1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেছিল’

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০২২
  • ১৭৪ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব এবং সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেছিল। যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বিকাশ ঘটেছে বাঙালি জাতিসত্তার।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র জন্মবার্ষিকী’ ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২২ উপলক্ষে দেশের সকল শিশুসহ দেশবাসীকে তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। জাতীয় শিশু দিবসে এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অঙ্গীকার, সকল শিশুর সমান অধিকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালি জাতিরই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল নিপীড়িত-শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও মুক্তির অগ্রনায়ক। তিনি যখন স্বাধীন বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজে আত্মনিয়োগ করেন, তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি তাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। অবৈধ সামরিক সরকারগুলো পরবর্তীতে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত এবং স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুনর্বাসন করেছিল।

জনগণকে ভাত ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের যেন বিচার না হয় সে জন্য প্রণীত হয় দায়মুক্তির কালাকানুন-ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স। দীর্ঘ ২১ বছর পর জনগণের রায়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এই কালাকানুন বাতিল করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু করে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। প্রবৃদ্ধি, শিক্ষার হার বেড়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলমান রয়েছে এবং ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি রায় কার্যকর হয়েছে। জাতীয় চার নেতার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। জঙ্গিবাদ ও হরতালের অবসান ঘটিয়ে দেশকে স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে। গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ৩৯টি হাই-টেক পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২, গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মাসেতু, এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেসওয়ে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধী শক্তির সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ প্রখ্যাত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভীক, দয়ালু এবং পরোপকারী। স্কুলে পড়ার সময়েই নেতৃত্বের গুণাবলী ফুটে ওঠে তার মধ্যে। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার অধিকার আদায়ের শেষ আশ্রয়স্থল। প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এ বিশ্ববরেণ্য নেতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এ বাঙালি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন।

১৯৪৮ সালে তার প্রস্তাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে সাধারণ ধর্মঘট পালনকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত তিনি বার বার কারারুদ্ধ হন। কখনো জেলে থেকে কখনো বা জেলের বাইরে থেকে তিনি ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলন-বিদ্রোহে কারান্তরীণ অবস্থায় থেকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-এর আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ‘৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মমতা ছিল অপরিসীম। এ জন্য তার জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে ১৭ মার্চকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। জাতির পিতা বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে আজকের শিশুদেরই। তাই শিশুরা যেন সৃজনশীল-মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে- তিনি সবসময় সেটাই চাইতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুদের কল্যাণের লক্ষ্যে আমরা একটি যুগোপযোগী ‘জাতীয় শিশুনীতি-২০১১’ ও ‘শিশু আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করেছি। শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু আজ স্কুলে যাচ্ছে। আমরা শিশুদের জন্য জাতির পিতার জীবন ও কর্মভিত্তিক বই প্রকাশ এবং পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরেছি। শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করে তাদের ব্যক্তিত্ব গঠন, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে দলমত নির্বিশেষে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাদের বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে এবং জ্ঞান সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের দক্ষতা বিকাশের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ ও কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করা এবং সকলে মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সাল ছিল জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ। বর্তমান প্রজন্মের শিশুসহ আমাদের সকলের সৌভাগ্য হয়েছে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপনের আয়োজন দেখার। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষের আয়োজন আরো আনন্দময় হয়ে উঠেছে আমাদের মহান স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে। জাতীয় শিশু দিবসে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে মহান নেতার জীবন ও আদর্শ অনুসরণে এ দেশের শিশুদের যথাযোগ্য সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের সরকারের মুখ্য লক্ষ্য। এদিনে তিনি মহান আল্লাহর কাছে জাতির পিতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আগামী দিনের কর্ণধার শিশু-কিশোরদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন।

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী এবং ‘জাতীয় শিশু দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..