1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

লাইলাতুল কদর এর ফজিলত

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২
  • ৪৪০ বার পঠিত

আফতাব চৌধুরী :: “ইন্না আনজালনাহুফি লাইলাতুল কাদরি”Ñনিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) কুরআন শরিফকে শবে-কদর অর্থাৎ লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে অবর্তীণ করেছি। অর্থাৎ আল্লাহতা’লা কুরআন শরিফের ‘লও হে মাহফুজ’ থেকে আসমানে দুনিয়া (সপ্তাহকালে) এই রাত্রিতে অবর্তীণ করেছেন। সুতরাং এই শবে-কদরের মাহাত্ম অসংখ্য ও অসাধারণ।
‘ওমা আদরাকামা লাইলাতুল কাদরি’-হে মোহাম্মদ (স.) তুমি মিশ্চয়ই জানো এই রাত্রির মাহাত্ম্য এবং ফজিলত। তদুপরিও আল্লাহতা’লা কিছু ফজিলত বলেছেন যে, ‘লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি সাহরিন’ অর্থাৎ শবে-কদর হাজার মাস থেকেও উত্তম অর্থাৎ হাজার মাস প্রার্থনা করলেও তা এই রাত্রির প্রার্থনার মতো উত্তম নয়। এই রাত্রির প্রার্থনা এই জন্য উত্তম যে, এই রাত্রিতে ‘তানাজ্জালুল মালাইকাতি’ অর্থাৎ এই উত্তম নিশীথে ফেরেস্তা (স্বর্গীয় দূতের) অবতারণা হয়। আল্লাহ রাজি রহমত বলছেন, মনুষ্য সৃষ্টিকালে ফেরেস্তারা আল্লাহর দরবারে অবিমত ব্যক্ত করে বলেছিলেন যে-হে আল্লাহ আপনি কেন এমন এক জাতকে সৃষ্টি করছেন, যারা দুনিয়ায় ঝগড়া করবে এবং একে অপরকে হত্যা করবে। আর যখন এই শবে-কদরে আল্লাহর ইচ্ছানুয়ায়ী মানবজাতি আল্লাহর এবাদত (প্রার্থনায়) মত্ত থাকে তখন সেই ফেরেস্তারা মানুষের সেই প্রার্থনা, স্রষ্টার কাছে পৌঁছে দিতে সপ্তম আকাশে অবর্তীণ হন।
‘ওয়ার রূহু ফিহা’ এই রাত্রিতে হযরত জিব্রাইল (আঃ) ফেরেস্তাদেরকে নিয়ে অবর্তীণ হন এবং যিনি এই সময় আল্লাহর জিকিরে মত্ত থাকেন তার জন্য রহমতের দোয়া দান করেন। ‘বিইজনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমবিন’ আল্লাহর আদেশ অনুয়ায়ী ফেরেস্তারা প্রত্যেকে ভালো কাজ নিয়ে জমিনে অবর্তীণ হন। এই রাত্রিতে জান্নাতের মধ্যে অনেক মোনাজত মকবুল হয়েছে। কথিত অঅছে যে, এই রাত্রিতে হযরত ইসা (আঃ) আসমানে আরোহণ করা হয়েছে এবং ওই রাতে বনি ইজরাইলের দোয়া কবুল করা হয়েছে। ‘সালামুন’ এই রাত আগাগোড়া সালাম (সুরক্ষিত) অর্থাৎ এই রাতে একদল ফেরেস্তা আসেন এবং অন্যদল আল্লাহর দরবারে চলে যান। ‘হিয়া হাত্তা মাথলায়িল ফাজরি’ এই রাত্রি উপরোল্লিখিত সমস্ত করুণায় ভরপুর। এই রকম নয় রাতের কিছু সংখ্যক সময় করুণা বর্ষণ হয়, কিছু সময় হয় না। অর্থাৎ এই শবে-কদরে প্রভাত পর্যন্ত আল্লাহর করুণা বর্ষিত হতে থাকে।
শবে-কদর কি?Ñপবিত্র রমজান মাসের মধ্যে একটি রাত হল শবে-কদর। এই রাত বরকতময় ও অশেষ পুণ্যলাভের রাত কুরআন শরিফে বর্ণিত আছে যে, এই রাত হাজার মাস থেকেও উত্তম। আরবি হিসাব মতে, হাজার রাত্রে তিরাশি বছর চার মাস হয়। খুবই ভাগ্যবান এই ব্যক্তি যিনি তার জীবনে এই রাত্রি মাত্র একবার পেয়েছেন এবং একাগ্রচিত্তে আল্লাহর এবাদতে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি যেন তিরাশি বছর চার মাস থেকেও বেশি এবাদত করেছেন। অতএব নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছ থেকে আমাদেরকে অশেষ নিয়ামতস্বরূপ দার