্ক জেলায় রাশিয়ার আরেকটি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। এটি নিয়ে ছয়টি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে।
ইউক্রেনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টন জেরাশেঙ্কো বলেছেন, কিয়েভ, খারকভ এবং নিপারের কাছে সামরিক সদর দপ্তর, বিমানবন্দর, সামরিক অস্ত্রাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার সামরিক আক্রমণ শুরুর পর বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের জনগণকে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে জেলেনস্কি। এছাড়া ইউক্রেনকে রক্ষায় ইচ্ছুক কারো ওপর পূর্বে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকলে এখন তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ হামলা নাৎসি আক্রমণের মতোই। ইউক্রেনে হামলার প্রতিবাদ জানাতে রাশিয়ার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জনগণের মাঝে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে ইউক্রেনের এই নেতা দেশটির গণমাধ্যমকে তথ্য সঠিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির সামরিক বাহিনী কতটা দৃঢ়ভাবে রাশিয়ার সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তা তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শত্রুরা গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এই ক্ষতি আরও বাড়বে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। জেলেনস্কি বলেছেন, দেশের সরকার ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইচ্ছুক প্রত্যেকের কাছে ‘ইতোমধ্যে অস্ত্র বিতরণ শুরু’ করছে।