রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক প্রণব চন্দ্র দাসের ওপর হামলার ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও হামলাকারীদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ২৪ ফেব্রæয়ারি লাইন ভেঙে করোনার ভ্যাকসিন নিতে না দেওয়ায় প্রণবের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ওইদিন প্রণব চন্দ্র দাস অভিযুক্ত মাশরাফি আলম মাহীকে (২০) প্রধান ও আরো ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেন। প্রধান অভিযুক্ত মাশরাফি উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম নুনুর ছেলে।
গত ৮ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় হাকালুকি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের উপ-সহকারি ভুমি কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ওপর হামলার একঘন্টার মধ্যে পুলিশ অন্যতম হামলাকারিকে গ্রেফতার করে প্রশংসিত হলেও হাসপাতাল কর্মচারির ওপর হামলার ১৭ দিনেও কোন আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় হাসপাতাল কর্মচারি-কর্মকর্তাসহ সচেতন মহলে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এদিকে পুলিশ বলছে হামলাকারীরা আত্মগোপনে রয়েছে। মামলার পর থেকে সম্ভাব্য সকল স্থানে অভিযান পরিচালনা করেও তাদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।জানতে চাইলে শনিবার সন্ধ্যায় বড়লেখা থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মচারীর ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য প্রতিদিন পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু তাদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না।’
বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতœদীপ বিশ্বাস শনিবার রাতে বলেন, ‘লাইন ভেঙে টিকা নিতে না দেওয়ায় কয়েকজন যুবক সংঘবদ্ধভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক প্রণব চন্দ্র দাসের ওপর হামলা করে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। আসামিরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। এতে চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত হাসপাতাল কর্মচারির অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ফেব্রæয়ারি সকাল থেকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সীদের করোনার প্রথম ডোজের টিকা প্রদান কার্যক্রম চলছিল। দুপুরের দিকে উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউপির উত্তর চান্দগ্রামের মাশরাফি আলম মাহী ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে লাইন ছাড়াই বুথে প্রবেশ করে অপেক্ষমানদের পেছনে ফেলে তাকে টিকা দিতে জোরজবদস্তি শুরু করে। এসময় অফিস সহায়ক প্রণব চন্দ্র দাস তাকে লাইনে যেতে অনুরোধ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে অফিস সহায়ক প্রণব চন্দ্র দাস, টিকা কার্যক্রমে নিয়োজিত সিস্টার ও ব্রাদারদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হাসপাতালের নিচে চলে যায়। প্রায় আধঘন্টা পর প্রণব চন্দ্র দাসকে হাসপাতালের নিচে গেলে মাশরাফি আলম মাহী প্রণবকে ডেকে নিয়ে আরও ৭-৮ যুবক মিলে বেধড়ক মারধর করে। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রণব দাসকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার পরদিন শুক্রবার (২৫ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মচারীর ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।