করা হয়েছে। হযরত আনছুরা থেকে বর্ণিত আছে যে, হুজুর সাল্লালাহু আলাইহীসাল্লাম বলেছেন, শবে-কদর আমরা উম্মতগণকে দেওয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী নবীর উম্মতগণকে দেওয়া হয়নি। এই শবে-কদরকে কেন দেওয়া হল এর কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত আছে যে, নবী করিম (স.) দেখলেন যে পূর্ববর্তী নবীর উম্মতদের বয়স বেশি চিল এবং আমাদের সয়স তাদের তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি অর্থাৎ তাদের সামঞ্জস্য অসম্ভব। সুতরাং নবীর মনের ইচ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে ও আমাদের সওয়াব বৃদ্ধির দরুন আল্লাহ এই রাত আমাদেরকে দান করেছেন। তাই আল্লাহর কোনো বান্দা যদি জীবদ্দশায় এই প্রকার দশ রাত্রি পেয়ে যায় তাহলে আটশত তেত্রিশ বছর চার মাস থেকে অধিক এবাদত করার সওয়াব হাসিল করবে।
এক হাদিসে বর্ণিত আছে যে, নবী করিম (স.) নবী ইজরাইলের চারজন ব্যক্তির নাম বলেছেন-তারা হলেন হযরত আয়ুব, হযরত জাকারিয়া, হযরত খিরকিল, হযরত ইসা (আঃ) প্রত্যেকই আশি বছর পর্যন্ত আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের এবাদত (প্রার্থনা) করেছেন এবং বিন্দুমাত্রও আল্লার আদেশ অমান্য করেননি। সেই শুনে সাহাবারা চিহ্নিত হয়ে গেলেন। তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহর আদেশে সুরা ‘কদর’ নিয়ে অবর্তীণ হলেন এবং বললেন যে, হে মোহম্মদ (স.) তুমি তোমার সাহাবাদেরকে শুনিয়ে দাও যে আমি তাদেরকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত্রি দান করছি। যাতে তারা (উম্মতে মহাম্মদি) বনি ইজরাইলের চেয়েও আরো অধিক সওয়াবের অধিকারী হন।
এই রাত্রির ফজিলত সম্পর্কে কুরআনের একটি সুরাই যথেষ্ট। তদুপরিও অসংখ্য নবীর বাণীও এই রাত্রির মাহাত্ম্য সম্পর্কে বর্ণিত আছে। যেমনÑহযরত আবুহুরাইয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহীসাল্লাম বলেছেন-যে ব্যক্তি শবে-কদরে ইমানের সহিত সওয়াবের উদ্দেশ্যে এবাদতের মধ্যে সমস্ত রাত্রি যাপন করবে তার পূর্বের সমস্ত গুণাহ মাফ করা হবে। অন্য হাদিসে হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী করিম (স.) বলেছেন-শবে-কদরে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এক জামাত ফেরেস্তা নিয়ে অবর্তীণ হন এবং ওই সকল ব্যক্তি যারা দাঁড়িয়ে হোন বা বসে আল্লাহর জিকির করছেন এবং আল্লাহর এবাদতে মগ্ন হয়ে আছেন তাদের জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকেন। আল্লাহতা’লার অশেষ মেহেরবানি যে আমরা উম্মতে মহম্মদি হওয়ার দরুন ইে সকল রাত্রি পেয়েছি। কারণ পূর্ববর্তী কোনো নবীর উম্মতকে এইভাবে কম সময়ে বেশি সওয়াব প্রাপ্তির সুযোগ দান করা হয়নি।
সুতরাং আমরা বেশি বেশি করে আল্লাহতা’লার এই কৃপা ও করুণার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি এবং এই সকল রাতের যা মাহাত্ম্য তা ধরে রাখতে পারি। আল্লাহ যেন এই সকল রাত্রি বেশি বেশি পাওয়ার সুযোগ দান করেন যাকে এবাদত করে নিজের জীবনকে আমরা সার্থক করে তুলতে পারি। আল্লাহ আমাদের সেই শক্তি দান করুন। আমিন।

সাংবাদিক-কলামিস্ট।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..