শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় দু’চোখ হারিয়ে চিকিৎসা চালাতে গিয়ে নি:¯ হয়ে পড়েছেন চার সন্তানের জননী লুবনা খানমের পরিবার। এখন শুধু আদালতে বিচারের রায়ের প্রহর গুনছেন। বেঁচে থাকার ইচ্ছা থাকলেও লড়াই চালিযে যাওয়ার সামর্থ আর নেই। সহায় সম্বলহীন লুবনা খানম বিচারের রায় শুনে যেতে পারবেন কি না সে আশংকায় ভূগছেন। লুবনার স্বামী আবদুস সালাম তালুকদারকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যয় বাবৎ গুনতে হয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা। জানাযায়, সালাম তালুকদার স্ত্রীর কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য গত বছরের ২৭ মে আইকন মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. তারেক আহমদ চৌধুরী ব্যবস্থাপত্র দেন এবং কয়েকটি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। পরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট দেখে তিনি আরও কয়েকটি ওষুধ দেন। ওই ওষুধ খেয়ে লুবনার শরীরের প্রবল জ্বর আসে এবং মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায়। পরবর্তীতে ১৯ জুন আবার ডা. তারেক আহমদ চৌধুরীর চেম্বারে গেলে তিনি আমার স্ত্রী ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে বলে ব্যবস্থাপত্রে আবারও ওষুধ লিখে দেন। ওই ওষুধ খেয়ে লুবনার শরীরের আরও অবনতি হয় এবং খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রীর অবস্থার অবনতি দেখে ২০ জুন মৌলভীবাজার শহরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কর্তৃপক্ষ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ডা.রেজাউল করিম মীরকে কল করে আনলে ‘চিকেন ফক্স’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে মর্মে তিনি ব্যবস্থাপত্র দেন। ওই ব্যবস্থাপত্রের ওষুধ সেবনের পর দুই চোখ দিয়ে এবং বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গসহ সারা শরীর ফেটে রক্তপাত হতে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচনও দেখা দেয়। লুবনার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে পরদিন জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ডা. স্বপন কুমার সিংহকে কল করে আনলে তিনি রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সত্তে¡ও উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার না করে অবৈধ লাভের আশায় রোগীকে আরও ২ দিন জেনারেল হাসপাতালে রাখেন। একপর্যায়ে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ৪৩ দিন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও দুই চোখ দৃষ্টিহীন হয়ে যায়।
মৌলভীবাজারে ভুল চিকিৎসায় দু’চোখ হারিয়ে ৪বছরে নি:স্ব লুবনার পরিবাবেরর আকুতি———————————————
চিকিৎসা চলা অবস্থায় লুবনা খানমের ভূল চিকিৎসার সমঝোতার জন্য চোখের বিনিময় হিসেবে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার প্রস্তাব দেন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তারেক আহমদ চৌধুরী, ডা. রেজাউল করিম মীর ও ডা. স্বপন কুমার সিংহ। লুবনার স্বামী আবদুস সালাম তালুকদার টাকা না নিয়ে দাবী জনান, তার স্ত্রীর চিকিৎসা ব্যায় বহন করার জন্য। ডাক্তাররা এই শর্তে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনায় লুবনার স্বামী ১১ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে মামলা করেন। (মামলা নং ৬৮০/১৭ইং)। অসহায় আবদুস সালাম তালুকদার তার স্ত্রীকে নিয়ে মৌলভীবাজার বিএনএবি চক্ষু হাসপাতাল, সিলেট এম,এ,জি ওসমানী হাসপাতাল,ধানমন্ডি মিশন হাসপাতাল, ইস্পানী হাসপাতাল সহ ভারতীয় চক্ষু বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ভিটে মাটি বিক্রি করে নি:স্ব হয়ে স্ত্রীকে সুস্থ করতে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা ব্যায় করেছেন। কিন্তু কোন আশার আলো দেখতে পারেননি। তার স্ত্রীর দুচোখের আলো নিভে গেছে চির দিনের জন্য। এখন বাকী শুধু স্ত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা। ্আর আইনের বিচার দেখার অপেক্ষা। লুবনার স্বামী আবদুস সালাম তালুকদার বলেন, সিলেট সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার সময় বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষায় ডাক্তারগন নিশ্চিত হন ভূল ্ঔষধ প্রয়োগ করার কারনে পাশর্^প্রতিক্রিয়ায় লুবনা খানমের এই পরিনিতি ঘটেছে। মামলা প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পর থেকে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।